Advertisement
E-Paper

বাস্তব জেনে শরিক খুঁজছে বিজেপি: মায়া

যতই হাওয়া তুলুন, সরকার গড়ার জন্য সংখ্যা হবে না জেনেই এখন শরিক খুঁজছেন নরেন্দ্র মোদী। আজ এই ভাষাতেই মোদীকে তোপ দাগলেন বহুজন সমাজ পার্টির প্রধান মায়াবতী। গত কাল ‘টাইমস নাও’ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশ্নের জবাবে মোদী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, মমতা-মায়াবতী-জয়ললিতার মতো নেত্রীদের জন্য তাঁর দরজা খোলা। তাঁর যুক্তি ছিল, প্রাক-ভোট শরিকদের নিয়ে এনডিএ ৩৫০টি আসন পেলেও কোনও এক নির্দল সাংসদকেও তিনি সমান গুরুত্ব দেবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৪ ০৩:০৪

যতই হাওয়া তুলুন, সরকার গড়ার জন্য সংখ্যা হবে না জেনেই এখন শরিক খুঁজছেন নরেন্দ্র মোদী। আজ এই ভাষাতেই মোদীকে তোপ দাগলেন বহুজন সমাজ পার্টির প্রধান মায়াবতী।

গত কাল ‘টাইমস নাও’ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশ্নের জবাবে মোদী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, মমতা-মায়াবতী-জয়ললিতার মতো নেত্রীদের জন্য তাঁর দরজা খোলা। তাঁর যুক্তি ছিল, প্রাক-ভোট শরিকদের নিয়ে এনডিএ ৩৫০টি আসন পেলেও কোনও এক নির্দল সাংসদকেও তিনি সমান গুরুত্ব দেবেন। আজ মোদীর এই বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে মায়াবতী সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, গোটা দেশে মোদী-হাওয়া রয়েছে বলে মিথ্যা প্রচার চালানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা বুঝে এখন শরিক খুঁজছে বিজেপি। ভোটের পরেও বহুজন সমাজ পার্টি কোনও অবস্থাতেই সাম্প্রদায়িক নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপিকে সমর্থন করবে না।

কিন্তু মোদী শিবিরের নেতাদের বক্তব্য, মোদী আদৌ বলেননি তিনি এই নেত্রীদের সমর্থন নেওয়ার কথা বলেছেন। বিভ্রান্তি কাটাতে দলের নেতা সুধাংশু ত্রিবেদী আজ বিজেপি দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, “বিজেপি বর্তমান শরিকদের নিয়েই ২৭২টি আসন অতিক্রম করবে। মোদী শুধু এটুকুই বলেছেন, এর পরেও কেউ যদি সমর্থন করতে আগ্রহী হন, তাঁদের জন্য দরজা খোলা রয়েছে।” কিন্তু ঘনিষ্ঠ মহলে বিজেপি নেতারা বলছেন, যতই হাওয়া থাকুক, দলের আত্মবিশ্বাস যতই থাকুক, বাস্তব পরিস্থিতি কী, সেটা ১৬ তারিখে ফল প্রকাশেই স্পষ্ট হবে। ভোটের আগে মোদীর একমাত্র লক্ষ্য নিজেদের শক্তি যতটা সম্ভব বাড়িয়ে নেওয়া। ভোটের পরে কী পরিস্থিতি হবে, কারও সমর্থনের প্রয়োজন হবে কি না, তা সংখ্যার নিরিখেই কৌশল স্থির হবে।

বিজেপির এক শীর্ষ নেতা আজ বলেন, যে তিন নেত্রীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে সাক্ষাৎকারে, তাঁদের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে সরাসরি এনডিএতে যোগ দেওয়া কঠিন। সেটি এবিপি আনন্দের সাক্ষাৎকারেই মোদী স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তবু বিজেপি ক্ষমতায় এলে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রাখতে চাইবেন মমতা। বিশেষত আজ সিবিআই তদন্তের রায়ের পর। বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ তাই মোদীর উপরেও চাপ বজায় রেখেছেন, যাতে কোনও ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেত্রীকে খুব বেশি চটানো না হয়।

তেমনই উত্তরপ্রদেশে মায়াবতীর সমর্থন নেওয়ার বিষয়টি নির্ভর করবে সংখ্যার নিরিখে। যদি উত্তরপ্রদেশে মোদী হাওয়া ঠিক মতো কাজ করে, তা হলে দলের আসন ৫০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। কিন্তু তা কাজ না করলে সেটি ৩০-এর কোঠায় এসে দাঁড়াবে। যদি বিজেপির সংখ্যা ৪০-ও ছাড়ায়, তাহলেও সুদূরপ্রসারী রণনীতির কথা মাথায় রেখে মায়াবতীর সাহায্য না নেওয়াই ভালো। কারণ, সে ক্ষেত্রে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিরই লোকসান। মায়াবতীও চাইবেন না, বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজের ভিত নষ্ট করতে। কারণ, বিজেপি ও মায়াবতী একই ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতে চাইছে।

আর মোদীর এই বক্তব্যের পরে জয়ললিতার পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য আসেনি। কিন্তু জয়ললিতার সঙ্গে মোদীর যে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, সেটি আগেই প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী। বিজেপি নেতৃত্বও মনে করছেন, প্রয়োজনে ভোটের পর জয়ললিতার সমর্থন পেতে কোনও অসুবিধা হবে না। ভোটের সময় কৌশলগত ভাবে জয়ললিতা দুই-এক বার মোদীকে আক্রমণ করলেও মমতার মতো তিক্ততার পর্যায়ে নিয়ে যাননি। কিন্তু প্রয়োজন না থাকলে জয়ললিতার সমর্থনও নেওয়ার পক্ষপাতী নন বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। তাঁদের মতে, অতীতে বাজপেয়ী সরকারকে বিপাকে ফেলে জয়ললিতা জোট ছেড়ে দিয়েছিলেন। খুব দরকার না হলে এমন শরিককে এড়িয়ে যাওয়াই বাঞ্চনীয়, যাঁরা ভবিষ্যতেও বেগ দিতে পারেন।

শেষ দফার ভোটের আগেই বিজেপির মধ্যে সম্ভাব্য শরিকদের নিয়ে মতামতের টানাপড়েন শুরু হয়ে গিয়েছে। তলে তলে সকলের সঙ্গেই বিভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এ বার শুধু অপেক্ষা ভোট ফলের।

mayabati narendra modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy