নবম শ্রেণির পাঠ্যক্রমে কার্ল মার্ক্স ও লেনিনকে জায়গা করে দেওয়া হল। ছেঁটে ফেলা হল নেতাজিকে, এবং কার্যত বাদই দেওয়া হল গাঁধীকে। তবে পর্ষদ-সভাপতি বা শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য: বাদ কেউই পড়েননি। এনসিইআরটির নির্দেশিকা অনুযায়ী পাঠ্যক্রম তৈরি করা হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই।
ত্রিপুরা মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের (টিবিএসই) নতুন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী এ বারের নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনো শুরু করেছে। নবম শ্রেণির সমাজ বিজ্ঞানের পাঠ্যক্রমে রয়েছে ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ভুগোল এবং অর্থনীতি এই চারটি বিষয়ের আলোচনা। ইতিহাস ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানের বিষয়বস্তু হিসেবে অন্তভুর্ক্ত করা হয়েছে ফরাসি বিপ্লব এবং রুশ বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে কার্ল মার্ক্স ও লেনিনের ‘সমাজ’ ও ‘রাষ্ট্র’ নিয়ে ভাবনাচিন্তা। মার্ক্সের রাজনৈতিক চিন্তাকে লেনিন কী ভাবে রুশ বিপ্লবে কাজে লাগিয়েছেন, লেনিন সমাজতন্ত্রের কী ব্যাখ্যা দিয়েছেন ইত্যাদি।
কিন্তু পর্ষদের নতুন এই পাঠ্যক্রমে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর বা সুভাষ বোসের কী অবদান বা ভূমিকা সে নিয়ে কোনও অনুচ্ছেদ রাখা হয়নি নবম শ্রেণির বইয়ে। কেবল ঔপনিবেশিক শক্তি ব্রিটেন থেকে ‘ক্রিকেট’ খেলা কী ভাবে ভারতের মাটিতে এসেছে, ক্রিকেট সম্বন্ধে গাঁধীর মূল্যায়ন কী ইত্যাদি রয়েছে ওই পাঠ্যক্রমে।
কেন এমনটা হল? পর্ষদ সভাপতি মিহির দেবের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁর ব্যাখ্যা, “কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক বহু দিন ধরেই এনসিইআরটি নির্ধারিত পাঠ্যক্রম চালু করার জন্য পর্ষদকে বলছে।” তাঁর কথায়, বিভিন্ন রাজ্য পর্ষদের যে সর্বভারতীয় সংস্থা রয়েছে, সেখানেও অধিকাংশ রাজ্যের প্রতিনিধি সিবিএসই বোর্ড তথা এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম অনুসরণ করার জন্য জোর সওয়াল চালিয়েছেন। ত্রিপুরা বোর্ড সেই কারণেই এনসিইআরটি’র পাঠ্যসূচি অনুসরণ করে মাধ্যমিক স্তরে পাঠ্যক্রম তৈরি করেছে। সেই পাঠ্যক্রমকে অনুসরণ করতে গিয়েই মার্ক্স ও লেনিন প্রসঙ্গ এসেছে বলে মিহিরবাবু জানান।
প্রায় একই ব্যাখ্যা ত্রিপুরার স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী তপন চক্রবর্তীর। তিনি জানান, এনসিইআরটি-র নির্দেশিকা মেনেই ত্রিপুরায় মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যক্রম তৈরি হয়েছে। এ রাজ্যে নবম শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান বা ইতিহাসের বিষয়বস্তু নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনও ‘বিচ্যুতি’ হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে গাঁধী, সুভাষ বোসের ভূমিকার কথা পর্ষদের নবমের পরিবর্তে দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রমে রাখা হয়েছে। গাঁধী-সুভাষের পাশাপাশি মার্ক্স, লেনিন, হিটলারকেও স্কুলের ছাত্রছাত্রীর জানা উচিত বলে আমরা মনে করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy