রাতের অন্ধকারে সে চুপিচুপি ঢুকে পড়েছিল ব্যাঙ্কে। বিস্তর কসরতের পর ঢোকার পথ মিলেছিল ছাদ দিয়ে। কিন্তু এত চেষ্টা-চরিত্র করেও কপালে জোটেনি কানাকড়ি। অনুতাপের জ্বালায় শেষমেশ চিঠি লিখেই গা-ঢাকা দিয়েছে সেই চোর।
সেক্টর ছয়ে নয়ডা অথরিটির ভবনেই রয়েছে কানাড়া ব্যাঙ্কের অফিস। সোমবার ব্যাঙ্কের কর্মীরা এসে দেখেন বাইরে দিয়ে ঝুলছে একটা বড় দড়ি। সেই সঙ্গে ভাঙা একটা জানলার কাচও। সঙ্গে সঙ্গেই খবর যায় পুলিশে। ডগ স্কোয়াড, ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরাও চলে আসেন তাড়াতাড়ি।
কিন্তু টাকাকড়ির হিসেবে কোনও গরমিল মেলেনি। কম্পিউটার, ফাইল-পত্র সবই রয়েছে যথাস্থানে। তা হলে চুরিটা গিয়েছে কী? তদন্তকারীরা যখন এই হিসেব মেলাতে হিমশিম, তখনই তাঁদের নজর পড়ে ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের টেবিলে রাখা এক কাগজে।
ব্যাঙ্কেরই লেটার হেডে ভুল বানান, কাঁপা কাঁপা হরফের হিন্দিতে লেখা একটা চিঠি। লেখক কে, তা অবশ্য বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে না। লেখা রয়েছে “আপনার জাগয়ায় বসে এই চিঠি লিখছি। বাড়িতে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে। জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। এরই মধ্যে আমার চাকরিটাও গিয়েছে।”
ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, টাকাকড়ি সব ছিল স্ট্রং রুমে। আর সেখানে ঢুকতেই পারেনি চোর। পুলিশের সন্দেহ, যে কাজে সে এসেছিল, তাতে সুবিধে করতে না পেরে মনের দুঃখেই কলম ধরেছিল ওই চোর। লেখার সূত্র ধরেই আপাতত খোঁজ চলছে তার। ব্যাঙ্কের ভিতরে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরায় কোনও ছবি ধরা পড়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
এ যাত্রায় বড় কোনও ক্ষতি না হলেও নিরাপত্তার খামতি নিয়ে প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। কানাড়া ব্যাঙ্কের এই দফতর যে এলাকায়, তার ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুলিশ সুপারের অফিস। তিন-তিন জন সার্কেল অফিসার, অন্য পুলিশ কর্তারাও বসেন কাছেই। তা-ও ছাদ দিয়ে ব্যাঙ্কের ভিতরে চোর ঢুকে পড়ল, অথচ টেরই পেলেন না তাঁরা। খোদ চোরের হাতে লেখা চিঠি না মিললে রাতের অন্ধকারে অতিথি যে চুপিসাড়ে ঘুরে গিয়েছে, সেটাও কি পুলিশ ধরতে পারত এখন সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy