দীপাবলির রাতে আস্থা রাখুন আলোয়, শব্দে নয়। ছবি: শাটারস্টক।
আলোর উৎসবে মানুষের অসচেতনতাকে হাতিয়ার করে কোথাও গুঁড়ি মেরে ঢুকে পড়ে শব্দদানব! কোথাও আবার কোনও কোনও বাজি পরিবেশ দূষণকে একলাফে বাড়িয়ে তোলে অনেকটাই। কোনও বাজিতে আবার বিস্ফোরণের সম্ভাবনা বেশি। এ সব নানা দিক মাথায় রেখে কলকাতা পুলিশ প্রতি বছরই কিছু বাজিকে নিষিদ্ধ তকমা দেয়। সে সব নির্দেশিকা মেনেই বাজি বিক্রি হয় দোকানে। এ বছরও ১০৫টি বাজিকে ‘নিষিদ্ধ’ বলে দেগে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
এমনিতে রাজ্যের নিয়মে ৯০ ডেসিবেলের উপর শব্দ মানেই তা বিপদসীমার উপর। আর তার উপর নির্ভর করে পুলিশ প্রশাসনের তরফে নিষিদ্ধ করা হয় বেশ কিছু শব্দবাজি। যদিও পুলিশের চোখরাঙানি বা নিষেধ থাকলেও প্রতি বছর ঘুরপথে বা লুকিয়ে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি হয়। নিয়ম ভাঙলে জরিমানা তো বটেই এমনকি জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার পর্যন্ত হতে পারেন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই।
সুপ্রিম কোর্টও সম্প্রতি বাজি পোড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট করেছে সময়সীমা। নির্দেশ অনুযায়ী রাত আটটা থেকে দশটার মধ্যে পুড়িয়ে ফেলতে হবে বাজি। তবে তা অবশ্যই আলোর বাজির ক্ষেত্রে। আলোর উৎসবে সামিল হতে আপনিও কি বাজি কেনায় সামিল?
আরও পড়ুন: বাজিতে পুড়ে গিয়েছে? সঙ্গে সঙ্গে যা করতেই হবে আপনাকে
নিষেধের তালিকায় অন্যতম কালীপটকা। ছবি: শাটারস্টক।
তা বেশ তো! উৎসবের আবহ উপভোগ করতে বাজি পোড়ান, ক্ষতি নেই। কিন্তু কী কী বাজি কিনছেন? সে সব আদৌ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই তো? অজান্তে নিয়ম ভাঙলেও কিন্তু বড়সড় সমস্যা অপেক্ষা করছে বরাতে। যেমন ধরুন কালী পটকা। একসঙ্গে সুতোয় ঝুলিয়ে অনেকগুলো কালীপটকা ফাটানোয় অনেকে মজা খুঁজে পেলেও এ বাজি কিন্তু পুরোপুরি নিষিদ্ধ। যদিও এখনও বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী লুকিয়ে চ়ড়া দামে বিক্রি করেন এই বাজি।
ঠিক তেমনই যে কোনও জায়গায় আচমকা ঢুকে গিয়ে বিপদ ঘটাতে পারে বলে নিষিদ্ধ হয়েছে ছুঁচো বাজিও। এক সময় এই বাজির বিপুল পরিমাণে বিক্রি হলেও আজকাল এর বিক্রি কমেছে। নিষেধের আওতায় পড়ে বাদ পড়েছে সাপ বাজিও। ছোট গোলাকৃতি ট্যাবলেটের আকারের এই বাজি ভয়ানক দূষণ ছড়াত। যার জেরে বাদ পড়েছে এই বাজিও। তীব্র আলো ও ততোধিক শব্দের মেলবন্ধনকে একটা বাজির মধ্যে পুরে তার নাম দেওয়া হয়েছিল আরাবিয়ান নাইট! আরব রাতের সে মোহও নিষেধের বেড়াজাল অতিক্রম করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: বাজি পোড়ান, কিন্তু বিপদ এড়াতে এগুলো অন্তত মাথায় রাখুন
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
খুব প্রচলিত কিছু বাজির মধ্যে দোদোমা, চকোলেট বোম, উড়ন তুবড়ি, ধানি পটকা, গোল্ডেন স্টার, নানা ধরনের শেল, ১৫ শট স্টার, রকেট বোম এ সবও নিষেধের আওতায় ঢুকেছে। বাদ যায়নি রং দে বাসন্তি, মেরি গো রাউন্ড, ম্যাজিক পাইপ, ড্রিম গার্লের মতো জনপ্রিয় বাজিও।
সুতরাং বাজি পোড়াতে চাইলে আস্থা রাখুন ফুলঝুরি, রং মশাল, চড়কি, তুবড়ি প্রভৃতি আলোর বাজির উপর। নিয়ম মেনে দীপাবলির রাতে আলোর উৎসব থেকে ছেঁটে ফেলুন শব্দদানবকে।
(তথ্য: কলকাতা পুলিশ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy