Advertisement
E-Paper

ওয়ার্ডমাস্টার পদ বহালই, আসছেন অবসরপ্রাপ্তেরা

শিক্ষক-চিকিৎসকের অভাব মেটাতে না পেরে অবসরের পরে তাঁদের পুনর্নিয়োগ চালু করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। এ বার ওয়ার্ডমাস্টারদের ক্ষেত্রেও সেই একই নীতি প্রয়োগে বাধ্য হচ্ছে তারা। ওয়ার্ডমাস্টারদের ‘ডায়িং ক্যাডার’ ঘোষণার পরেও বিকল্প পদ তৈরিতে ব্যর্থ হয়েই শেষ পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত ওয়ার্ডমাস্টারদের পুনর্বহাল করা হচ্ছে।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৫

শিক্ষক-চিকিৎসকের অভাব মেটাতে না পেরে অবসরের পরে তাঁদের পুনর্নিয়োগ চালু করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। এ বার ওয়ার্ডমাস্টারদের ক্ষেত্রেও সেই একই নীতি প্রয়োগে বাধ্য হচ্ছে তারা। ওয়ার্ডমাস্টারদের ‘ডায়িং ক্যাডার’ ঘোষণার পরেও বিকল্প পদ তৈরিতে ব্যর্থ হয়েই শেষ পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত ওয়ার্ডমাস্টারদের পুনর্বহাল করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এক দিকে নতুন করে ওয়ার্ডমাস্টার নিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, অন্য দিকে তার বিকল্প পদ তৈরি করে লোক নেওয়া চালু করা যায়নি। ফলে রাজ্য জুড়ে অসংখ্য সরকারি হাসপাতালে রোগী পরিষেবা সংক্রান্ত কাজ পরিচালনার জন্য কর্মীর আকাল শুরু হয়েছিল। ভুগছিলেন রোগী এবং তাঁর আত্মীয়েরা। ফলে বাধ্য হয়েই আবার অবসরপ্রাপ্ত ওয়ার্ডমাস্টারদের ফেরানোর পরিকল্পনা নিতে হয়েছে দফতরকে। যার প্রথম দফায় অবসর নেওয়া ৬৪ জন ওয়ার্ডমাস্টারকে (যাঁদের বয়স ৬০-৬৪ এর মধ্যে) রাজ্যের ৪৩টি হাসপাতালে পুনর্নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে কলকাতারই শুধু ১১টি হাসপাতাল রয়েছে। আপাতত তাঁদের ছ’মাসের জন্য নিয়োগ করা হচ্ছে।

রোগী পরিষেবা সংক্রান্ত কোন কোন কাজের দায়িত্বে থাকেন ওয়ার্ডমাস্টারেরা? তাঁদের পদ খালি হতে থাকায় কী কী সমস্যা হচ্ছিল?

স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে হাসপাতাল পরিচালনার যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়া, জরুরি পরিস্থিতিতে রোগী দেখতে অন-ডিউটি চিকিৎসকদের কলবুক পাঠানো ও প্রয়োজনে গাড়ি পাঠিয়ে কোয়ার্টার্স থেকে ডেকে আনা, রোগীর জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা, হাসপাতালের সাফাইয়ের কাজ নজরদারি করা, চতুর্থশ্রেণির কর্মীদের কাজ পরিচালনা, পূর্ত দফতর ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রাখা, ময়না-তদন্তের বিষয়ে তদারকি, পুলিশ কেসের আসামীদের চিকিৎসার বিষয়টি দেখা, পুলিশ কেসের বিভিন্ন জিনিস (যেমন দেহ থেকে বার করা বুলেট) নিজেদের হেফাজতে রাখার মতো বহু কাজের দায়িত্বে থাকেন ওয়ার্ডমাস্টারেরা।

কিন্তু এখন তাঁদের সংখ্যা কমতে কমতে এমন দাঁড়িয়েছে যে এই বিপুল দায়িত্ব সামলানোর লোক পাওয়া যাচ্ছে না। রাজ্যে ওয়ার্ডমাস্টারের ৪৭৭টি পদের মধ্যে মেরেকেটে ২১০ জন রয়েছেন। কোনও কোনও হাসপাতালে এঁদের সংখ্যা এক জনে এসে ঠেকেছে। আবার কোথাও তা-ও নেই। ফলে তাঁদের জন্য এই নির্দিষ্ট কাজগুলি কে করবেন, তা বুঝতে না পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাথায় হাত পড়েছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মেডিক্যাল কলেজগুলির।

সরকারি ওয়ার্ডমাস্টারদের সংগঠন ‘ওয়ার্ডমাস্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক শত্রুজয় মিত্র জানান, ২০১৩ সালের ২২ অক্টোবর স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ টাস্কফোর্সের বৈঠক হয়। সেখানেই সরকারি হাসপাতাল থেকে ওয়ার্ডমাস্টারের পদ তুলে দিয়ে ‘ফেসিলিটি ম্যানেজার’ বলে নতুন পদ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ঠিক হয়, এঁদের ন্যূনতম যোগ্যতা হবে স্নাতক। ওয়ার্ডমাস্টারদের ৯ নম্বর স্কেলের বেতনের পরিবর্তে এঁরা ১২ নম্বর স্কেল পাবেন। এর পরে এক বছর ছ’মাস কেটে যাওয়ার পরেও ফেসিলিটি ম্যানেজার পদে কাউকে নিয়োগ করতে পারেনি স্বাস্থ্য দফতর। এ দিকে, প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে ওয়ার্ডমাস্টার পদেও লোক নেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে তাঁরা যে দায়িত্ব সামলাতেন তার জন্য লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য দফতরের একাংশের মতে, অপরিণামদর্শিতা এবং সমন্বয়ের অভাবেই এই হাল।

স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, ‘‘সরকারি ব্যবস্থায় সব সময় সব কিছু সময় মতো হয় না। ফাইল চালাচালিতে একটু সময় লাগে। ফেসিলিটি ম্যানেজার নিয়োগের প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়েছে। এর মাঝখানে ওয়ার্ডমাস্টারদের অনেক পদ খালি হয়ে গিয়েছিল বলে সাময়িক ভাবে কিছু পুনর্নিয়োগ হচ্ছে।’’

Parijat bandyopadhyay Health department Ward master Teacher-doctor Doctor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy