উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ফাইল চিত্র।
প্রতিদিন অন্তত দু’টি করে কর্মিসভা করছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। রাজ্যের বিভিন্ন হিন্দু সম্প্রদায় ও জাতপাতের জন্য খুলছেন পৃথক-পৃথক মোর্চা। অন্য দিকে, জনসভায় তাঁর বক্তৃতায় উগ্র হিন্দুত্বের বান। উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের মাস পাঁচেক আগে থেকেই এ ভাবে ধর্মীয় মেরুকরণ এবং হিন্দুত্বের মঞ্চে সমস্ত জাতি ও সম্প্রদায়কে নিয়ে আসার কৌশলকে সঙ্গী করে প্রচারে নেমে পড়েছেন আদিত্যনাথ।
ভোটের ময়দানে যখন রাজ্যের প্রধান বিরোধী শক্তি সমাজবাদী পার্টি এবং অন্যান্য দলকে কার্যত আতস কাচে খুঁজতে হচ্ছে, তখন রীতিমতো দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা উত্তরপ্রদেশে বিজেপির শীর্ষ নেতা যোগী। অথচ কয়েক মাস আগেই তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্যের সর্বস্তরে (জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে) কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতার প্রশ্নে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। পরিস্থিতি এতটাই হাতের বাইরে যাওয়ার জোগাড় হয়েছিল যে, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সেই সময়ে বার বার তাঁকে ডেকে চাপ তৈরি করেন। কিন্তু রাজনৈতিক সূত্রের মতে, ভোটের আগে যোগী নিজেকে হিন্দুত্বের প্রধান সৈনিক ও রক্ষক প্রমাণে মরিয়া।
যেমন আজও বিভিন্ন মঞ্চে বলার পরে যোগীর টুইট, ‘বাদশা আকবর নন, রানা প্রতাপ ছিলেন মহান ব্যক্তি।’ বিষয়টির সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস নেতা অজয়কুমার লাল্লু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে বিভেদ ও মেরুকরণের রাজনীতি করছেন। ওঁদের মুখে রাম, বগলে নাথুরাম!” বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, ‘রানা প্রতাপকে মহান হিসাবে প্রতিপন্ন করলে এবং আকবরকে বিদেশি, বিধর্মী হিসাবে দাগিয়ে দেওয়া হলে কি তেলের দাম কমবে? মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অগ্নিমূল্য কমবে? কর্মসংস্থান হবে? এই কথাগুলি যে বিশেষ উদ্দেশ্যে বলা, তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’
কিন্তু বিরোধীরা সরব হলেও, রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, বিষয়টিকে উস্কে দেওয়ার পরে এই নিয়ে যত বিতর্ক বাড়বে, ভোটের অঙ্কে বিজেপির ততই লাভের সম্ভাবনা।
গতকাল পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে যোগী অযোধ্যা এবং বারাণসীতে দু’টি বৈঠক করেছেন। অযোধ্যায় তিনি তা করেছেন বিজেপির ওবিসি মোর্চার কর্মীদের সঙ্গে। বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘ওবিসি-র মধ্যে এমন অনেক সম্প্রদায় রয়েছে, যাদের নেহাতই জাতপাতের নিরিখে বিচার করা ঠিক নয়। তাঁরা হিন্দু ধর্মকে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখার সেনানি।’’ ৪০ মিনিটের বক্তৃতায় তিনি ওবিসি-র রণকৌশল ব্যাখ্যা করেছেন। সেই সঙ্গে আহ্বান জানিয়েছেন ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের মঞ্চে সমস্ত সম্প্রদায়কে আসার। যা বিভাজন ও উগ্র জাতীয়তাবাদকে উস্কে দেওয়ার কৌশল বলে মনে করছেন বিরোধীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy