Advertisement
১৮ মে ২০২৪

মাওবাদীদের সঙ্গে জোট, গ্রেফতার আনলা নেতা

আত্মসমর্পণ করে মূলস্রোতে ফেরার পরও মাওবাদীদের সঙ্গ ছাড়েনি অসমের আদিবাসী জঙ্গি সংগঠন আনলা এমনই দাবি করল পুলিশ। তদন্তকারীদের বক্তব্য, ওই সংগঠনের সেনাধ্যক্ষ নির্মল ওরফে ডেভিড তির্কে অসমের কয়েকটি জেলার যুবকদের বাছাই করে প্রশিক্ষণের জন্য ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী শিবিরে পাঠানোর ছক কষেছিল। গত রাতে নির্মল ও তার ৩ সঙ্গী সঞ্জয় সিংহ গড়, পদ্মেশ্বর ঘাটোয়ার ও বোবাই ঘাটোয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় নির্মল জানিয়েছে, আদিবাসীদের লড়াই বাঁচাতেই সে ওই কাজ করছিল।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:১৬
Share: Save:

আত্মসমর্পণ করে মূলস্রোতে ফেরার পরও মাওবাদীদের সঙ্গ ছাড়েনি অসমের আদিবাসী জঙ্গি সংগঠন আনলা এমনই দাবি করল পুলিশ।

তদন্তকারীদের বক্তব্য, ওই সংগঠনের সেনাধ্যক্ষ নির্মল ওরফে ডেভিড তির্কে অসমের কয়েকটি জেলার যুবকদের বাছাই করে প্রশিক্ষণের জন্য ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী শিবিরে পাঠানোর ছক কষেছিল। গত রাতে নির্মল ও তার ৩ সঙ্গী সঞ্জয় সিংহ গড়, পদ্মেশ্বর ঘাটোয়ার ও বোবাই ঘাটোয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় নির্মল জানিয়েছে, আদিবাসীদের লড়াই বাঁচাতেই সে ওই কাজ করছিল।

পুলিশ সূত্রের খবর, নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারির জন্য উত্তর-পূর্ব থেকে প্রশিক্ষণ শিবির আগেই সরিয়ে নিয়েছিল আনলা। সংগঠন মজবুত করতে ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়ের মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্মলরা। উদালগুড়ি, নগাঁও ও গোলাঘাট থেকে আদিবাসী যুবকদের ভিন্রাজ্যের মাও-শিবিরে প্রশিক্ষণ নিতে পাঠানোর দায়িত্ব ছিল উদালগুড়ির সঞ্জয়, মেরাপানির পদ্মেশ্বরের। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই অসমের ৩০ জন আদিবাসী যুবক ছত্তীসগঢ়ের প্রশিক্ষিণ শিবিরে পৌঁছেছে। আরও ২০ জনকে সেখানে পাঠানোর চেষ্টা চলছিল। তার আগেই আনলা নেতারা পুলিশের জালে ধরা পড়ে। গ্রেফতার হওয়ার পর নির্মল সাংবাদিকদের বলে, “আদিবাসীদের সমস্যা নিয়ে সরকার চিন্তিত নয়। বাধ্য হয়েই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হচ্ছে।” আজ নির্মলের মেরাপানি নাহরতলির বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ৪টি পিস্তল উদ্ধার করে।

শিক্ষকতা ছেড়ে ২০০৩ সালে আনলা গঠন করেছিল নির্মল। ২০০৮ সালের নভেম্বরে ঝাড়খণ্ডের গুমলা থেকে ১০ সঙ্গী-সহ ওই নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০০৭ সালে চুংগাজানে রাজধানী এক্সপ্রেসে বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ছিল নির্মল। শতাধিক মামলায় অভিযুক্ত নির্মলকে গ্রেফতার করে অসমে নিয়ে আসার পরও ফের রাজধানীকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটায় আনলা। ২০০৯-এর জানুয়ারিতে ওই জঙ্গি সংগঠনের ২০ জন নেতা আত্মসমর্পণ করে। জামিন পেয়ে নির্মলও আত্মসমর্পণকারীদের দলে নাম লেখায়। ২০১১ সাল থেকে আনলা সংঘর্ষবিরতিতে রয়েছে। কিন্তু এ বার প্রকাশ্যে এল তাদের সঙ্গে মাওবাদীদের যোগাযোগের বিষয়টি।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালেই আইবি জানিয়েছিল, আনলার সাহায্য নিয়ে মাওবাদীরা গোলাঘাট ও নাগাল্যান্ডের ওখায় প্রশিক্ষণ শিবির চালাচ্ছে। সেখানে প্রায় শ’তিনেক সদস্য রয়েছে। সেই সময় থেকেই গোলাঘাট ও উজানি অসমে মাওবাদীদের উপস্থিতি বাড়ে। ২০১২ সালের জানুয়ারিতে নাগাল্যান্ডের রালান এলাকার বাসিন্দারা আনলা ও মাওবাদীদের যৌথ শিবিরে হানা দিয়ে সেটি উৎখাত করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

maoist rajibakhsya raxit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE