আর এক মাস পরেই ৪৪ বছরে পা দেবে মিউনিখ অলিম্পিক্সের সেই ভয়াবহ দিন। ১৯৭২ এর ৫ সেপ্টেম্বর। অলিম্পিক্সের ইতিহাসে কালো হরফে লেখা থাকবে দিনটি। জার্মানির মিউনিখে সে বার গেমসের ট্যাগ লাইন ছিল, ‘গেমস অফ পিস অ্যান্ড জয়।’’ কিন্তু রাতারাতি সেই গেমস রূপ নিয়েছিল ‘গেমস অফ টেররে’। ১১ জন ইজরায়েলি অ্যাথলিটকে গেমস ভিলেজ থেকে পণবন্দি করেছিল প্যালেস্তিনীয় উগ্রপন্থীরা। সেই ১১ জনকেই পরে খুন করেছিল তারা।
ছ’ফিটের তারের বাউন্ডারি দিয়ে ঘেরা ছিল গেমস ভিলেজ। সেই দেওয়াল টপকে ইজরায়েল টিমের হেড কোয়ার্টারে ঢুকে পড়েছিল উগ্রপন্থীরা। সঙ্গে সঙ্গেই ৩৩ বছরের কুস্তি কোচ ও ৩২ বছরের ভারোত্তলককে খুন করে ‘ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর লিবারেশন অর্গানাইজেশনের’ সেই দল। বাকি ন’জনকে পণবন্দি করে রাখা হয়। তার পরই জানা যায় তাদের দাবি। ইজরায়েলের জেলে বন্দি থাকা প্রায় ২০০ আরব গেরিলার মুক্তির দাবিতে ইজরায়েলি অ্যাথলিটদের বন্দি করা হয়েছে।
বিকেল পাঁচটা নাগাদ আন্দ্রে স্পিতজারকে গেমস ভিলেজের জানলার সামনে নিয়ে আসা হয়। তত ক্ষণে গেমস ভিলেজ ঘিরে ফেলেছে নিরাপত্তারক্ষীরা। তখন গেমস ভিলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর স্ত্রী আঙ্কি স্পিতজার। পরে তিনি জানিয়েছিলেন সেই দৃশ্যের কথা— ‘‘ওর হাত পিছন দিকে বাঁধা ছিল। ওর পরনে ছিল একটা ছোট টি-শার্ট। এর পরই ওরা আমার স্বামীকে বন্দুকের বাট দিয়ে মারতে মারতে ভিতরে নিয়ে যায়। তার পরই জানলা বন্ধ করে পর্দা টেনে দেওয়া হয়।’’
দুপুর পর্যন্ত সময় দেয় উগ্রপন্থীরা। জার্মান প্রশাসনের সঙ্গে কথাবার্তা চলতে থাকে। তত ক্ষণে পেরিয়ে গিয়েছে একটার পর একটা ডেড লাইন। এর পর উগ্রপন্থীদের দাবি মেনে তাদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয়। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে এয়ারপোর্ট। যেখানে তাঁদের জন্য রাখা ছিল বিশেষ বিমান। ন’জন পণবন্দিকে নিয়ে এয়ারপোর্টে পৌঁছয় উগ্রপন্থীরা। বিমানে কোনও পাইলট ছিল না। তৈরি ছিল জার্মান পুলিশ। তখনই ব্ল্যাক সেপ্টেম্বরের লিডার বুঝে যায় তাঁরা ফাঁদে পড়ে গিয়েছে। লুকিয়ে থাকা জার্মান পুলিশ তখনই গুলি চালাতে শুরু করে। সেই গুলির লড়াইয়ে উগ্রপন্থীদের সঙ্গে মৃত্যু হয় ইজরায়েলি অ্যাথলিটদেরও। তাদের ছোড়া হ্যান্ড গ্রেনেডে মৃত্যু হয় অন্য একটি বিমানের যাত্রীদেরও।
আরও খবর
৯২ অলিম্পিক্সের সোনার পদক কুড়িয়ে পেল ছোট্ট স্মিথ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy