এডিসি এলাকায় উপজাতিদের আর্থ-সামাজিক উন্নতির দাবি নিয়ে রাস্তায় নামবে প্রদেশ কংগ্রেস।
দলীয় সূত্রের খবর, আগামীকাল ত্রিপুরা উপজাতি স্বশাসিত জেলা পরিষদের (টিটিএডিসি) ৩২টি সাব-জোনাল কার্যালয় এলাকার কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি জমা দেবেন। কেন্দ্রে ইন্দিরা গাঁধী সরকারের আমলে সাংবিধান সংশোধিত হওয়ার পর ১৯৮৫ সালে ত্রিপুরায় টিটিএডিসি গঠিত হয়। এ কথা জানিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দিবাচন্দ্র রাংখল বলেন, ‘‘এডিসি এলাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন দূরের কথা, কোনও প্রশাসনিক কাঠামোই গড়ে তোলা হয়নি।’’ এরই প্রেক্ষিতে কংগ্রেস স্লোগান তুলেছে‘সিপিএম হঠাও, এডিসি বাঁচাও।’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ, গত ৩২ বছরে ওই এলাকায় বসবাসকারী উপজাতিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কার্যত হয়নি। বেশিরভাগ সময় সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টই এডিসিতে ক্ষমতাসীন ছিল। এখনও রয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কথায়, ‘‘বামফ্রন্ট সরকার এডিসি এলাকায় উপজাতিদের উন্নয়নে একেবারেই আগ্রহী নয়।’’ রাজ্য সরকারের উপজাতি মন্ত্রী, নেতাদেরও সমালোচনায় সরব হয়েছেন দিবাচন্দ্রবাবু। রাজ্যে উপজাতি সম্প্রদায়ের ১ জন সাংসদ, ৪ জন মন্ত্রী এবং ১৫ জন বিধায়ক রয়েছেন, সে কথা উল্লেখ করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ওই মন্ত্রী, নেতারা উপজাতি স্বার্থের কথা বলতে সাহস পান না।’’
এডিসি এলাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, দ্রুত এডিসিকে অধিক ক্ষমতা প্রদান, ত্রিস্তরীয় পরিষদ চালু, কেন্দ্রীয় সরকার থেকে সরাসরি বাজেট বরাদ্দ, উপজাতিদের রক্ষাকবচ ‘কাস্টমারি আইন’ চালুর দাবি তুলেছে প্রদেশ কংগ্রেস।
দলীয় মুখপাত্র অশোক সিনহা এডিসি এলাকায় শিক্ষা বেহাল দশার কথাও তুলে ধরেন। তিনি জানান, সরকারি হিসেবে ওই এলাকায় ১৬২২টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। সহ-শিক্ষক রয়েছেন ১১২৫ জন। প্রধান শিক্ষক ১৯২ জন।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়-সহ এডিসি পরিচালিত মোট স্কুল ১৮৭৬টি। কিন্তু ১৪৩০টি স্কুলে কোনও প্রধান শিক্ষকই নেই। কয়েকটি স্কুলে এক জন করে শিক্ষক এবং অনেক স্কুলে কেবিটি (ককবরক শিক্ষক) দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। ককবরক শিক্ষকদের অন্য কোনও বিষয়ে পড়ানোর শিক্ষাগত যোগ্যতাই নেই। তাঁর মন্তব্য, “এডিসি এলাকায় শিক্ষার উন্নয়নে রাজ্য সরকার কতটা সংবেদনশীল, সরকারি তথ্য থেকেই তা স্পষ্ট।”
টিটিএডিসি-র কার্যনির্বাহী সদস্য রাধাচরণ দেববর্মা (এডিসি-র শিক্ষা ও ক্রীড়া দফতরের দায়িত্ব তিনিই সামলান) প্রদেশ কংগ্রেসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এডিসি এলাকায় যথেষ্টই উন্নয়ন হয়েছে। উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ আর্থ-সামাজিক ভাবে অনেক সাবলম্বী হয়েছেন।’’ তবে স্কুলগুলিতে প্রধান শিক্ষকের অভাব এবং উচ্চতর বিদ্যালয়গুলিতে বিজ্ঞান শিক্ষকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম রয়েছে বলে রাধাচরণবাবু স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে একই সঙ্গে তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার এ বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনের পরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy