Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

জাতিবিদ্বেষ রুখতে দিল্লিতে সাইকেলে বিদ্যা

জাতিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে বার্তা ছড়িয়ে দিতে, সাইকেলে ঘুরে দিল্লি জুড়ে প্রচার চালাবেন মণিপুরের কলেজ ছাত্রী সৌগাইজাম বিদ্যালক্ষ্মী লেইমা। গত বছর, নারীদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে সাইকেলে গোটা উত্তর-পূর্বে ঘুরেছিলেন বিদ্যালক্ষ্মীই। এ বার তাঁর সফর হবে দিল্লির অলিগলিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৪ ০৯:৫৬
Share: Save:

জাতিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে বার্তা ছড়িয়ে দিতে, সাইকেলে ঘুরে দিল্লি জুড়ে প্রচার চালাবেন মণিপুরের কলেজ ছাত্রী সৌগাইজাম বিদ্যালক্ষ্মী লেইমা।

গত বছর, নারীদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে সাইকেলে গোটা উত্তর-পূর্বে ঘুরেছিলেন বিদ্যালক্ষ্মীই। এ বার তাঁর সফর হবে দিল্লির অলিগলিতে।

নিদো টানিয়ার হত্যাকান্ড উত্তর-পূর্বের সঙ্গে দিল্লির দূরত্ব অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু টানিয়াই নন, তারপরও, সেখানে উত্তর-পূর্বের ছাত্র-ছাত্রী, যুবক-যুবতীর উপর মারধর, শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের মতো নির্যাতনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি সামলাতে, জাতি বিদ্বেষ বিরোধী আইন তৈরির জোরালো দাবি উঠেছে। এই প্রেক্ষিতেই মণিপুর থেকে শান্তি, সম্প্রীতি ও ভালবাসার বার্তা নিয়ে দিল্লি পাড়ি দিলেন বিদ্যা।

নারী ও শিশুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে সাইকেলেই গত বছর ২১ অগস্ট যাত্রা শুরু করেছিলেন বিদ্যা। তিনি জানান, উত্তর-পূর্বে মেয়েদের উপরে অপরাধ যে হারে বাড়ছে, তা আশঙ্কাজনক। তাঁর একার পক্ষে পুলিশ-প্রশাসনকে সজাগ করার অন্য কোনও উপায় জানা ছিল না। তাই, সাইকেল নিয়েই প্রচারের সিদ্ধান্ত নেন জিরিবাম কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ওই তরুণী। বাবা সৌগাইজাম ইবোতান ও মা সৌগাইজাম ওংবি ইয়াংগৈসানা মেয়ের জন্য চিন্তিত থাকলেও, এই অভিযানে উৎসাহ দিয়েছেন। মেয়ের জন্য নতুন দামি সাইকেলও কিনে দিয়েছিলেন তাঁরা। প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে সাত রাজ্যে সফর শেষ করেছিল বিদ্যলক্ষ্মী। তার সাফল্য থেকেই এ বারের সফর শুরুর উৎসাহ ও সাহস তিনি পেয়েছেন।

জিরিবাম জেলার শিশু আবাস ‘চাইল্ড ওয়েলফেয়ার আশ্রম’-এর প্রধান কর্মকর্তা বিদ্যার বাবা ইবোতান। পাঁচ সন্তানের মধ্যে বিদ্যা চতুর্থ। মেয়ের জেদের কাছে হার মেনে গত বার বিদ্যাকে সফরের অনুমতি দিয়েছিলেন তিনি। এ বার তো নিজেও মেয়ের আংশিক সফর সঙ্গী। তিনি বলেন, “মেয়ের চাইছে, উত্তর-পূর্ব থেকে পড়াশোনা বা কাজের জন্য দিল্লিতে বসবাসকারী যুবক-যুবতীদের সঙ্গে সেখানকার মানুষের ভালবাসার সেতু-বন্ধন করা। আশা করি, ওকে দেখে দিল্লিবাসীরা উত্তর-পূর্বের মানুষ সম্পর্কে অন্যভাবে ভাববেন।”

আজ ইম্ফলে ‘মণিপুর প্রেস ক্লাব’-এর সামনে থেকে বিদ্যার অভিযান শুরু হয়। অভিযানে সাহায্য করছে ‘ইম্ফল সলিডারিটি গ্রুপ’। প্রথমে বিদ্যা, তাঁর বাবা ও পরিবারের কয়েক জন সদস্য বিমানে দিল্লি যাবেন। আগামীকাল থেকে দিল্লিতে বিদ্যার সাইকেল অভিযান শুরু। নতুন, পুরনো দিল্লি ও আশাপাশের এলাকায়, সাইকেলে একাই ঘুরবেন বিদ্যা। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁদের বোঝাবেন মণিপুরের সাহিত্য, সংস্কৃৃতি ও ঐতিহ্য। প্রচার করবেন বন্ধনের বার্তা। তবে, কোনও রাজনৈতিক নেতা বা সরকারি কর্তার সঙ্গে দেখা করা তাঁর সফর-সূচিতে নেই।

সফরের সময়ে নিরাপত্তা? সেটি দিল্লিবাসীর শুভবুদ্ধির উপরেই ছেড়ে দিচ্ছেন মণিপুরের সাহসিনী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

racism sogoijam bidyalakshmi leima
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE