Advertisement
০১ মে ২০২৪
loke ki bolbe

Loke Ki Bolbe: মানসিক অসুস্থতার ইতিহাস কী প্রভাব ফেলে চিকিৎসায়? আলোচনায় মনোবিদ ও মনোসমাজকর্মী

‘লোকে কী বলবে! সঙ্গে অনুত্তমা’ অনুষ্ঠানের মানসিক রোগীদের নিয়ে আলোচনার এটি ছিল দ্বিতীয় পর্ব।

মনের কথা মন খুলে বলা কতটা সহজ?

মনের কথা মন খুলে বলা কতটা সহজ? গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২২ ২০:৫৩
Share: Save:

‘মনের অসুখ আবার কোনও অসুখ নাকি?’ অবসাদ নিয়ে কথা বলতে গেলে এ হেন প্রত্যুত্তর পাননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। মনকে অবহেলা করা যেন এক অভ্যাস। শুধু বাইরের নয়, বাড়ির ভিতরে থাকা অসংখ্য মানুষেরও। কখনও কখনও সেই অভ্যাস রোগীর মনেও ছড়িয়ে দেয় অস্বীকারের বীজ। তাই নিজের মন খারাপকেও অস্বীকার করে বসেন বহু মানুষ। মন থাকতেও যাঁরা মনের কথা আদানপ্রদানের সুযোগ পান না, তাঁদের কথা শুনতে ও বলতেই সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউবে আলোচনায় বসলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘লোকে কী বলবে! সঙ্গে অনুত্তমা’। এটি ছিল ‘মানসিক রোগী’ প্রসঙ্গে দ্বিতীয় পর্ব। সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ‍্যের অধিকার আন্দোলনের অন‍্যতম বিশিষ্ট মুখ মনোসমাজকর্মী রত্নাবলী রায়।

আলোচনার শুরুতেই উঠে এল বাইপোলার নামক একটি মানসিক সমস্যার কথা। প্রবাসী বাঙালি চান্দ্রেয়ী লিখেছেন, তাঁর স্বামীর কথা। তিনি জানান, নিজের মানসিক সমস্যার ইতিহাস থাকলেও প্রথম যখন তিনি স্বামীর সমস্যার কথা জানতে পারেন, তখন কিছুটা হলেও ভেঙে পড়েন। কিন্তু তিনি বা তাঁর স্বামী হাল ছাড়েননি। তাঁরা মনোবিদের কাছে যান, ধারাবাহিক চিকিৎসার মাধ্যমে এখন অনেকটাই সুস্থ রয়েছেন তাঁর স্বামী। মনের অসুখ জয় করে সন্তানের স্বপ্নও দেখছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গেই অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন রাখেন মনোসমাজকর্মী রত্নাবলী রায়ের কাছে, তবে কি একই অসুখের ইতিহাস থাকলে রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা কিংবা রোগীর প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া সহজ হয়? সহজ হয় রোগীর সঙ্গে সহাবস্থানের ক্ষেত্রে পারস্পরিক বোঝাপড়া গড়ে ওঠা?

রত্নাবলী জানান, আসলে যাঁদের কোনও রোগের ইতিহাস থাকে তাঁরা সেই রোগের সঙ্গে কী করে ঝুঝবেন তা অনেক পরিষ্কার ভাবে বুঝতে পারেন। তাঁর মতে, একই রকম রোগের ইতিহাস থাকলে নিজের ভিতরের সম্বলটুকুকে সহায় করেই কী করে নিজেকে নতুন ভাবে সৃজনশীল করা যায় তা বুঝে ওঠা সহজ হয়। তিনি বলেন, ‘‘মানসিক রোগের ইতিহাস থাকলে আমরা সাধারণত দূরে করে দিই এক জন মানুষকে। কারণ আসলে আমরা তাঁকে বুঝতে পারি না। সেই বুঝতে পারার জায়গাটাতেই আসলে মানুষ কাছাকাছি আসে।’’ শরীরের অন্য কোনও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যথা হলে মানুষ সমব্যথী হতে পারে। কারণ অনেকেই নিজেও সেই ব্যথার মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। ঠিক একই ভাবে, কেউ যদি নিজে মানসিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে আগে গিয়ে থাকেন, তবে তিনি অন্য দিকের মানুষটির ঠিক কোন জায়গায় কষ্ট হচ্ছে তা ধরতে পারেন।

একই সুরে কথা বলেন মনোবিদ অনুত্তমাও। তিনি মনে করিয়ে দেন, বিভিন্ন ‘সেল্ফ হেল্প গ্রুপ’-এর কথা। যেখানে একই সমস্যায় ভোগা মানুষ নিজেদের যন্ত্রণার কথা ভাগ করে নেন। অনুত্তমা মনে করিয়ে দেন, ‘আমি একা নই, তুমিও আছো এই পারস্পরিকতা’-র কথা। তবে তিনি এ কথাও মনে করিয়ে দেন, এর মানে এই নয় যে, মানসিক সমস্যা থাকা মানেই তাঁকে অন্য এক জন মানসিক সমস্যায় ভোগা মানুষের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। জোর করে কিছু করলে বরং রুদ্ধ হতে পারে স্বাভাবিক জীবনে মিলে মিশে যাওয়ার পথ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE