এমন ‘অচ্ছে দিন’ চাইছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, যেখানে ভাড়া বাড়িতে থাকার বদলে নতুন বাড়ি কিনে ইএমআই দেওয়াটাই সস্তা হবে। অর্থমন্ত্রীর আশা, মূল্যবৃদ্ধির হার আরও কিছুটা কমলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নিশ্চয়ই সুদের হার কমাবে। সে ক্ষেত্রে গৃহঋণেও সুদের হার কমে আসবে।
চলতি সপ্তাহের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুন মাসে পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার চার মাসের মধ্যে সব থেকে কম ছিল। খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল আড়াই বছরে সর্বনিম্ন। এত দিন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলে এসেছে, মূল্যবৃদ্ধির হার কমলে সুদের হার কমানোর কথা ভাবা হবে।
আগামী ৫ অগস্ট ফের সুদ নীতির পর্যালোচনা করবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। আজ সংসদে বাজেট-বিতর্কের জবাবি বক্তৃতায় জেটলি আশা প্রকাশ করেছেন, মূল্যবৃদ্ধির হার কমার সঙ্গে সঙ্গে সুদের হারও কমবে। সুদের হার কমলে শিল্পক্ষেত্রে লগ্নিকারীদের সুবিধা হবে। বাজেটে গৃহঋণে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুদ করমুক্ত করার কথা ঘোষণা করেছেন জেটলি। এর পর গৃহঋণে সুদ কমলে রিয়েল এস্টেট ও আবাসন ক্ষেত্রেও গতি আসবে।
নরেন্দ্র মোদীর সরকারের প্রথম বাজেটের পরে কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ ছিল, বাজেটে যতটা শিল্পমহলের কথা ভাবা হয়েছে, গরিব মানুষের কথা ততটা ভাবা হয়নি। আগের সরকারের সামাজিক প্রকল্পগুলিতে নতুন সরকার বরাদ্দ কমিয়েছে। আজ জেটলি বলেন, সরকার অবশ্যই শিল্পমহলের স্বার্থরক্ষা করতে চায়। তবে তার সঙ্গে গরিবদের স্বার্থরক্ষার বিরোধ নেই। নতুন শিল্প হলে, ব্যবসায়িক লেনদেন বাড়লে সরকারের হাতে কর বাবদ বাড়তি রাজস্ব আসবে। ফলে গরিবদের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো যাবে।জেটলি জানান বলেন, ব্যবসায়িক লেনদেন বাড়ানোর জন্যই করের হার কম রাখতে চান প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “এটাই প্রধানমন্ত্রীর দর্শন। আমিও সেই দর্শনকে সমর্থন করি।” এই একই দর্শন মেনে গাড়ি শিল্পের মতো ক্ষেত্রে উৎপাদন শুল্কের ছাড় দেওয়ার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
জেটলির বাজেটের সব থেকে বড় সমালোচনা ছিল, তিনি যথেষ্ট সাহসী হতে পারেননি। বিজেপি যে বিপুল আসনে জিতে সরকার গড়েছে, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আরও বড় সংস্কারের পথে হাঁটতে পারতেন। জেটলি আজ সেই সমালোচনার জবাবে বলেছেন, “সংস্কারের লক্ষ্যে বহু পদক্ষেপ করতে হবে। বাজেটেই যে তার সব ঘোষণা করতে হবে, এমন কোনও কথা নেই।”প্রয়োজনে যে মোদী সরকার সাহসী হতে ভয় পায় না, জনমোহিনী রাজনীতিতে আটকে যায় না, তার প্রমাণ হিসেবে রেল বাজেটের আগেই রেল ভাড়া বাড়ানোর উদাহরণ তুলে ধরেছেন জেটলি। কংগ্রেস নেতৃত্বকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রেল বোর্ডের বৈঠকেই ভাড়া বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছিল।
তৎকালীন রেলমন্ত্রী মল্লিকার্জুন খাড়গে ১০ তারিখ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে অনুমোদনও নিয়ে নেন। কিন্তু তার পরেও সেই সিদ্ধান্ত র্কাযকর করতে গিয়ে ইউপিএ-সরকারের হাঁটু কেঁপে গিয়েছিল।
ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নতুন সরকারের জন্য শিকেয় তুলে রাখা হয়। বর্তমানে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা খাড়গেকে কটাক্ষ করে জেটলি বলেন, “যে সাহস আপনি দেখাতে পারেননি, আপনার উত্তরসূরি সেটাই দেখিয়েছে। এখন আপনি তাঁকে বলছেন জনবিরোধী।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy