সুপ্রিম কোর্টের উপরে মামলার চাপ কমাতে একটি বিকল্প আদালত গড়া যায় কি না, সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তা খতিয়ে দেখবে। নরেন্দ্র মোদীর সরকার এমন কোনও আদালত গড়ার প্রবল বিরোধী। তবু সরকার পক্ষের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর আজ এ সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলাটি ডিভিশন বেঞ্চে পাঠিয়েছেন।
প্রতি বছর ৪৫ হাজারের বেশি মামলার নিষ্পত্তি করা সত্ত্বেও সুপ্রিম কোর্টে প্রায় ৬০ হাজার মামলা ঝুলে রয়েছে। মাস তিনেক আগে এই চাপের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সামনেই কেঁদে ফেলেছিলেন প্রধান বিচারপতি ঠাকুর। সেই চাপের প্রশ্নেই চেন্নাইয়ের আইনজীবী ভি বসন্তকুমার সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থের মামলা করেছেন। তাঁর আর্জি, শীর্ষ আদালতের চাপ কমাতে একটি বিকল্প আদালত হোক। যার নাম হবে জাতীয় আপিল আদালত বা ন্যাশনাল কোর্ট অব অ্যাপিল। কারণ, হাইকোর্ট বা নিম্ন আদালতের রায় পছন্দ না হলেই সকলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। তা সে ফৌজদারি মামলা হোক বা পারিবারিক কলহের মামলা। শীর্ষ আদালতে বসন্তকুমারের তরফে আজ যুক্তি দেওয়া হয়, এমন মামলাগুলির বিচার হোক প্রস্তাবিত জাতীয় আপিল আদালতে। সাংবিধানিক প্রশ্ন বা সরাসরি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, এমন গুরুতর বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাক সুপ্রিম কোর্ট। দিল্লির পাশাপাশি কলকাতা, মুম্বই, চেন্নাইয়েও এই আদালত তৈরি হোক।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি এর প্রবল বিরোধিতা করে যুক্তি দেন, কাউকেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধা দেওয়া যায় না। এর ফলে শুধু আইনজাবীদেরই পকেট ভারী হবে। আর কোনও লাভ হবে না। ১০ বছর পর দেখা যাবে, সেই বিকল্প কোর্টেও মামলার পাহাড় জমে উঠেছে। দেশ জুড়ে নিম্ন আদালতে যে ২ কোটি মামলা জমে রয়েছে, তার চাপও কমবে না। হাইকোর্টের মাথার উপরে নতুন কোর্ট তৈরি হবে। ফলে হাইকোর্টের মর্যাদা কমে যাবে। তা ছাড়া এই বিকল্প কোর্ট তৈরি করতে গেলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। তার ফলে সুপ্রিম কোর্টেরই গঠনতন্ত্র বদলে যাবে।
অবশ্য শুনানির সময় প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, মামলার চাপে সুপ্রিম কোর্ট সকলের প্রতি সুবিচার করতে পারছে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক প্রয়োজন। শীর্ষ আদালতের তরফে কে কে বেণুগোপালকে এই মামলায় সাহায্য করার জন্য নিযুক্ত করা হয়। তিনি বিকল্প আদালতের পক্ষেই রায় দেন। আজ কেন্দ্রের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই বিষয়টি সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠিয়ে দিলেন প্রধান বিচারপতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy