Advertisement
০৬ মে ২০২৪

চিকিৎসায় ‘গাফিলতি’, ভাঙচুর

পথদুর্ঘটনায় গুরুতর জখম এক যুবকের চিকিৎসায় গাফিলতির নালিশে হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে তাঁর পরিজনদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনাকে ঘিরে মালদহের রতুয়া হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তেজনা ছড়ায়। ক্ষুব্ধ জনতার একাংশ এক নার্সকেও হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ।

ভাঙচুরের পর।—নিজস্ব চিত্র।

ভাঙচুরের পর।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩১
Share: Save:

পথদুর্ঘটনায় গুরুতর জখম এক যুবকের চিকিৎসায় গাফিলতির নালিশে হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে তাঁর পরিজনদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনাকে ঘিরে মালদহের রতুয়া হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তেজনা ছড়ায়। ক্ষুব্ধ জনতার একাংশ এক নার্সকেও হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। আতঙ্কে হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক সহ বহির্বিভাগের রোগীরাও। খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছায় পুলিশ। পুলিশের সামনেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ক্ষুব্ধ জনতার একাংশ। পরে পুলিশের উদ্যোগে জখম যুবককে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসা না করে দু’ঘন্টা তাকে ফেলে রাখায় তাঁর অবস্থার অবনতি হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। যদিও অভিযোগ মানতে চাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ভাঙচুরের ঘটনায় হাসপাতালের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে।

মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘যুবকের মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। সেই চিকিৎসা এখানে করা সম্ভব নয়। তাই প্রাথমিক যা করণীয় তা করার পরেই যুবককে মালদহে রেফার করা হয়। কিন্তু পরিবারের লোকেরা যুবককে নিয়ে যেতে দেরি করে। তাই গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়।’’

মৃত প্রভাত মণ্ডলের(২১) বাড়ি সামসি লাগোয়া কান্ডারণ এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি মোবাইল ফোনের ডিস্ট্রিবিউটর সংস্থার কর্মী ছিলেন তিনি। সংস্থার কাজেই এদিন সকালে তিনি বাইকে চেপে রতুয়ায় যাচ্ছিলেন। সামসি-রতুয়া রাজ্য সড়কের ভাদো পাকুড়তলায় পিছন দিক থেকে আসা একটি লরির ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়েন প্রভাত। দুর্ঘটনার পরই লরি নিয়ে পালিয়ে যায় চালক। স্থানীয় বাসিন্দারা গুরুতর জখম প্রভাতকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করান। খবর পেয়ে কিছুক্ষনের মধ্যেই হাসপাতালে পৌঁছে যান প্রভাতের পরিবারের লোকজন ও বন্ধুরা।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি করার পরেও তাঁর কোনও চিকিৎসা করা হয়নি। এমনকি তাঁকে অক্সিজেনও দেওয়া হয়নি। দু’ঘন্টা বাদে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে মালদহে নিয়ে যেতে বলা হয়। কেন দেরি করে তাকে রেফার করা হল, সেই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করে তারা। প্রথমে জরুরি বিভাগে ও পরে আউটডোরে চড়াও হয়ে দরজা, জানালা, চেয়ার, টেবিল ভাঙচুর কর। লন্ডভন্ড করে দেওয়া হয় নথিপত্র। ওই সময় এক নার্সকেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে রতুয়ার ওসি রাজু খন্দকার বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে তিনিই অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে প্রভাতকে মালদহে পাঠান। কিন্তু পথে পীরগঞ্জ এলাকাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃতের বাবা নৃপেন মণ্ডল অভিযোগ বলেন, ‘‘হাসপাতালে পৌঁছে শুনি ছেলের কোনও চিকিৎসাই ওরা করেনি। চিকিৎসা হলে ছেলেটাকে হয়ত বাঁচানো যেত। সেই ক্ষোভেই কেউ ভাঙচুর করে থাকতে পারে।’’

রতুয়ার বিএমওএইচ শামিম সম্রাট বলেন, ‘‘যুবককে দেখেই পরিস্থিত আঁচ করে সঙ্গে সঙ্গে মালদহে রেফার করা হয়। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স পাচ্ছে না বলে ওরাই দেরি করছিল। আমাদের কোনও গাফিলতি নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE