Advertisement
১৮ মে ২০২৪
National News

ভারত-ইন্দোনেশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক: আন্তর্জাতিক মানচিত্রে ভারতের শক্তি বৃদ্ধি

সে দেশের প্রিয় গান ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রনেতা— সকলের পছন্দের তালিকায় শাহরুখ খান ও কর্ণ জোহর।

রিমি মুৎসুদ্দি
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৯:৩১
Share: Save:

সে দেশের প্রিয় গান ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রনেতা— সকলের পছন্দের তালিকায় শাহরুখ খান ও কর্ণ জোহর।

দেশের নাম ইন্দোনেশিয়া! যার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক প্রায় রামায়নের বয়সী।

সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডোর ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন সে দেশের বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দল। আলোচনা হল প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের যৌথ উৎপাদন, প্রযুক্তি হস্তান্তর, কারিগরি সহযোগিতা ও সমুদ্র সীমা বিষয় নিয়ে। ভারত-ইন্দোনেশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির কথাই তুলে ধরা হল বৈঠকে।

পাশাপাশি দু’দেশের সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর মধ্যে সেনাকর্মী পর্যায়ের আলোচনা সফল করতে উভয় দেশই সন্তোষ প্রকাশ করে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দমনে দুই দেশই একে অপরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে। দুই দেশই আসিয়ান (অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশন) শিখর সম্মেলনের মতো বহুপাক্ষিক সম্মেলনের পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক সম্মেলন আয়োজনে সম্মত হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি, ওষুধ ও বিভিন্ন রকম পরিষেবার ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়ান বহুজাতিক সংস্থাগুলিকে বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথাও আলোচনা হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ পদার্থ উত্তোলনে ভারত ইন্দোনেশিয়ায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। শিক্ষা ও বিনোদন ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়া ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন বিনিময় কর্মসূচিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

আরও পড়ুন, ‘আমাদের নগ্ন হয়ে একটানা বিভিন্ন কসরত করে দেখাতে হয়’

ভারত-ইন্দোনেশিয়া বাণিজ্যিক সম্পর্কের সূত্রপাত হয়েছিল জওহরলাল নেহেরু ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর সময় থেকেই। ইন্দোনেশিয়ায় উপনিবেশ শাসনের অবসানে প্রেসিডেন্ট সুহার্তো ক্ষমতায় এলে, চিনের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার দূরত্ব তৈরি হয়। ভারত মহাসাগরে ইন্দোনেশিয়ান মৎস্য ব্যবসায়ীদের ও সমুদ্রপথে ব্যবহৃত বাণিজ্য জাহাজকে চিনের হাত থেকে সুরক্ষা দিতে প্রেসিডেন্ট সুহার্তো ভারতের সঙ্গে প্রথম সমুদ্রসীমা নিরাপত্তা চুক্তির প্রস্তাব দেন। এই চুক্তি নেহরু জামানায় আংশিক সফল হয়েছিল।

পরবর্তী কালে বাজপেয়ী ও সুহার্তো কন্যা মেঘাবতী সুকর্ণপুত্রীর আমলে ভারত-ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে ‘মেরিটাইম সিকিউরিটি’ চুক্তি অনেকটাই সুদূরপ্রসারী হয়। বৈঠকে উপস্থিত ভারতীয় বাণিজ্যিক প্রতিনিধি প্রসূন মুখোপাধ্যায় বলেন, “২০০২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী ও ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মেঘাবতী সুকর্ণপুত্রীর মধ্যে এক বাণিজ্য পর্যায়ের বৈঠক চলাকালীন হঠাৎ বাজপেয়ীজি কুছ কুছ হোতা হ্যায় বলে উঠেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার এই দু’দেশের মধ্যে সুসম্পর্কের একটা প্রতীক হয়ে উঠেছিল সেই উক্তি।’’ কার্যত সেই সময় থেকেই ভারত অর্থনৈতিক ও কৌশলগত বৈদেশিক সম্পর্ক বিস্তারের ক্ষেত্রে ‘পূর্বে তাকাও’ বা ‘লুক ইস্ট’ নীতি কার্যকরী করতে সচেষ্ট হয়েছিল। এর পর ২০০৩-এর অক্টোবরে বালিতে আয়োজিত আসিয়ান সম্মেলনে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতামূলক বিভিন্ন ধরণের বাণিজ্যিক, সামরিক ও অসামরিক চুক্তি সই হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indonesia India Shah Rukh Khan Karan Johar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE