বিপজ্জনক ভাবে ভেঙে পড়েছে হোটেলের বিভিন্ন অংশ, লাগোয়া রাস্তাও। ছবি: পিটিআই।
তিন দিন পরও ভাঙাভাঙির কাজ শুরু হল না। উত্তরাখণ্ডের ‘ডুবন্ত’ জনপদ জোশীমঠে এখনও খড়কুটো আগলে ভেসে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছেন মানুষ। আশা, ‘ডুবন্ত’ পূণ্যভূমিতে ক্ষতিপূরণের ‘লাইফ বোট’ আসবে।
পাহাড়ের গায়েই ঝকঝকে পাঁচ তলা হোটেল। নাম ‘মালারি ইন’। সুসময়ে তীর্থযাত্রীর ভিড় লেগে থাকত। কিন্তু এখন বাসের অযোগ্য। দেওয়ালে পর পর ফাটল। আড়াআড়ি চিড় ধরেছে হোটেল-লাগোয়া রাস্তাতেও। পাশেই খাদ। ফাটলের গতিপ্রকৃতি দেখে মনে হতে পারে যে কোনও মুহূর্তে স্রেফ গড়িয়ে খাদে নেমে যাবে রাস্তাসমেত গোটা হোটেল। জোশীমঠ বাঁচাতে যে সমস্ত বাড়ি এবং হোটেলকে ভেঙে ফেলার পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে সরকার, মালারি ইন তার মধ্যে অন্যতম। কিন্তু হোটেলের মালিক জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আপাতত তা হতে দিচ্ছেন না। প্রয়োজনে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করবেন, কিন্তু হোটেল ভাঙতে দেবেন না তিনি।
নাম ঠাকুর সিংহ রানা। তিনি সপরিবারে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন হোটেল মালারি ইনের সামনে। তাঁর দাবি এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘প্রশাসন যদি বলপ্রয়োগ করে আমাকে সরিয়ে হোটেল ভাঙার চেষ্টা করে তবে আমি নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে এই হোটেলের সামনেই আত্মহত্যা করব। প্রশাসনকে যদি হোটেল ভাঙতে হয় তবে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’’ ঠাকুরের দাবি, এই ক্ষতিপূরণ তিনি শুধু তাঁর নিজের জন্য চাইছেন না, যে সমস্ত হোটেল এবং বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার তাদের সবার তরফেই এই দাবি তাঁর। ঠাকুরের পুত্র বিদেশবাসী। ফ্রান্সে থাকেন। হোটেল ব্যবসার জন্য জোশীমঠেই থাকতেন ঠাকুর। হোটেলের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসে ঠাকুর বলেছেন, ‘‘আমার ছেলে ফ্রান্সে থাকে। আমি চাইলে যেখানে ইচ্ছে যেতে পারি। কিন্তু যাব না। প্রশাসনের অবিচার মুখ বুজে মেনে নেব না আমি।’’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই জোশীমঠের এই হোটেল এবং আরও প্রায় ১০০টি বসতবাড়ি ভাঙার কথা ছিল প্রশাসনের। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের জেরে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়। প্রত্যেকেরই দাবি ছিল, বাড়ি ভাঙার পর তাঁদের কী হবে, কোথায় থাকবেন তাঁরা, তা স্পষ্ট করে জানাতে হবে প্রশাসনকে। ক্ষতিপূরণের কথাও ঘোষণা করতে হবে। হোটেলের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসা ঠাকুরও জানিয়েছেন, প্রশাসনকে হোটেল ভাঙতে দিতে আপত্তি নেই তাঁর। কিন্তু সরকারকে জানাতে হবে তারা কতটা ক্ষতিপূরণ দেবে? তা না হলে আমৃত্যু এ খানেই বসে থাকব আমরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy