শব্দ-দানব আর মাদক দু’য়ের সঙ্গে লড়তে প্রস্তুত বরাক উপত্যকা। সেই যুদ্ধে মানুষকে পাশে চায় দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
নেশামুক্ত বরাক গড়তে এগিয়েছে ‘উজ্জ্বলাপন’। এ নিয়ে যুবসমাজকে সচেতন করার পাশাপাশি মহিলাদের সংগঠিত করতেও উদ্যোগী তাঁরা। সংস্থাটির সভাপতি তথা বিজেপি বিধায়ক দিলীপকুমার পাল বলেন, “মদ ছাড়াতে মণিপুরের মহিলা সংগঠন ‘মৈরা পাইবি’ আমাদের আদর্শ। তাঁরা যে ভাবে ক’দিন পর পর মশাল মিছিল করে সতর্কবার্তা শোনায়, মত্ত কাউকে পেলে জুতোপেটা করেন, তা প্রশংসনীয়।” তাঁর কথায়, “স্ত্রীর পক্ষে ঝগড়া করে স্বামীকে মদ-জুয়ার কবল থেকে বাঁচানো অসম্ভব নয়। একজোট হয়ে সে কাজ করতে হবে।”
শব্দ-দানবের তাণ্ডবে নাজেহাল করিমগঞ্জ। লাউড-স্পিকার, গাড়ির হর্ন, সভার সঙ্গে জুড়েছে বিচিত্রানুষ্ঠান। রেহাই নেই পড়ুয়া, রোগীরও। ওই দূষণের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে ‘পিস অ্যামিটি অ্যান্ড পাবলিক অ্যাওয়ারনেস অ্যাসোসিয়েশন’ (পাপা)। গত নভেম্বরে করিমগঞ্জের শম্ভুসাগর পার্কে ধর্নায় বসেন স্বেচ্ছাসেবী ওই সংগঠনের সদস্যরা। জেলাশাসক সঞ্জীব গোঁহাই বরুয়ার সঙ্গে দেখা করে তাঁরা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপের অনুরোধ জানান। সংস্থার সম্পাদক পি কে রায় বলেন, “জেলা প্রশাসনের হাতে শব্দের তাণ্ডব মোকাবিলার আইন রয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আছে। কিন্তু তার ফল মিলছে না।” সংস্থাটির দাবি, লাউড স্পিকার ব্যবহারের জন্য জেলা প্রশাসনের অনুমতি বাধ্যতামূলক হোক। রাত ৯টার পর তা নিষিদ্ধ করা হোক। শব্দমাত্রা বেঁধে দেওয়া হোক।
করিমগঞ্জের জেলাশাসক সঞ্জীববাবু জানান, তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন। রাত ১০টার পর লাউড স্পিকারের ব্যবহার কমেছে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অবসরপ্রাপ্ত সচিব কমলকল্যাণ দত্ত বলেন, “শব্দের দাপটে ঘরে থাকা যায় না।” দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের শিলচর আঞ্চলিক অফিস সূত্রে খবর, ওই অফিসে একটি ‘নয়েজ-মিটার’ রয়েছে। তাই পুজো-পার্বণের সময় সব জায়গায় শব্দমাত্রা মাপতে সমস্যা হয়। দূষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে জেলা প্রশাসন। পর্ষদ শুধু রিপোর্ট দিতে পারে।
মাদক রুখতে সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি জানায়, নেশাদ্রব্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতনতা গড়তে উপত্যকার বিভিন্ন জায়গায় সভা-সমিতি করা হবে। ক্লাব, স্কুল-কলেজে প্রচার চলবে। ছাত্র-যুবকদের সঙ্গে নেশার কুফল নিয়ে আলোচনা হবে। তাতে সামিল করা হবে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের। সংগঠনটির কর্তাদের বক্তব্য, ১৯৪৭ থেকে ২০০০ পর্যন্ত কাছাড়ে ৪১টি মদের দোকান লাইসেন্স পেয়েছিল। পরের ১৪ বছরে নতুন লাইসেন্স পায় ৫১টি দোকান। তাঁদের দাবি, মণিপুর রোড ধরে নিয়মিত কাছাড়ে ঢুকছে মাদক।
পুলিশ না মানলেও, বিএসএফ-এর ডিআইজি সতীশ বুঢ়াকোটির কথায় অন্য ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি বলেন, “মাদক ট্যাবলেট, গাঁজা, হেরোইন পাচারে ভারত-মায়ানমার-চিনের একটি চক্র সক্রিয়। তারা মণিপুর, কখনও মিজোরাম সীমান্ত ব্যবহার করে। কাছাড় ওই পাচারকারীদের করিডর।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy