Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
child

করোনা থাবা বসাতে পারে শিশুর শরীরেও, কী কী সাবধানতা নেবেন

কোন উপসর্গে সচেতন হবেন?

বাইরে বেরলে শিশুর মুখেও থাকুক মাস্ক। ছবি: শাটারস্টক।

বাইরে বেরলে শিশুর মুখেও থাকুক মাস্ক। ছবি: শাটারস্টক।

নিশান্তদেব ঘটক (শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ)
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২০ ১৪:৩৮
Share: Save:

কোভিড-১৯-এর ত্রাসে বিশ্ব কোণঠাসা। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় শিশুরা এই অসুখের অন্যতম বড় টার্গেট। এই ভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ শিশুর শরীরে সে ভাবে কোনও লক্ষণ বোঝা যায় না। খুব সতর্ক থাকাটা তাই বিশেষ প্রয়োজনীয়। সচেতন থাকলে অসুখকে পরাস্তও করা যাবে সহজে।

রোগের উপসর্গ

আর পাঁচটা সাধারণ সর্দি-কাশির মতোই এই রোগে আক্রান্ত শিশুরাও জ্বর, শুকনো কাশি, গলা ব্যথা, মাথা যন্ত্রণা ,বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগে।

কী ভাবে ভাইরাসটির ঢোকে শিশুদের শরীরে ?

শিশুদের সংক্রমণ সাধারণত দু’ভাবে হতে দেখা যায়। প্রথমত, কোনও কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শ থেকে রোগ ছড়াতে পারে। অথবা কোভিড-১৯ হচ্ছে এমন জায়গায় ঘুরে আসার পরও এই রোগ সংক্রমণ হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে হাঁচি, কাশির মধ্যে দিয়ে নির্গত থুতুর ড্রপলেট অথবা কোনও সারফেস থেকে আসা ভাইরাস হাতের মাধ্যম দিয়ে চোখ, নাক,মুখ দিয়ে শিশুদের শরীরে প্রবেশ করে যায়।

আরও পড়ুন: লকডাউনে এ ভাবে সামলান ঘর ও অফিসের কাজ, হাতে পাবেন বাড়তি সময়

শিশু যেন চোখ-নাক-মুখে হাত না দেয়। ছবি: আইস্টক।

শিশুদের থেকে কী ভাবে রোগ ছড়াতে পারে?

একটা বড় অংশের ( গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রায় ২৮ শতাংশের) যেহেতু লক্ষণ সে ভাবে কিছু থাকে না, বাড়ির অন্যদের কাছে তারা সুস্থ হিসাবেই বিবেচিত হয়। পরিবারের অন্য সদস্য, বিশেষত বয়স্কদের মধ্যে তারা রোগ সংক্রমিত করতে থাকে। তা ছাড়াও কোলের শিশুরা যেহেতু হ্যান্ড হাইজিন আর কাফ এটিকেট মানার ঊর্ধ্বে, তাই অল্প লক্ষণযুক্ত শিশুরাও হাঁচি-কাশি ও হাতের মাধ্যমে অন্যদের রোগ সংক্রমিত করতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শতকরা ২৯ শতাংশ কোভিড-১৯‌ আক্রান্ত ‌শিশুর মলের নমুনায় এই ভাইরাস এর অস্তিত্ব মিলেছে। অর্তাৎ এরা মলের মাধ্যমেও রোগজীবাণু ছড়াতে পারে।

আরও পড়ুন: সংক্রমণ রুখতে জুতো, চটি কী ভাবে পরিচ্ছন্ন রাখবেন

ফ্লু হলে কী করণীয়

ফ্লু হলই শিশুর ব্যবহৃত সব বাসনপত্র ও গামছা আলাদা করুন। দিন দুয়েকে দেখে নিন শিশুর কোনও রকম শ্বাসের সমস্যা হচ্ছে কি না। হলেই দ্রুত কোভিডের পরীক্ষা করান। টেস্ট পজিটিভ হলে ভয় না পেয়ে তাকে কোয়রান্টাইনে রেখে সুস্থ করে তোলার কাজে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতা করুন।

সাধারণ ফ্লু হলে শিশুদের এই ক’দিন পরিবারের সব সদস্যের কাছে তাকে যেতে দেবেন না। যিনি শিশুর দেখভাল করবেন, তিনি মাস্ক পরে ও ঘন ঘন হাত ধুলে আর রোগাক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকবে না। বাড়ির বয়স্কদের থেকে শিশুদের দূরে রাখুন। শৌচের সময় শিশু বা শৌচ করানোর দায়িত্বে থাকা মানুষটিকে খুব ভাল করে সাবান দিতে হবে হাতে। যিনি পরিষ্কার করবেন, তাঁর হাতে কোনও আংটি বা তাবিজ-কবজ না থাকলেই ভাল, এতে জীবাণুমুক্ত হতে অসুবিধা হয়। শিশু যেন চোখ-নাক-মুখে হাত না দেয়, সে দিকে খেয়াল রাখুন। যারা বয়সে একটু বড়, তাদের কাফ এটিকেট ও বার বার হাত ধোয়ার নিয়ম জানিয়ে রাকুন, লক্ষ রাখুন তা সে মেনে চলছে কি না।

ছোটদের খাবারের মধ্যে সুষম ভাবে প্রোটিন, শাকসব্জি ও পানীয় জল ঠিক করে খাওয়ালে, ভাল করে ঘুমোলে শিশুর ইমিউনিটি বৃদ্ধি পাবে ও রোগের সঙ্গে তারা লড়তে পারবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE