Advertisement
E-Paper

যন্ত্রাংশ বিকল, বন্ধ রয়েছে ল্যাপারোস্কপি

অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্র ভেঙে যাওয়ায় অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে রয়েছে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালের ল্যাপারোস্কপি ইউনিটে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত ৩০ জুন এই বিভাগে অস্ত্রোপচার চলাকালীনই যন্ত্রাংশ আচমকা ভেঙে যায়। তার পর থেকেই বন্ধ এই বিভাগের যাবতীয় অস্ত্রোপচার। ফলে, সমস্যায় পড়েছেন রোগীরা। কিন্তু, কী ভাবে ভাঙল যন্ত্রাংশ, তা জানাতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে, ঘটনাটি নিয়ে ধোঁয়াশা থাকছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৫ ০১:০০

অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্র ভেঙে যাওয়ায় অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে রয়েছে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালের ল্যাপারোস্কপি ইউনিটে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত ৩০ জুন এই বিভাগে অস্ত্রোপচার চলাকালীনই যন্ত্রাংশ আচমকা ভেঙে যায়। তার পর থেকেই বন্ধ এই বিভাগের যাবতীয় অস্ত্রোপচার। ফলে, সমস্যায় পড়েছেন রোগীরা। কিন্তু, কী ভাবে ভাঙল যন্ত্রাংশ, তা জানাতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে, ঘটনাটি নিয়ে ধোঁয়াশা থাকছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় প্রথম বার প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে সদর হাসপাতালে এই ইউনিট গড়ার সিদ্ধান্ত নেন। রাজ্য সরকার ও পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের অর্থে ল্যাপারোস্কপি ইউনিট গড়ে তোলা হয়। খরচ হয়েছিল ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। ‘মিনিমাল অ্যাক্সেস সার্জারি, জেনারেল ল্যাপারোস্কপি ইউনিট’ খোলার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এসে মাস ছয়েক পড়েছিল হাসপাতালে। হাসপাতালের দোতলায় অপারেশন থিয়েটার সংলগ্ন যেখানে এই বিভাগ গড়ে তোলা হবে বলে ঠিক হয়েছিল, সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগে কিছু সমস্যা থাকায় ইউনিটটি চালু করতে দেরি হয়। শেষমেষ ২০১৪ সালের ২৭ জুন নতুন এই অস্ত্রোপচার ইউনিট চালু হয়। হাসপাতালের এক চিকিৎসককে প্রশিক্ষণও দেয় স্বাস্থ্য দফতর।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হার্নিয়া, গলব্লাডার, টিউমার, পিত্তথলির পাথর-সহ বিভিন্ন অস্ত্রোপচার শুরু হয় এই বিভাগে। সপ্তাহে দু’দিন মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার এই বিভাগে অস্ত্রোপচার হয়। এক বছর ঠিকঠাক ভাবে চললেও গত ৩০ জুন অস্ত্রোপচার চলাকালীনই ল্যাপারোস্কপি বিভাগের একাধিক যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। যদিও তখন অস্ত্রোপচারের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। তার পর থেকেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে এই বিভাগে অস্ত্রোপচারের কাজ। তারিখ পাওয়া সত্ত্বেও বাতিল হয়ে গিয়েছে অনেক রোগীর অস্ত্রোপচার। তেমনই এক রোগী, পুঞ্চা থানার সরগড়া গ্রামের বাসিন্দা নিমাইচন্দ্র মাহাতো গলব্লাডারে পাথরের সমস্যায় ভুগছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে ১ জুলাই ভর্তি হতে বলা হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের তারিখ ছিল পরের দিন। অস্ত্রোপচার বাতিল হয়ে গিয়েছে।’’

সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক পবন মণ্ডল বলেন, ‘‘বিষয়টি তদন্তাধীন। তাই এ নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করব না। যা বলার সুপার বা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকই বলবেন।’’ হাসপাতালের সুপার শিবাশিস দাস বলেন, ‘‘ওই বিভাগের যন্ত্র আচমকা ভেঙে যাওয়ার কারণে আপাতত অস্ত্রোপচার বন্ধ রয়েছে। যে কোম্পানির কাছ থেকে যন্ত্রটি কেনা হয়েছিল, তাদের সঙ্গে কথা চলছে।’’ কী ভাবে ভাঙল? সুপার বলেন, ‘‘তা বলা বলা যাবে না। তবে, এই বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে।’’ ধোঁয়াশা কাটেনি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানবেন্দ্র ঘোষের বক্তব্যেও। তাঁর কথায়, ‘‘যন্ত্রাংশ কেন ভাঙল, তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।’’ কেন তদন্ত-কমিটি গড়ার প্রয়োজন হল? তাঁর জবাব, ‘‘এ নিয়ে কিছু অভিযোগ উঠেছে, তাই।’’

জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে এই বিভাগটি চালু হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছেতেই। তিনি চেয়েছিলেন, পিছিয়ে পড়া জেলার মানুষজনের কাছে আধুনিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে। এত দিন ঠিকঠাক চলার পরেও কী ভাবে আচমকা এই বিভাগের যন্ত্র ভেঙে গেল, তার তদন্ত করতে হবে বলে আমি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে বলেছি।’’ এই বিভাগে যাঁরা অস্ত্রোপচার করেন, তাঁদের ল্যাপারোস্কপির সঠিক প্রশিক্ষণ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্যও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে বলেছেন স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ। তিনি বলেন, ‘‘যদি দেখা যায় উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নেই, তা হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে।’’

laparoscopy purulia instruments mamata bandopadhyay chief minister
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy