প্রতীকী ছবি।
শহর জুড়ে নোংরা ছড়াচ্ছে ছাগল, শুয়োররা। তাই, প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ সফল করতে তাদের গুলি করে নিকেশ করে দিল দাপোরিজুর পুলিশ-প্রশাসন! ঘটনার কথা জেনে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গাঁধী টাউন ম্যাজিস্ট্রেট টাহাম ক্যালিকে ফোন করেন। কিন্তু ক্যালি খোদ মানেকাকেই বলে দেন, ‘‘যা করেছি নিয়ম মেনে করেছি। পশুহত্যা থামানোর প্রশ্নই নেই!’’ শেষ পর্যন্ত দিল্লিতে থাকা রাজ্যের মুখ্য সচিব শকুন্তলা গামলিনকে বিষয়টি জানান মানেকা। শকুন্তলাদেবী অবিলম্বে হত্যা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
অরুণাচলপ্রদেশের আপার সুবনসিরি জেলারছোট্ট, ঘিঞ্জি শহর দাপোরিজুতে রাস্তায় ঘুরতে থাকা কুকুর, শুয়োর, ছাগল নিয়ে পথচারী থেকে সরকারি কর্তা-সকলেই বিরক্ত। তাদের জন্য যানজট হয়, শহর বেজায় নোংরা হয় বলে জেলাশাসক এ কে সিংহ ‘প্রহিবিটরি অর্ডার’ জারি করেন। নির্দেশ দেওয়া হয়, যে যার পোষা প্রাণী ঘরে বন্ধ করে রাখুন। না হলে প্রশাসন তাদের মারতে বাধ্য হবে। এসপি টারু গুসার বলেন, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে অনেক সচেতনতা শিবির করলেও ছাগল-কুকুর-শুয়োরদের রাস্তায় বিচরণ বন্ধ হয়নি। এ দিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশ শহরের রাস্তাঘাট সাফ রাখার দায় আমাদের উপরে। তাই রবিবার প্রশাসনের নির্দেশেই শহর নোংরা করে রাখা পশুদের গুলি করে মারে পুলিশ। আগেও এমন করা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: লালু-চিদম্বরম একই দিনে বিদ্ধ: ‘প্রতিহিংসা’, বলছেন বিরোধীরা
ডব্লিউটিআইয়ের আঞ্চলিক অধিকর্তা ভাস্কর চৌধুরি বলেন, ‘‘ওই সব পশু বন দফতরের আওতায় পড়ে না তাই একান্তই পুলিশ-প্রশাসনের বিচারাধীন বিষয় কিন্তু ‘প্রিভেনসন অব ক্রুয়ালটি টু অ্যানিম্যালস আইন’ অনুযায়ী কোনও প্রশাসন এ ভাবে রাস্তা নোংরা করার অপরাধে যে কোনও পশুকে হত্যা করার ঢালাও নির্দেশ জারি করতে পারে না।’’
ঘটনাটি নিয়ে আনন্দবাজার মানেকা গাঁধী এবং তাঁর সংগঠন ‘পিপলস ফর অ্যানিম্যাল’ (পিএফএ)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে। মানেকা নিজে টাউন ম্যাজিস্ট্রেটকে ফোন করেন। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট স্পষ্ট জানান, যা করেছেন ঠিক করেছেন। ফের করবেন। কতগুলি প্রাণীকে এ ভাবে হত্যা করা হয়েছে জানতে চাইলে ক্যালি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ওই সব পশু নিয়ে আমার আগ্রহ নেই। কতগুলো মরেছে গুনিনি। সব দেহ নদীতে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে। এক বার নয়, আবারও এই পদক্ষেপ করা হবে।’’
পিএফএ-র উত্তর-পূর্বের চেয়ারপার্সন সঙ্গীতা গোস্বামী বলেন, ‘‘এমন নির্দেশ প্রশাসন কী ভাবে দিতে পারে, যে খানে আইন ও সুপ্রিম কোর্টের এপ্রিল মাসের নির্দেশেই বলা হয়েছে— রাস্তার পশু হলেও তাদের কোনও ভাবেই হত্যা করা চলবে না। আইনে রয়েছে কোনও নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে, নির্দিষ্ট পশু বিপজ্জনক বলে ঘোষিত হলে তাকে মারা যেতে পারে। কিন্তু দাপোরিজুতে যা হয়েছে তা নজিরবিহীন। এ নিয়ে আমরা আইনের সাহায্য নেব। ২৮ মে আমেরিকায় ‘হিউম্যান সোসাইটি ফর অ্যানিম্যালস’র সমাবেশেও বিষয়টি উত্থাপিত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy