দিল্লি জয়ের পর প্রথম দিল্লি সফর।
মুখে বলছেন, এই ফল শুধুই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নয়। বরং মানুষ ভোট দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর উপরে ভরসা রেখে, ‘আচ্ছে দিন’ দেখার স্বপ্ন নিয়ে। তবু আজ প্রথম দিল্লি সফরে মোদী কংগ্রেসের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়ার সুযোগও ছাড়লেন না। দিল্লি বিমানবন্দর থেকে অশোক রোডে বিজেপির সদর দফতর এই যাত্রাপথ এমন ভাবে বাছলেন যাতে জওহরলাল নেহরুর বাড়ি তিনমূর্তি ভবন, আকবর রোডে সনিয়া গাঁধীর বাড়ির পাশ দিয়েই যায় তাঁর কনভয়। পথের মাঝে গাড়ি থামিয়ে অভিবাদন কুড়িয়ে বললেন, “১৯৫২ সাল থেকে চার-পাঁচটি প্রজন্ম নষ্ট হয়েছে। তার পর এই জয়।” ইশারায় বিঁধলেন সেই নেহরু-গাঁধী পরিবারকেই। শুধু কি তাই? সন্ধ্যায় যখন বারাণসীতে গঙ্গার ঘাটে আরতি করলেন, তখনও গাঁধীজির দেড়শো বছর জন্মবার্ষিকী পালনের কথা বললেন ঘটা করে।
এখানেই অবশ্য শেষ নয়। বারাণসীতে দাঁড়িয়ে মোদী বিঁধলেন বিরোধীদেরও। বললেন, “এত দিন তো সকলে দেখে এসেছেন, সরকার তৈরি করতে জোট বাঁধে দলগুলি। এ বার দেখছে, বিরোধী হিসেবে টিকে থাকতে দলগুলি জোট বাঁধছে।” এ কথা বলার অন্য কারণও রয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, জয়ললিতার সঙ্গে জোট বাঁধার সম্ভব কি না, তা তারা খতিয়ে দেখছে। তৃণমূলের আসন সংখ্যা ৩৪। সঙ্গে এডিএমকের ৩৭টি আসন যোগ হতে তাদের মোট আসন হবে ৭১টি। অন্য দিকে, কংগ্রেস একক ভাবে পেয়েছে ৪৪টি আসন। কিন্তু ইউপিএ জোটের আসন সংখ্যা ৬১। ফলে জয়া-মমতার জোট হলে তা ইউপিএর থেকে বড় হবে। তা হলে তারা লোকসভায় বিরোধী দলনেতা এবং ডেপুটি স্পিকার পদের দাবিদার হতে পারে।
মোদী সেই প্রচেষ্টাকেই বিঁধেছেন। যেমন ভাবে দিল্লির রোড শোয়ে হাজির সমর্থকের জমায়েতকে তিনি বদলে দিলেন বড় ইভেন্টে। সনিয়ার বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়া রোড শোয়ে মাঝে মাঝে থেমেছেন। ঢাক-ঢোল, ফুলের তোড়া নিয়ে হাজির মানুষের উল্লাসে তাল মিলিয়ে হাত নেড়েছেন। কুর্নিশ করেছেন।
মোদীর কনভয় যখন পৌঁছল সদর দফতরে, তত ক্ষণে পৌঁছে গিয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলি, রাজনাথ সিংহ, নিতিন গডকড়ীরা। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুতই ছিলেন দলের নেতারা। গোলাপ, পদ্ম, বেলুনে সাজানো ছিল দফতরটি। মোদী আসতেই তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন রাজনাথ। সাদা বেলুনের তোড়া ওড়ালেন আকাশে। টেবিল চাপড়ে সব নেতারা অভিনন্দন জানালেন মোদীকে। তার পর চলল মিষ্টিমুখের পালা। আডবাণী মিষ্টি খাওয়াতেই পায়ে হাত দিয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন মোদী। সুষমাও তাঁকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। সন্ধ্যায় বারাণসীতে গিয়েও বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো করেন। পরে গঙ্গা আরতি করে বক্তৃতাও রাখেন। সেখানেই মোদীর ঘোষণা, গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করবেন। আধ্যাত্মিক রাজধানী হবে বারাণসী। ২০১৯ সালে মহাত্মা গাঁধীর জন্মের সার্ধশতবার্ষিকী। তখন সাফাই অভিযান শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy