মাস্ক নেই। শারীরিক দূরত্বের বালাই নেই। চলছে আড্ডা। ফাইল চিত্র।
লিঙ্গ বৈষম্যের নিরিখে পুরুষ এবং নারীর ভেদাভেদ বহু পুরনো। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতিতে সুরক্ষা বিধি এবং নিয়ম পালনের ক্ষেত্রে নারীরা কি এগিয়ে রয়েছেন? সম্প্রতি ‘কেমব্রিজ ওপেন’ নামে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত তিন ভারতীয় মনস্তত্ত্ব গবেষকের গবেষণাপত্র সে দিকেই ইঙ্গিত বহন করে। ১৮-৭৫ বছর বয়সী দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের উপরে সমীক্ষা চালিয়ে ওই গবেষকেরা দেখেছেন, পুরুষদের তুলনায় নারীরা কোভিড সুরক্ষা বিধি পালনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি তৎপর।
সুগত লাহিড়ি, রীতা কর্মকার এবং স্বাতী পরমেশ্বরণ নামে ওই তিন জনের গবেষণায় এ-ও উঠে এসেছে, রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বা ভীতি নয়, বরং মস্তিষ্কে তৈরি হওয়া বোধের অভাবেই এবং ঝুঁকি নেওয়ার অনিচ্ছা এই ধরনের সুরক্ষা বিধি থেকে দূরে থাকে মানুষজন। তার ফলেই প্রশ্ন উঠেছে, এ ক্ষেত্রে কি আত্মবোধের বিচারে নারীরাই এগিয়ে রয়েছেন?
সুগতবাবু বলছেন, ‘‘আমরা জনসংখ্যাভিত্তিক গবেষণা করেছি। কিন্তু মেয়েদের ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা কম কেন সেটার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে গবেষণা প্রয়োজন।’’ তবে তাঁর পর্যবেক্ষণ, ঝুঁকি সংক্রান্ত মানসিকতা নিয়ে এত দিন যা যা গবেষণা হয়েছে তার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, মেয়েরা অনেক বেশি সাবধানী হয়। বহু ক্ষেত্রে একই পেশায় কর্মরত পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে মহিলারা চট করে ঝুঁকি নিতে চান না।
সুগতবাবুরা বলছেন, আর্থিক অনটনের ক্ষেত্রে অনেককেই লকডাউনের মধ্যে পথে বেরোতে হয়েছিল। সে বিষয়টিকে মান্যতা দিয়েও গবেষণায় এ-ও গিয়েছে, আনলক পর্বে যে ভাবে মানুষ বিভিন্ন উৎসবে ভিড় জমিয়েছেন এবং সামাজিক বিধি উড়িয়ে আনন্দে মেতেছেন তার পিছনেও রয়েছে এই বোধের অভাব এবং ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা। আনলক পর্ব এবং বিশেষ করে লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার পরে দূরত্ব বিধি বহু ক্ষেত্রেই শিকেয় উঠতে দেখা গিয়েছে। শিয়ালদহ শাখার নিত্যযাত্রীরা বলছেন, স্টেশনের বাইরে ফুটপাথের ধার ঘেঁষে নানা রকমের পসরা সাজিয়ে বিকিকিনি চলে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকেরই
মুখে মাস্ক নেই, ঘিঞ্জি রাস্তায় পারস্পরিক দূরত্ব বিধি উধাও! কোভিডের অতিমারি চাক্ষুষ করার পরেও কেন এমন গা-ছাড়া মনোভাব কেন তা নিয়ে সামাজিক মনস্তত্ত্বের বিশদ আলোচনাও জরুরি বলে মনে করছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy