নতুন বছরের তৃতীয় দিনেও গুলি ও মর্টার হানা জারি রইল জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে। শুক্রবার রাত থেকে সাম্বা ও কাঠুয়া জেলায় পাক বাহিনীর গুলিগোলায় দুই ভারতীয় সেনা জওয়ান ও এক গ্রামবাসী মহিলা নিহত হয়েছেন। ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা গুলিতে পাঁচ জন পাক রেঞ্জারও নিহত হয়েছেন বলে বিএসএফ সূত্রের দাবি।
বিএসএফের রিপোর্ট অনুযায়ী, পাক বাহিনী শুধু যে তাদের ১৩টি ছাউনি লক্ষ করে গুলি ও মর্টার ছুড়েছে তা-ই নয়, নিশানা করেছে আশপাশের গ্রামগুলিকেও। শুক্রবার মোটামুটি রাত সাড়ে ৯টা থেকে হামলা শুরু করে তারা। বিএসএফ পাল্টা জবাব দিলে ভোর ৩টে নাগাদ গোলাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু আজ সকাল ৭টা নাগাদ ফের গুলি ছুটে আসে। দুই জওয়ান ও কয়েক জন গ্রামবাসী আহত হন। আতঙ্কে হাজারখানেক গ্রামবাসী ইতিমধ্যেই ঘরছাড়া।
সীমান্তে এ ভাবেই টানা সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন চলছে গত ৩১ ডিসেম্বর রাত থেকে। অর্থাৎ যে রাতে আরব সাগরে উপকূল রক্ষী বাহিনীর তাড়া খাওয়ার পর বিস্ফোরণে উড়ে যায় একটি পাকিস্তানি ট্রলার। ৩১-এর গুলি বিনিময়ে এক বিএসএফ জওয়ান ও চার পাক রেঞ্জার নিহত হয়েছিলেন। তখন থেকেই ভারতকে দুষে আসছিল পাকিস্তান। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে চিঠি লিখেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিদেশ বিষয়ক পরামর্শদাতা সরতাজ আজিজ। সুষমা আজ তাঁকে পাল্টা চিঠিতে লিখেছেন, ‘৩১ তারিখ বিএসএফের রুটিন টহলের সময়ে পাক ছাউনি থেকে গুলি ছুটে এসেছিল। এক জওয়ান মারা যান। বিএসএফ তখন আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে পাকিস্তান আরও ভারী অস্ত্রে হামলা শুরু করে।’
সরতাজ আজিজের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সুষমা লিখেছেন, ‘ভারত বরাবর সীমান্তে শান্তি বজায় রাখে। পাকিস্তানও তা-ই করুক।’ যদিও আজই রীতিমতো চড়া সুরে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, “আমরা গত ছ’সাত মাসে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু মনে হচ্ছে, ওরা আমাদের ভাষা বুঝছে না। ভারত যে ভাষা বোঝে, আমরা এ বার সেই ভাষাতেই বোঝাব।”
শুক্রবার রাতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করে বিএসএফের ডিজি ডি কে পাঠক জানান, জম্মু-কাশ্মীরে অনুপ্রবেশকারীদের একটি বড় দল ঢোকার চেষ্টা করছিল। সেই চেষ্টা রুখে দেওয়া গিয়েছে। রাজনাথ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণে পাক প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আমরা বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছিলাম। তা সত্ত্বেও পাকিস্তান লাগাতার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে চলেছে।”
কেন এখন এমন মনোভাব নিচ্ছে পাকিস্তান?
বিদেশ মন্ত্রকের কূটনীতিকদের ব্যাখ্যা, যত দিন যাচ্ছে, নওয়াজ শরিফ ততই দুর্বল হয়ে পড়ছেন। পাকিস্তানের রাশ ফের চলে যাচ্ছে সেনা, আইএসআই ও মোল্লাতন্ত্রের হাতে। তারাই ভারত বিরোধিতা উস্কে দিচ্ছে। এক দিকে তারা কাশ্মীর সীমান্তে গুলির আড়ালে ভারতে জঙ্গি ঢোকানোর চেষ্টা করছে, অন্য দিকে সমুদ্রপথে অনুপ্রবেশেরও চেষ্টা চালাচ্ছে। লস্কর-কম্যান্ডার জাকিউর রহমান লকভিকে জেল থেকে বের করে এনে ফের ভারত বিরোধী সন্ত্রাসে কাজে লাগানোর চেষ্টার পিছনে এই সব মাথাই কাজ করছে বলে কূটনীতিকদের মত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy