অনুমোদন নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনে কিছু দিন আগেই বিপাকে পড়ে গিয়েছিলেন হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। এ বার জোকায় ইএসআইয়ের এমবিবিএস কলেজের পড়ুয়ারাও একই ধরনের অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে গেলেন। কারণ, মেডিক্যাল শিক্ষা থেকে হাত গুটিয়ে নিচ্ছে এমপ্লয়িজ স্টেট ইনসিওরেন্স কর্পোরেশন (ইএসআইসি)।
শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, মঙ্গলবার সব রাজ্যেরই ইএসআই মেডিক্যাল কলেজগুলিকে চিঠি দিয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। তার পরেই তোলপাড় শুরু হয়েছে কলেজগুলিতে। চলছে পড়ুয়াদের বিক্ষোভও। ইএসআই এ ভাবে মেডিক্যাল শিক্ষা থেকে সরে দাঁড়ালে সরাসরি সমস্যা হবে দু’ভাবে। ১) ডাক্তার তৈরির একটা উদ্যোগ থেমে যাওয়ায় রাজ্য কম চিকিৎসক পাবে। রোগীরা পর্যাপ্ত পরিষেবা পাবেন না। ২) যে-সব ছাত্রছাত্রী ইএসআইয়ের মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন, তাঁরা পড়বেন অথৈ জলে।
বিভিন্ন রাজ্যে এই মুহূর্তে ইএসআইয়ের ১২টি মেডিক্যাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। জোকায় আছে তাদের ১০০ আসনের এমবিবিএস কলেজ। এ ছাড়া মানিকতলা ইএসআই হাসপাতালে স্নাতকোত্তর স্তরে স্ত্রীরোগ চিকিৎসার পঠনপাঠন চলে। কেন্দ্রীয় সরকার চিঠি দিয়ে ইএসআইয়ের মেডিক্যাল শিক্ষার পাট চুকিয়ে দেওয়ার কথা জানানোয় অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন ওই সব ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা। জোকার মেডিক্যাল কলেজটি দু’বছরে পা দিয়েছে। এই মুহূর্তে সেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা ২০০। ইএসআই-কর্তৃপক্ষ রাতারাতি হাত গুটিয়ে নিলে তাঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা স্পষ্ট নয়।
ইএসআই-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে ওই সব মেডিক্যাল কলেজের দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেছেন। যদিও এ রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, কেন্দ্রের এমন কোনও সিদ্ধান্তের কথা তাঁদের জানা নেই। তাঁর কথায়, “এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। আচমকা কিছু বলা যাবে না।” রাজ্যের স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “আমাদের অনুমতি নিয়ে তো আর ওরা কলেজ খোলেনি। এখন হঠাৎ আমাদের দায়িত্ব নিতে বললেই তো আমরা রাতারাতি হাত বাড়িয়ে দিতে পারব না। আর্থিক দায়িত্ব কেন্দ্রকেই নিতে হবে।”
আর্থিক দায়িত্বের ব্যাপারে কেন্দ্র অবশ্য এখনও পরিষ্কার ভাবে কিছু জানায়নি। ইএসআইয়ের ডেপুটি মেডিক্যাল কমিশনার বিবেক হান্ডা জানিয়েছেন, মেডিক্যাল শিক্ষাটা ইএসআইয়ের আওতায় না-থাকাই বাঞ্ছনীয়। বেশ কিছু দিন ধরেই এই নিয়ে আলোচনা চলছিল। তিনি বলেছেন, “রাজ্য যত দিন না কলেজগুলিকে অধিগ্রহণ করছে, তত দিন আমরা সেগুলি চালাব। তবে সেই মেয়াদটা অবশ্যই খুব বেশি দিন হবে না। আর্থিক দায়দায়িত্বের ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy