Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

জনপ্রিয়তাবাদের চাপ, সরব গগৈ

প্রধান বিচারপতি গগৈয়ের মতে, বিচারের প্রক্রিয়া যাঁদের মাধ্যমে হয়, সাধারণ সময়ে তাঁদের হাত মজবুত ও তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাটা জরুরি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
সোচি শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০০:৫০
Share: Save:

আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা ও জনপ্রিয়তাবাদী শক্তিগুলির চাপ নিয়ে সরব হলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। সাংহাই সহযোগিতা সংগঠন তথা এসসিও-ভুক্ত দেশগুলির শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের সম্মেলনে তিনি বললেন, ‘‘স্বাধীনতাই বিচার ব্যবস্থার অন্তরাত্মা। এটা কোনও পিল নয় যে এক বার খেলেই হল। এটা একটা পরিস্থিতি, কখনওই যার বদল হওয়া উচিত নয়।’’

কৃষ্ঠসাগরের তীরে রুশ শহর সোচিতে হয়ে গেল এই দু’দিনের এই সম্মেলন। বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতাকে কী ভাবে মজবুত করা যাবে— এই নিয়ে আলোচনা হয় মঙ্গলবার সন্ধেয়। সেখানেই প্রধান বিচারপতি গগৈয়ের বক্তব্যে উঠে আসে জনপ্রিয়তাবাদী শক্তিগুলির চাপ ও তার মোকাবিলায় বিচার ব্যবস্থার ভূমিকার কথা।

অনির্বাচিত বিচারপতিরা কী করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বা সরকারের মতকে খারিজ করে দিতে পারেন— এই প্রশ্ন তুলে থাকেন অনেকে। এরই জবাবে প্রধান বিচারপতি গগৈ বলেন, ‘‘দেশ কখনও কখনও এমন পর্বের মধ্য দিয়ে যায়, যখন আইনসভা ও প্রশাসন, দু’টি স্তম্ভই জনপ্রিয়তাবাদের তোড়ে ভেসে যায়, সরে যায় তাদের সাংবিধানিক কর্তব্য ও লক্ষ্য থেকে। এমন সময়ে সংবিধানের আদর্শ ও মূল্যবোধকে অটুট রাখতে বিচার ব্যবস্থাকেই জনপ্রিয়তাবাদী শক্তিগুলি বিরুদ্ধে অটল থাকতে হয়।’’

প্রধান বিচারপতি গগৈয়ের মতে, বিচারের প্রক্রিয়া যাঁদের মাধ্যমে হয়, সাধারণ সময়ে তাঁদের হাত মজবুত ও তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাটা জরুরি। যাতে কঠিন পরীক্ষার সময়ে বিচার ব্যবস্থা জনপ্রিয়তাকাঙ্ক্ষী শক্তিগুলির মোকাবিলা করতে পারে। একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন, বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা ও বিচারপতিদের স্বাধীনতা অবশ্যই এক নয়। তবে পরস্পরের উপরে নির্ভরশীল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রথম দফার সরকারের আমলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির উপরে আঘাত আসছে বলে বারবার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। তা সত্ত্বেও আগের চেয়ে বেশি শক্তি নিয়ে দ্বিতীয় দফায় সরকারে এসেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক মঞ্চে সরাসরি এ সবের উল্লেখ সম্ভব নয়। তবে অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও যে জনপ্রিয়তাবাদী শক্তি বিচার ব্যবস্থার সামনে একটি বড় চ্যলেঞ্জ সে কথাটি স্পষ্ট ভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে এটাও উল্লেখ করেছেন যে, ভারতে বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে সাংবিধানিক অন্য স্তম্ভগুলির সম্পর্ক বরাবরই খুব মর্যাদাপূর্ণ।

এই সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের আর যে প্রবীণ বিচারপতিরা যোগ দিয়েছেন, তাঁরা হলেন বিচারপতি ভি এন রামানা, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি এম আর শাহ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sochi CJI Ranjan gogoi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE