আপাতত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘প্রধান প্রতিপক্ষ’ হিসেবে সামনে রেখে মেরুকরণের সুর আরও উচ্চগ্রামে নিয়ে যেতে চাইছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। যাতে অসমের নাগরিক পঞ্জি বিতর্ক ঘিরে বিরোধী শিবিরের মধ্যে ফাটল ধরানো যায়, আর রাফাল বা দলিত সমস্যার বিষয়টি পিছনের সারিতে চলে যায়। তবে গোটা বিতর্কে শরিকদের অবশ্য আজ পাশে পাননি বিজেপি সভাপতি।
রাজ্যসভায় আজ অমিত শাহ বলতে শুরু করেছিলেন, অসমের নাগরিক পঞ্জি তৈরির প্রক্রিয়ার শুরু হয়েছিল রাজীব গাঁধীর হাত ধরে। কিন্তু কংগ্রেসের সেই হিম্মত হয়নি, নরেন্দ্র মোদী সরকারের হয়েছে। অমিতের এই মন্তব্য ঘিরে বিরোধীদের হট্টগোলে কিছু ক্ষণে সভা মুলতুবি হয়ে যায়। পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে অমিত শাহ ফের নিজের তাসটি খেলেন। সেখানে অবশ্য গাঁধী পরিবারের থেকেও মমতাকে আরও বেশি করে দুষেছেন তিনি। আর তালিকার বাইরে থাকা ৪০ লক্ষ লোককে ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে ধর্মীয় মেরুকরণের ছকটি আকারে ইঙ্গিতে স্পষ্ট করে দিয়েছেন অনেকটাই।
বিরোধীদের মতে, রাফাল-দলিত-কৃষক সমস্যা নিয়ে নরেন্দ্র মোদী যখন বিপাকে পড়েছেন, তখন মেরুকরণের রাজনীতি করার মোক্ষম সুযোগ পেয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। এই পরিস্থিতিতে মমতাকে প্রধান প্রতিপক্ষ করে সুকৌশলে রাহুল গাঁধীকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। যাতে রাফাল, দলিত সমস্যা পিছনের সারিতে চলে যায়।
সিপিএম অবশ্য গোটা বিষয়ে ‘অমিত-মমতা আঁতাঁতে’র অভিযোগ এনেছে সরাসরি। দলের সাংসদ মহম্মদ সেলিম দাবি করেছেন, ‘‘মমতা বাঙালি আবেগকে উস্কে দিচ্ছেন। আর অমিত শাহ বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি অ্যাখ্যা দিচ্ছেন। আঁতাঁত করে, সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতিতে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন দু’জনেই।’’ পরিস্থিতি বুঝে চলতি সপ্তাহেই রাফাল চুক্তি নিয়ে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করার কথা ভাবছেন কংগ্রেস এবং বাম নেতারা।
তবে বিজেপি’র এই ‘মেরুকরণ-পরিকল্পনা’য় এখনও শরিকদের সমর্থন মেলেনি। অকালির মতো বিজেপির পুরনো আস্থাভাজন শরিকও আজ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। যে কারণে পরে সাংবাদিক সম্মেলনে অমিত শাহকেও কবুল করতে হয়েছে, ‘‘সংসদে সকলের বক্তব্য শুনেছি। একমাত্র বিজু জনতা দল ছাড়া আর কেউ সমর্থন করেনি। কিন্তু বিরোধী পক্ষে থাকার সময়ে বিজেপির যে অবস্থান ছিল, এখনও তাই রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy