Advertisement
E-Paper

আকাশছোঁয়া ভাড়া, চাহিদা কমছে না কপ্টার-বিমানের

বছরের অন্য সময়ে দুই ইঞ্জিনের হেলিকপ্টার মেলে ঘণ্টায় দেড় থেকে পৌনে দু’লক্ষ টাকা ভাড়ায়। ভোটের বাজারে বাড়তি চাহিদার কারণে এখন সেই হেলিকপ্টারের ভাড়াই ঘণ্টায় প্রায় আড়াই লাখ টাকা। অন্য সময়ে এক ইঞ্জিনের হেলিকপ্টার ভাড়া নিতে বড় জোর ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লাগে প্রতি ঘণ্টায়। এখন দর চলছে ঘণ্টায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ছোট বিমানের ভাড়াও বেড়েছে একই হারে।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৫৪

বছরের অন্য সময়ে দুই ইঞ্জিনের হেলিকপ্টার মেলে ঘণ্টায় দেড় থেকে পৌনে দু’লক্ষ টাকা ভাড়ায়। ভোটের বাজারে বাড়তি চাহিদার কারণে এখন সেই হেলিকপ্টারের ভাড়াই ঘণ্টায় প্রায় আড়াই লাখ টাকা। অন্য সময়ে এক ইঞ্জিনের হেলিকপ্টার ভাড়া নিতে বড় জোর ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লাগে প্রতি ঘণ্টায়। এখন দর চলছে ঘণ্টায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ছোট বিমানের ভাড়াও বেড়েছে একই হারে।

নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে থেকেই বড় রাজনৈতিক দলগুলি তাদের নেতা-নেত্রীদের প্রচার-সফরের জন্য কপ্টার ও ছোট বিমানের খোঁজ শুরু করে দিয়েছে। অথচ পবনহংস, ডেকান, ওয়েসিস, গ্লোবালের মতো মালিক সংস্থার হাতে ভাড়া দেওয়ার মতো কোনও বিমান বা হেলিকপ্টারই এখন নেই। কারণ নির্বাচনের ঠিক আগেই সেগুলি ভাড়া নিয়ে নিয়েছে বিভিন্ন এজেন্সি। ফলে বিমান-কপ্টারের জন্য এই এজেন্সিগুলিরই দ্বারস্থ হতে হচ্ছে দলগুলিকে। দলগুলিও তাদের সঙ্গে আগেভাগে চুক্তি সেরে নিতে উদগ্রীব। কারণ বিমান-কপ্টার অন্য দলের দখলে চলে গেলে নেতানেত্রীদের প্রচারে যাওয়াই শিকেয় উঠতে পারে।

এমনিতে সারা বছর ধরে হেলিকপ্টার ও ছোট বিমান ভাড়া দেওয়াই এই এজেন্সিগুলির কাজ। ওয়েবসাইটে ফলাও করে তাদের নাম-ধাম-নম্বর দেওয়া থাকে। নিজস্ব হেলিকপ্টার বা বিমান না-থাকলেও এরা মধ্যস্থের কাজ করে। লোকসভা নির্বাচনের সময়ে আকাশছোঁয়া চাহিদার সুযোগ নিয়ে এখন লাভের অঙ্ক বাড়িয়ে নিতে চাইছে তারা।

এমনই এক এজেন্সির মালিক দিল্লির বাসিন্দা হংস কুমার বলেন, “বিধানসভা ভোটে কপ্টারের এত চাহিদা থাকে না। সুতরাং লোকসভা নির্বাচনই ভরসা। মোটা টাকা আগাম বিনিয়োগ করতে হয়। তার জন্য অবশ্য লগ্নিকারী রয়েছে। এই ব্যবসায় ঝুঁকি যেমন রয়েছে, লাভও হয় ভাল।” ঝুঁকির কথা ভেবেই এ বার ওয়েসিস-এর কাছ থেকে মাত্র একটি হেলিকপ্টার ভাড়া নিয়ে রেখেছিলেন হংস কুমার। সেটি ভাড়া দিয়েছেন নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ-কে।

মুম্বইয়ের আর এক এজেন্সির কর্তা রাজেশ সাহু জানান, সাত-আট মাস আগে থেকে নির্বাচনের দিনক্ষণ আঁচ করে তার মাস দুয়েক আগের স্লট ভাড়া নিয়ে রাখতে হয়। তার পরে শুরু হয় দরদাম। তাঁর কথায়, “দিল্লির সারথি এয়ারওয়েজের বিরাট ব্যবসা। তার মালিক গুলাব সিংহ প্রধানত বিজেপি-কে কপ্টার ভাড়া দেন। ইদানীং দেখা যাচ্ছে, পরিচিত শিল্পপতিদের কাছ থেকে আগেভাগে ছোট বিমান নিয়ে রাখছে রাজনৈতিক দলগুলি। তার জন্য ভাড়াও দিতে হলেও তা বাজার দরের চেয়ে বেশি নয়। কিন্তু কপ্টার নিতে গেলে আমাদের মতো এজেন্সিই ভরসা।”

পবনহংসের এক কর্তা জানান, ২০১২-র ডিসেম্বরের হিসেব অনুযায়ী দেশে প্রায় ৩১৬টি হেলিকপ্টার ছিল। এখন ওই সংখ্যা কমে ২৮০-র কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে। জ্বালানির দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকায় হেলিকপ্টার বিদেশে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। তাই নির্বাচনের সময়ে চাহিদা আর জোগানের ফারাক তৈরি হচ্ছে। ওই কর্তার কথায়, “আমাদের হাতে এখন যে ৪৬টি হেলিকপ্টার রয়েছে, তার মধ্যে ৩৫-৩৬টি সারা বছরই ভাড়া দেওয়া থাকে ওএনজিসি-র মতো সংস্থা বা বিভিন্ন রাজ্য সরকারকে। বাকিগুলি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাখা থাকে। নির্বাচনের মুখে আমাদের ৬-৭টি হেলিকপ্টার ভাড়া দেওয়া হয়। কিন্তু আগে থেকেই এজেন্সিগুলি তা ভাড়া নিয়ে নেয়।”

নিজস্ব হেলিকপ্টার ও ছোট বিমান রয়েছে ডেকানের। তাদের এক কর্তার কথায়, “এ বার আমাদের তিনটি হেলিকপ্টার নির্বাচনী প্রচারের জন্য ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। দু’টি নিয়েছে কংগ্রেস। সেগুলি অসমে উড়ে বেড়াচ্ছে। অন্যটি ভাড়া নিয়েছে অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। তবে সরাসরি নয়, এজেন্সির মাধ্যমে।”

কিন্তু ভাড়া যা-ই হোক, নেতানেত্রীদের প্রচার-সফর তো আটকাতে পারে না। তাই ভোট বাজারে বাড়তি কামিয়ে নিচ্ছে এজেন্সিগুলি।

sunanda gosh plane
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy