Advertisement
১৮ মে ২০২৪

আবার অঘটন? চিন্তা বাইডেনের

আমেরিকার পঞ্চাশটি প্রদেশের মধ্যে প্রতি বছর ১২-১৫টি প্রদেশের ভোটই খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে মনে করেন সমীক্ষকেরা।

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। ছবি রয়টার্স।

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। ছবি রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৫১
Share: Save:

আমেরিকার নির্বাচনী দৌড়ে এত দিন জনমত সমীক্ষাই তাঁকে ক্রমাগত এগিয়ে রেখেছে রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে। কিন্তু ভোটের দিনে সেই সমীক্ষাই চিন্তা বাড়াচ্ছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের। কারণ সমীক্ষা বলছে, দ্রুত ব্যবধান কমাচ্ছেন ট্রাম্প।

একটি সাম্প্রতিকতম জনসমীক্ষা বলছে, গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশগুলিতে ট্রাম্পের চেয়ে মাত্র ২.৯ শতাংশ ভোটে এগিয়ে আছেন বাইডেন। গত তিন দিনে ট্রাম্পের পরিবার এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স মিলে প্রায় ৪০টি নির্বাচনী সভা করেছেন এই প্রদেশগুলিতে। ১৫টি সভা করেছেন স্বয়ং ট্রাম্প। শাসক শিবিরের শেষ বেলার এই মরিয়া ‘কার্পেট বম্বিংয়ে’ লাভ হয়েছে বলেই মনে করছেন সমীক্ষকেরা। তাঁদের মতে, এর ফলে জনমত সমীক্ষার ব্যবধান কমিয়ে এনেছেন ট্রাম্প। বাইডেন, ডেমোক্র্যাট ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা— সবাই মিলে ঝাঁপিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু অন্তিম ল্যাপের প্রচারে ট্রাম্প একটু এগিয়েই গিয়েছেন।

ফলে জল্পনা চলল, এত দিন ধরে চলা জনমত সমীক্ষাকে পাল্টে দিয়ে শেষ পর্ষন্ত কি জিতেই যাবেন ট্রাম্প? গত বারের থেকেও বড় ‘অঘটন’ কি ঘটতে চলেছে?

আরও পড়ুন: ভোটগ্রহণ শুরু আমেরিকায়, হোয়াইট হাউসের দৌড়ে ট্রাম্প-বাইডেন

চার বছর আগেকার নির্বাচনের ইতিহাস মনে করাচ্ছে, অনুকূল সমীক্ষার ঘুঁটিও উল্টে যাওয়া অসম্ভব নয়। ২০১৬-র নির্বাচনে জনমত সমীক্ষায় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের চেয়ে লাগাতার পিছিয়ে থাকছিলেন ট্রাম্প। শেষ মুহূর্তে পপুলার ভোটে হিলারি জিতলেও আসল নির্ণায়ক ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটে বাজি মেরে হোয়াইট হাউসে পৌঁছে যান ট্রাম্প।

আমেরিকার পঞ্চাশটি প্রদেশের মধ্যে প্রতি বছর ১২-১৫টি প্রদেশের ভোটই খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে মনে করেন সমীক্ষকেরা। এগুলি সচরাচর কোনও দলেরই ঘাঁটি নয়। ফলে সেগুলিই হয়ে ওঠে ‘যুদ্ধক্ষেত্র’। এই তালিকায় রয়েছে ওহায়ো, ফ্লরিডা, পেনসিলভ্যানিয়া, মিশিগান, অ্যারিজ়োনা, উইসকনসিনের মতো প্রদেশ। গত কাল বাইডেন ছিলেন ওহায়োতে, ওবামা ফ্লরিডায়, হ্যারিস পেনসিলভ্যানিয়ায়। উল্টো দিকে ট্রাম্প পাঁচটি সভা করেছেন নর্থ ক্যারোলাইনা, ফ্লরিডা, উইসকনসিন, পেনসিলভেনিয়া ও মিশিগানে। আমেরিকার প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলির বক্তব্য, সমীক্ষায় এই সব ক’টি প্রদেশেই পিছিয়ে ছিলেন ট্রাম্প। তাই সেখানে বাড়তি জোর দিতে হয়েছে তাঁকে। এমনকি বরাবরের রিপাবলিকান ঘাঁটি টেক্সাসে এ বার কী হবে, তা-ও জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন: বাইডেনের বাজিমাত, নাকি আবার ট্রাম্পেট

জনমত সমীক্ষায় এক সময়ে ট্রাম্পের চেয়ে ৬ থেকে ৮ শতাংশে এগিয়ে ছিলেন বাইডেন। কিন্তু বাছাই করা প্রদেশগুলিতে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ব্যবধান ক্রমশ কমে এসেছে। চিন্তাটা সেখানেই। একটি সমীক্ষক সংস্থার বক্তব্য, জয়ের ১০ শতাংশ সম্ভাবনা এখনও আছে ট্রাম্পের। সারা দেশের পপুলার ভোটের জনমত সমীক্ষার চেয়ে এই প্রদেশগুলিতে দুই প্রার্থীর ব্যবধান যে কম, সে দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা বলেছে, ‘‘হয়তো ২০১৬ সালের মতোই ইলেক্টোরাল কলেজ থেকে ভাল ফায়দা তুলবেন ট্রাম্প।’’ পপুলার ভোটে বাইডেনের জয়ের ব্যবধান দু’শতাংশের নীচে নেমে এলে ট্রাম্পেরই ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা জোরালো হবে বলে তাদের মত।

ট্রাম্প আছেন ট্রাম্পেই। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি নির্দেশ দেয়, ভোটের তিন দিন পরে আসা পোস্টাল ব্যালটও ভোটগণনার সময়ে গ্রাহ্য হবে। তা নিয়ে টুইটারে ট্রাম্প লেখেন, ‘‘এর ফলে অবাধ জোচ্চুরি হবে। রাস্তায় হিংসা সৃষ্টি হতে পারে।’’ টুইটটি সরিয়ে দিয়ে টুইটার লিখেছে, ‘‘এটি বিতর্কিত এবং হয়তো বিভ্রান্তিকর।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE