এমনই বর্ণ-বিদ্বেষ বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে উইসকনসিনে।
বর্ণবিদ্বেষ-বিরোধী বিক্ষোভে গুলি চলেছিল। কেনোশা শহরে গত মঙ্গলবার মাঝরাতের সেই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল দুই কৃষ্ণাঙ্গ বিক্ষোভকারীর। আহত হন এক জন। সেই ঘটনায় উইসকনসিনের পড়শি প্রদেশ ইলিনয় থেকে গত কাল এক শ্বেতাঙ্গ নাবালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে কেনোশার পুলিশই গুলি চালিয়েছিল। কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জেকব ব্লেককে গুলি করার পরে ফের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছিল কেনোশার পুলিশ দফতরকে। কিন্তু ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে ১৭ বছরের ওই কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আপাতত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে সে।
ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের দিকে পর পর কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে পুলিশের সামনে দিয়েই নিজের সেমি অটোম্যাটিক রাইফলটি নিয়ে হেঁটে বেরিয়ে যাচ্ছে ওই নাবালক। ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক পুলিশের গাড়ি তাকে কেন খেয়াল করল না, সে প্রশ্ন উঠেছে।
বর্ণবিদ্বেষ-বিরোধী বিক্ষোভে এখনও উত্তাল আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশ। উইসকনসিন তো বটেই, মিনেসোটা, ওরেগনের মতো প্রদেশও ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে। যে পুলিশ অফিসার গত রবিবার কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জেকব ব্লেককে পিছন থেকে পর পর গুলি করেছিলেন, তাঁর নাম প্রকাশ করেছে উইসকনসিনের বিচার বিভাগ। রাস্টেন শেস্কি নামে ওই অফিসার সাত বছর কেনোশার পুলিশ দফতরে কাজ করছেন। জেকবের পরিবার অবিলম্বে তাঁর বহিষ্কারের দাবি করেছে।
উইসকনসিনের অ্যাটর্নি জেনারেল জোশ কল এর মধ্যেই আবার জানিয়েছেন, জেকবের গাড়ির সামনের আসন থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ যখন তাঁকে ধাওয়া করে, গাড়ির দরজা খুলে জেকব সামনের দিকে ঝুঁকেছিলেন। সম্ভবত বিপদ আঁচ করে রাস্টেন নামে ওই অফিসার পর পর গুলি চালান জেকবের পিঠে। যদিও গুলি করার সময়ে জেকবের হাতে ছুরি ছিল কি না, তা স্পষ্ট করেনি পুলিশ দফতর। মার্কিন বিচার বিভাগ জানিয়েছে, জেকবকে গুলি চালানোর ঘটনায় আলাদা করে নাগরিক অধিকার রক্ষা সংক্রান্ত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভে উত্তাল কেনোশা শহরে গত কালই ফেডারেল বাহিনী পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবু শহরের উত্তেজনা কমেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সন্ধে থেকে সকাল পর্যন্ত শহরে কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন। কিন্তু সেই কার্ফু উপেক্ষা করেই গত কাল কমপক্ষে দু’শো মানুষ শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নেন। গভর্নর টনি ইভার্স জানিয়েছেন, তিনি ইতিমধ্যেই ফেডারেল বাহিনীর সংখ্যা দ্বিগুণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
উইসকনসিনের পাশাপাশি উত্তপ্ত মিনেসোটা প্রদেশও। এই প্রদেশের মিনিয়াপোলিসেই গত মে মাসে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের অত্যাচারে মৃত্যু হয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের। তার পর থেকেই বর্ণবিদ্বেষ-বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ এই শহর। জেকবকে গুলি চালানোর ঘটনার পর থেকে উত্তেজনা ফের বেড়েছে সেখানে। গত কাল থেকে সেখানে চলছে দাঙ্গা, লুটতরাজ। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে মিনিয়াপোলিসে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ়। সেখানেও মোতায়েন করা হবে ফেডারেল বাহিনী। ওরেগন প্রদেশের পোর্টল্যান্ড শহরেও একটি অভিবাসী দফতরের সামনে জড়ো হয়ে কাল বিক্ষোভ দেখান কয়েকশো মানুষ। পুলিশ সেখানে হাজির হয়ে যাবতীয় জমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। গ্রেফতারও করা হয়েছে বেশ কয়েক জনকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy