Advertisement
E-Paper

প্রচার থেকেই বাদ মোদী-মুলায়মের দুই অস্ত্র

কান্ডারি হুঁশিয়ার। শেষ পর্যন্ত কড়া বার্তাই দিল নির্বাচন কমিশন। নিশানা উত্তরপ্রদেশ। লক্ষ্য মেরুকরণ। এক দিকে মুলায়মের হাতিয়ার আজম খান। অন্য দিকে নরেন্দ্র মোদীর বাজি অমিত শাহ। আশি আসনের উত্তরপ্রদেশে ভাল ফলের লক্ষ্যে মেরুকরণের রাজনীতিতে সক্রিয় দু’দলের দুই প্রধান কান্ডারিই। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ বিস্তর উঠলেও এত দিন সে সবে বিশেষ পাত্তাই দেননি দু’নেতাই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৩৪
অমিত শাহ ও আজম খান

অমিত শাহ ও আজম খান

কান্ডারি হুঁশিয়ার। শেষ পর্যন্ত কড়া বার্তাই দিল নির্বাচন কমিশন।

নিশানা উত্তরপ্রদেশ। লক্ষ্য মেরুকরণ। এক দিকে মুলায়মের হাতিয়ার আজম খান। অন্য দিকে নরেন্দ্র মোদীর বাজি অমিত শাহ। আশি আসনের উত্তরপ্রদেশে ভাল ফলের লক্ষ্যে মেরুকরণের রাজনীতিতে সক্রিয় দু’দলের দুই প্রধান কান্ডারিই। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ বিস্তর উঠলেও এত দিন সে সবে বিশেষ পাত্তাই দেননি দু’নেতাই। এমনকী, কমিশনের চিঠির জবাব দেওয়ারও প্রয়োজন বোধ করেননি দু’জনের কেউ। শেষে কাল উত্তরপ্রদেশের প্রথম দফা নির্বাচনের পরে আজ নড়েচড়ে বসল নির্বাচন কমিশন।

কমিশন আজ জানিয়েছে, অনেক হয়েছে। আর নয়। দুই নেতাই ওই রাজ্যে ঘৃণার রাজনীতি করছেন। তাই ওই দুই নেতাই ওই রাজ্যে কোনও ধরনের জনসভা, শোভাযাত্রা কোনও কিছুতেই বক্তব্য রাখতে পারবেন না। এমনকী, সর্বসমক্ষে কোনও জনসভাতে উপস্থিতও থাকতে পারবেন না দু’নেতা। এক কথায়, আগামী ১২ মে, ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলের হয়ে কোনও ধরনের প্রচার চালাতে পারবেন না আজম ও অমিত। শুধু তাই নয়, উত্তরপ্রদেশের মুখ্য সচিবকে লেখা একটি চিঠিতে আজ নির্বাচন নির্দেশ দিয়েছে, অবিলম্বে দু’নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে ফৌজদারি মামলা দায়ের করুক প্রশাসন। একই সঙ্গে ওই রাজ্যে ক্ষমতাসীন সমাজবাদী পার্টির মন্ত্রী আজম খানের বিরুদ্ধে কেন কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি, তা-ও জানতে চেয়েছে কমিশন।

ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই মেরুকরণের পারদ চড়ছে গো-বলয়ের এই রাজ্যে। পিছনের সারিতে চলে যাচ্ছে উন্নয়ন। মোদী চাইছেন, এই রাজ্যে হিন্দু ভোটকে পাশে পেতে। সেই লক্ষ্যে প্রচ্ছন্ন হিন্দুত্বের বার্তা দিতে মোদী নিজে দাঁড়িয়েছেন বারাণসী থেকে। আর সরাসরি মেরুকরণের দায়িত্ব দেন নিজের ঘনিষ্ঠ নেতা অমিত শাহকে। মুলায়ম সিংহ আবার চাইছেন দলীয় নেতা আজম খানের হাত ধরে রাজ্যের ১৮ শতাংশ মুসলিম ভোট নিজেদের ঝুলিতে পুরতে। ফলে উত্তরপ্রদেশে মেরুকরণ থেকে ফায়দা তুলতে তৎপর মোদী-মুলায়ম দু’জনেই। সেই মেরুকরণের লক্ষ্যে তাঁদের কান্ডারিদের ছায়াযুদ্ধ মাত্রা ছাড়াচ্ছে দেখেই শেষ পর্যন্ত নড়ে বসতে হল নির্বাচন কমিশনকে।

কমিশন সূত্রের খবর, দুই নেতার কেউ কম যান না। অমিত যখন গোষ্ঠী-সংঘর্ষ পীড়িত মুজফ্ফরনগরে গিয়ে জাঠ সম্প্রদায়কে বদলা নেওয়ার জন্য উস্কানি দিচ্ছেন, তখন আজম খান টেনে আনছেন কার্গিল যুদ্ধের প্রসঙ্গ। যেখানে ওই যুদ্ধ জয়ের কৃতিত্ব তিনি দিয়েছেন স্রেফ মুসলিম সেনাদেরই। উদ্দেশ্য স্পষ্ট। মুসলিম সমাজকে বার্তা দেওয়া। দুই নেতাকে এ ভাবে মেরুকরণের জিগির উস্কে দিতে দেখে প্রমাদ গুনেছে কমিশন। তাই পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগেই আজ ওই দুই নেতাকে লাগাম পরানোর সিদ্ধান্ত নিল কমিশন। কী বলেছে কমিশন?

আজ রাজ্যের মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠিতে কমিশন বলেছেন, দুই নেতাই নির্বাচনী প্রচারে ধর্মের ভিত্তিতে উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখছেন। এতে ওই রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য প্রশাসন অবিলম্বে ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করুক। একই সঙ্গে কমিশনের অভিযোগ, চলতি সপ্তাহে দুই নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হলেও তাঁদের কেউই জবাব দেননি। তাই ফের তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠাবে কমিশন।

বস্তুত মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠিতে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের সমালোচনায় মুখর হয়েছে কমিশন। কমিশনের অভিযোগ, সমাজবাদী পার্টির নেতা তথা রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী আজম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার ক্ষেত্রে নরম অবস্থান নিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। ফলে নির্বাচনমুখী ওই রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই

৩২৪ ধারার উল্লেখ করে কমিশন জানিয়েছে, অবিলম্বে দুই নেতার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করুক উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এবং এ বিষয়ে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা কাল বিকেলে পাঁচটার আগে কমিশনকে জানাতে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

amit shah azam khan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy