অসময়ে: উত্তর-পূর্ব জাপানের সেনদাই শহরে ১৬ অক্টোবর তোলা হয়েছিল চেরি ফুলের এই ছবি।
বসন্ত এসে গেছে...। গুনগুন করে এই কলিই কি ভাঁজছে জাপানের ‘সাকুরা’ গাছেরা?
জাপানের জাতীয় ফুল ‘সাকুরা’ বা চেরি গাছের ফুল। হরেক কিসিমের রঙের হলেও হাল্কা গোলাপি, প্রায় সাদা চেরি ফুলটিই সব চেয়ে বেশি জনপ্রিয়। প্রতি বছর জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত জাপানের শহরে-গ্রামে দেখা যায় এই ফুল। সব থেকে বেশি ফোটে মার্চ-এপ্রিল মাসে। জাপানি সাহিত্য ও শিল্পে ‘বসন্তের দূত’ হিসেবে বিখ্যাত এই ফুল বা ‘চেরি ব্লসম’।
কিন্তু এ বার অক্টোবর মাস থেকেই ফুটতে শুরু করেছে সেই চেরি ফুল। জাপানের একটি সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, উত্তর জাপানে অন্তত সাড়ে তিনশো চেরি গাছ ইতিমধ্যেই সাদা-গোলাপি ফুলে ভরে গিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের বেশ কয়েক মাস আগেই।
কেন, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা আঙুল তুলছেন সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের দিকেই। চেরি গাছে কুঁড়ি ধরে গ্রীষ্মকালে। কিন্তু পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা সেই কুঁড়ি ফুটতে শুরু করে বসন্তকালে, অর্থাৎ শীতকালে গাছের সব পাতা ঝরে যাওয়ার পরে। কিন্তু এ বছর সারা গ্রীষ্মকাল জুড়ে এই দ্বীপরাষ্ট্রের উত্তর দিকে আছড়ে পড়েছে একের পর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়। যার ঠেলায় ঝরে গিয়েছে অধিকাংশ গাছের পাতা। তা ছাড়া, এ বার জাপানে গরমও বেশি পড়েছিল। আবহাওয়ার এই হেরফেরেই কুঁড়ি থেকে ফুল ধরেছে বহু চেরি গাছে।
প্রকৃতির এই খামখেয়ালিপনায় মুশকিলে পড়ে গিয়েছেন জাপানিরা। প্রতি বছর বসন্তকালে খুব ধুমধাম করে পালন করা হয় ‘হানামি’ উৎসব। বসন্তকে স্বাগত জানানোর এই পার্বণের নির্ধারিত সময় মার্চ-এপ্রিল মাস। জাপানিরা মনে করেন, প্রকৃতির ক্ষণস্থায়ী সৌন্দর্যের প্রতীক হচ্ছে এই চেরি ফুল। সারা বসন্তকাল ধরে চেরি গাছের তলায় বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজনের সঙ্গে পিকনিক করেন তাঁরা। চেরি গাছের তলাতেই চলে খানাপিনা। কিন্তু এ বার শীতের আগেই চেরি ফুল ফুটতে শুরু করায় তাঁরা বুঝতেই পারছেন না, কখন, কী ভাবে ‘হানামি’ উৎসব পালন করবেন। চেরি ফুল ফোটা দেখতে এবং এই হানামি উৎসবে শামিল হতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকেরাও মার্চ-এপ্রিল মাসে বেড়াতে আসেন জাপানে। তাঁদের জন্য জাপানের জাতীয় পর্যটন সংস্থা প্রতি বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে একটি তালিকাও তৈরি করে। সেই তালিকায় বলা থাকে, কোন শহরে, কোন ধরনের চেরি গাছে, কবে ফুল ফুটতে পারে। এ বছর এখনও সেই তালিকায় প্রকাশ করতে পারেনি জাপানি পর্যটন সংস্থা।
Tag: othm
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy