দেখতে দেখতে আবার চলে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ! লোকসভা নির্বাচন। আজ প্রায় ষোলো বছর দেশের বাইরে, আর দুর্ভাগ্যক্রমে ভোটের সময়ে কখনওই দেশে যাওয়া হয়নি। তাই ভোট-উত্তেজনার আঁচ একটুও গায়ে লাগে না। এই অনুভূতিটা আরও প্রকট হয় ইংল্যান্ডে থাকি বলে।
এখানকার আবহাওয়ার মতো ভোটটাও কেমন যেন নিরুত্তাপ!
ইংল্যান্ডে ভোট হল আর পাঁচটা সাধারণ ঘটনার মতোই। এখানে ভোটার লিস্টে নাম তোলা থেকে ভোট দেওয়া, কোথাও কোনও রকম উত্তেজনার আঁচটুকুও পাওয়া যায় না। ভোটের দিন ভোট হচ্ছে কি না, সেটা না বলে দিলে বোঝারও উপায় নেই। যত বারই ভোট দিয়েছি তত বারই দেখেছি আমিই একা ভোট দিচ্ছি আর দু’জন ভদ্রমহিলা বুঝিয়ে দিচ্ছেন কী ভাবে ভোটটা দিতে হবে। সেই পুরাতনী রীতি মেনে কাগজে নামের পাশে প্রার্থীর নাম আর তার রাজনৈতিক দলের নাম দেখে কলমের খোঁচা দেওয়া। ইভিএম মেশিন নেই, তাই ইভিএমে কারচুপি হয়েছে বলে প্রতিবাদী ভাষণও নেই। কোথাও কোনও দেওয়াল লিখন নেই বা কোনও রাজনৈতিক দলের কোনও প্রতীক নেই। যে ছেলে ছোটবেলা থেকে ভোট মানে জেনে এল কাস্তে-হাতুড়ি-তারা আর হাতের চাপানউতোর (পশ্চিমবঙ্গে ঘাস ফুল ভাল করে ফোটার আগেই প্রবাসী হয়েছি), তার কাছে ভোটের দিন অফিস করে ফাঁকা পোলিং বুথে রাত সাড়ে ন’টার সময়ে কোনও এক বিশেষ প্রার্থীর (যাঁর মুখটাও চিনি না) নামের পাশে কলমের খোঁচা দেওয়া যেন বিশুদ্ধ বিরিয়ানি পিপাসুকে সেদ্ধ মুসুর ডাল খেতে দেওয়া! এখানে আবার নাগরিক না হলেও ভোটাধিকার থাকে, যদি তিনি কমনওয়েলথ দেশের নাগরিক হন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তবে এখানে যে ভোটটি নিয়ে যে কোনও জনপ্রিয় বাংলা ধারাবাহিকের থেকেও বেশি চর্চা হচ্ছে এবং কেউ জানে না কত দিন এই নাটক চলবে, তা হল ব্রেক্সিট-সংক্রান্ত। আড়াই বছর আগে ৫১.৯ শতাংশ ব্রিটেনবাসী ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু আজও জানা গেল না যে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, নাকি তাদের সঙ্গেই থাকছে। এ যেন লোকসভা ভোটের আড়াই বছর ধরে রাষ্ট্রপতি শাসন, কারণ কেউই ঠিক করতে পারছে না কে সরকার গড়বে!
লেখক ব্রিটেনে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy