Advertisement
০৫ মে ২০২৪

সঙ্কট চরমে, ঋণও খারিজ, এফ-১৬ কিনতে পারছে না পাকিস্তান

অর্থসঙ্কট চরমে। আমেরিকার কাছ থেকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কিনতে পারছে না পাকিস্তান। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে এফ-১৬ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওবামা প্রশাসন। পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে তাদের ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছিল।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৬ ১৪:০০
Share: Save:

অর্থসঙ্কট চরমে। আমেরিকার কাছ থেকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কিনতে পারছে না পাকিস্তান। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে এফ-১৬ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওবামা প্রশাসন। পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে তাদের ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মার্কিন কংগ্রেস বেঁকে বসেছে। পাকিস্তান দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও জঙ্গি নেটওয়ার্ক ভাঙার চেষ্টা করেনি, মনে করছেন মার্কিন কংগ্রেসের অধিকাংশ সদস্য। পাকিস্তানের মতো দেশকে এফ-১৬ কেনার জন্য মার্কিন নাগরিকদের করের টাকা ঋণ হিসেবে দিতে তাই নারাজ কংগ্রেস।

আধুনিক যুদ্ধবিমানের সংখ্যা খুব কম থাকায় পাকিস্তানের বিমানবাহিনী এই মুহূর্তে ধুঁকতে শুরু করেছে। ভারতের হাতে থাকা সুখোই, মিরাজ আর জাগুয়ার ফাইটার জেটের মোকাবিলা করার মতো যুদ্ধবিমান এখন পাকিস্তানের হাতে বেশ কমই। বিমানবাহিনীর দ্রুত আধুনিকীকরণের জন্যই আমেরিকার কাছে থেকে এফ-১৬ কেনা পাকিস্তানের পক্ষে এখন খুব জরুরি। বলছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে পাকিস্তান কোনও সমর সরঞ্জাম কিনতে চাইলে, আমেরিকা তা পাকিস্তানকে দেবে না। তাই সন্ত্রাসবাদ রোখার নাম করে যুদ্ধবিমান কিনতে চেয়েছে পাকিস্তান। সে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদীদের যে রকম বাড়বাড়ন্ত, তা রোখার জন্য পাক বিমানবাহিনীর আধুনিকীকরণ প্রয়োজন বলে আমেরিকাকে পাকিস্তান জানিয়েছে অনেক বারই। ওবামার প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়, পাকিস্তানকে ৮টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিক্রি করা হবে। সেই যুদ্ধবিমান কেনার জন্য যে ৬৯ কোটি ৯০ লক্ষ ডলার পাকিস্তানকে খরচ করতে হবে, তাও আপাতত ঋণ হিসেবে আমেরিকার কাছ থেকেই পাবে পাকিস্তান। এমনটাই স্থির হয়েছিল পাক-মার্কিন আলোচনায়। কিন্তু মার্কিন কংগ্রেস ওবামা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেয়নি।

মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের অধিকাংশই মনে করছেন, পাকিস্তান বার বার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমেরিকার কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা, ঋণ এবং যুদ্ধাস্ত্র আদায় করেছে। কিন্তু আসলে সন্ত্রাস রুখতে কোনও ভূমিকাই নেয়নি। পাকিস্তানের মাটিতে দ্রুত বাড়তে থাকা হাক্কানি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে পাক সরকার কোনও ব্যবস্থা এখনও নেয়নি। কিন্তু মার্কিন সরকার দীর্ঘ দিন ধরে হাক্কানি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পাকিস্তানকে চাপ দিচ্ছে। এমন একটি দেশকে এফ-১৬ দেওয়ার পক্ষপাতী নয় মার্কিন কংগ্রেস। মার্কিন নাগরিকদের করের টাকা সে দেশের রাজকোষ থেকে পাকিস্তানকে ঋণ হিসেবে দেওয়ার ঘোর বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস। বলা হয়েছে, পাকিস্তান যদি এফ-১৬ কিনতে চায়, তা হলে পুরো দাম মিটিয়ে দিয়ে তা কিনুক। কোনও ঋণ বা অর্থসাহায্য আমেরিকা দেবে না।

আরও পড়ুন:

মরবেন না, বিয়ে করবেন না, পার্টি কংগ্রেস আসছে!

এক মাস সময় রয়েছে ইসলামাবাদের হাতে। তার মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে ৭০ কোটি ডলার দিয়ে তারা এফ-১৬ কিনবে কি না। মে মাস কেটে গেলে ওই যুদ্ধবিমানের দাম আরও বেড়ে যাবে। পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে ৮টি যুদ্ধবিমান কেনার জন্য ওই বিপুল অর্থ খরচ করার অবস্থায় পাক সরকার নেই। অর্থসঙ্কট চরমে। তাই ঋণ না পেলে আপাতত এফ-১৬ কেনা সম্ভব হবে না। চিনের কাছ থেকে সস্তার যুদ্ধবিমান জেএফ-১৭ কিনে আপাতত কাজ চালানোর চেষ্টা করবে ইসলামাবাদ। ওই চিনা যুদ্ধবিমানের সক্ষমতা এফ-১৬ বা ভারতের হাতে থাকা সুখোই-৩০এমকেআই-এর ধারেকাছে আসে না। পাকিস্তানও তা ভাল ভাবেই জানে। তবু আপাতত নিরুপায় পাকিস্তান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE