নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: রমাকান্ত কুশওয়াহা।
নরেন্দ্র মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র ডাকে আজ সাড়া দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই সঙ্গে পরমাণু এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন যাত্রাপথ তৈরি হল।
আজ পুতিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শীর্ষ বৈঠকের পর ভারতে নতুন ১০টি পরমাণু চুল্লি গঠনের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। আগামী কুড়ি বছরে পর্যায় ক্রমে এই চুল্লিগুলি তৈরি করা হবে। পাশাপাশি মোদীর মেক ইন ইন্ডিয়ার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এক নতুন প্রতিরক্ষা সমঝোতার কথা বলেছেন পুতিন। তিনি মোদীকে জানিয়েছেন, ভারতের মাটিতে রাশিয়ার আধুনিক হেলিকপ্টার তৈরির কারখানা তৈরি করতে তিনি উৎসাহী।
আগামী মাসেই প্রজাতন্ত্র দিবসে বিশেষ অতিথি হিসাবে ভারত সফরে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার ঠিক আগে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আমেরিকার বিপরীত মেরুতে থাকা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের এই অগ্রগতি ভারতের পক্ষে যথেষ্ট তাৎপযপূর্ণ। সরকারে আসার পর থেকেই বিদেশনীতির ক্ষেত্রে এই ভারসাম্য বজায় রেখে এগোতে চাইছেন মোদী। তাঁর অর্থনীতি নির্ভর বিদেশনীতিতে তাই কোনও দেশই আর অচ্ছুৎ নয়। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং আমি নতুন দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ভারতের নিজস্ব অগ্রাধিকারের সঙ্গে দু’দেশের প্রতিরক্ষা সম্পর্ককে কীভাবে মেলানো যায় আলোচনা হয়েছে তা নিয়েও। এর মধ্যে মেক ইন ইন্ডিয়াও পড়ছে।” এর পরেই তিনি ভারতের মাটিতে রাশিয়ার সম্ভাব্য হেলিকপ্টার কারখানার প্রসঙ্গ তুলে জানান, এর ফলে ভারত থেকে গোটা বিশ্বে রফতানির সম্ভাবনাও বাড়বে। সামরিক এবং অসামরিক-- দুই ক্ষেত্রেই ওই কপ্টার কাজে লাগানো যেতে পারে।
পুতিনকে পাশে নিয়ে মোদী বলেছেন, “রাশিয়ার কাছে আমি প্রস্তাব দিয়েছি যে তাদের প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র রুশ সংস্থাগুলি ভারতেও উৎপাদন করতে পারে। পুতিন আমার অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন।”
পরমাণু ক্ষেত্রেও এক দীর্ঘমেয়াদি সমঝোতার কাজ আজ সেরে নিয়েছে ভারত। ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ুর কুড়ানকুলামে রাশিয়ার তৈরি ১০০০ মেগাওয়াটের পরমাণু চুল্লি তার উৎপাদন শুরু করে দিয়েছে। সেখানে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ ২০১৫ সালে শেষ হওয়ার কথা। মোদী জানিয়েছেন, “ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং যুবকদের কর্মসংস্থানের প্রশ্নে শক্তিক্ষেত্রে নিরাপত্তা অত্যন্ত জরুরি। কুড়ানকুলামের প্রথম পর্বের কাজ শেষ হওয়ায় আমি খুবই খুশি।” প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারতের মোট পরমাণু শক্তির ভাঁড়ার এই প্রকল্পের ফলে ২০ শতাংশ বেড়েছে। আজ আরও ১০টি চুল্লি তৈরির কথা হয়েছে। চুল্লি বসানোর সমস্ত যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানাও ভারতে হবে।
আজ দু’দেশের মধ্যে মোট কুড়িটি চুক্তি সই হয়েছে। যার মধ্যে পরমাণু এবং প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়গুলি ছাড়াও রয়েছে দু’দেশের বিদেশ মন্ত্রকের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা, তেল এবং গ্যাসের ক্ষেত্রে সহযোগিতার কাঠামো তৈরি, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণা, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতার মত বিষয়গুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy