Advertisement
০৬ মে ২০২৪

কঠিন পরীক্ষা দিল্লির ভোট, মানছে বিজেপি

নতুন বছরের শুরুতেই কঠিন পরীক্ষায় বসতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। পরীক্ষার ক্ষেত্র রাজধানী দিল্লি। সাত মাস আগে লোকসভা নির্বাচনে জিতে দিল্লির মসনদে বসেছিলেন মোদী। রাজত্ব কেমন চালিয়েছেন সেই পরীক্ষা দিল্লির বিধানসভা ভোটেই সবচেয়ে বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আজ নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ভোট হতে চলেছে রাজধানীতে। ফল ঘোষণা হবে ১০ ফেব্রুয়ারি। ভোটের দিন ঘোষণা হতেই লড়াইয়ে দামামা দিল্লিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫২
Share: Save:

নতুন বছরের শুরুতেই কঠিন পরীক্ষায় বসতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। পরীক্ষার ক্ষেত্র রাজধানী দিল্লি।

সাত মাস আগে লোকসভা নির্বাচনে জিতে দিল্লির মসনদে বসেছিলেন মোদী। রাজত্ব কেমন চালিয়েছেন সেই পরীক্ষা দিল্লির বিধানসভা ভোটেই সবচেয়ে বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আজ নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ভোট হতে চলেছে রাজধানীতে। ফল ঘোষণা হবে ১০ ফেব্রুয়ারি। ভোটের দিন ঘোষণা হতেই লড়াইয়ে দামামা দিল্লিতে।

লোকসভা নির্বাচনের পরে চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে নেমেছে বিজেপি। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ঝাড়খণ্ড-এই তিন রাজ্যে একার জোরেই ক্ষমতা দখল করতে পেরেছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়ার দৌড়ে রয়েছে বিজেপি। কিন্তু দিল্লিতেই মোদী সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখে বলে মনে করছেন খোদ বিজেপি নেতৃত্ব।

কেন এ কথা ভাবছে মোদীর দল?

বিজেপি নেতারা জানাচ্ছেন, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, জম্মু-কাশ্মীরে ক্ষমতাসীন দল-বিরোধী হাওয়া প্রবল ছিল। তার সঙ্গেই মোদীর প্রচার ও অমিত শাহের কৌশল মিলে সুবিধেজনক অবস্থায় পৌঁছে যেতে পেরেছে বিজেপি। কিন্তু দিল্লির পরিস্থিতি ভিন্ন। গত নির্বাচনের পরে ত্রিশঙ্কু দিল্লিতে হাল ধরতে চায়নি বিজেপি। কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন আপের নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল। পরে হঠাৎই ইস্তফা দিয়ে অনুগামী ও দিল্লিবাসীর আশাকে কার্যত জলাঞ্জলি দেন কেজরীবাল। তার পর থেকে রাষ্ট্রপতি শাসনের আওতায় ছিল রাজধানী।

বিজেপি নেতাদের সমীক্ষা বলছে, কেজরীবালের ইস্তফা নিয়ে রাজধানীর বাসিন্দাদের আশাভঙ্গের পালা শেষ হয়ে গিয়েছে। বরং এই ভোটে মোদী সরকারের সাত মাসের কাজের বিচার করবেন তাঁরা। দলীয় সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দিল্লির মধ্য ও নিম্নবিত্তদের মধ্যে এখনও কেজরীবালের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। বিজেপির ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে আপ।

মোদী জমানার রীতি মেনেই এই ভোটে তাঁকে সামনে রেখে লড়বে দল। সে ক্ষেত্রে লড়াই যে মোদী বনাম কেজরীবালের হতে চলেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত বিজেপি নেতৃত্ব। গত শনিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নিজেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, আপই প্রধান প্রতিপক্ষ। কেজরীবালের মোকাবিলা করতে দিল্লির বুকে বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের দিয়েও প্রচার করানো হচ্ছে।

গত বারের নির্বাচনের চেয়ে অনেক বেশি পরিণত ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে কেজরীবালকে। ধর্না-বিক্ষোভের রাজনীতি ছেড়ে আগের চেয়ে অনেক বেশি সংযত ভাবে পা ফেলছেন আপ নেতা। গত চার-পাঁচ মাস তিনি নিয়মিত ভাবে একের পর এক বৈঠক করে চলেছেন সমাজের প্রায় সব স্তরের মানুষের সঙ্গে। জোর দিয়েছেন বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে নিজের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার। এমনকী সংবাদমাধ্যমকেও সযত্নে এড়িয়ে যাচ্ছেন কেজরীবাল।

দিল্লির ভোটারদের মন জয়ের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে কাজে লাগাতে ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে মোদী শিবির। ১৯৮৪ সালের শিখ-বিরোধী দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। দাঙ্গার তদন্তের জন্য তৈরি হয়েছে নয়া কমিটিও। নিম্নবিত্তদের সমর্থন পেতে ১৯০০-র বেশি বেআইনি কলোনিকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রায় ষাট লক্ষ মানুষের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করেছে মোদী সরকার। বিহার-উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দারা ছটপুজোর দিন ছুটি পেয়েছেন। এমনকী কেজরীবালের প্রতীকের মোকাবিলা করতে স্বচ্ছ ভারত অভিযানে হাতে ঝাড়ু নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।

মোদীর কাজের কী মূল্যায়ন করেছেন দিল্লির মানুষ, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

amit shah bjp delhi assembly election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE