একে জোগানের চেয়ে চাহিদা বেশি। তার উপর রক্তদান শিবির করার উদ্যোগও কমে গিয়েছে। ফলে রক্তের সঙ্কট লেগেই রয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। সেই সঙ্কট মেটাতে এ বার ব্লাড ব্যাঙ্কের নীচে ম্যারাপ বেঁধে হাসপাতালের ডেপুটি সুপার, চিকিৎসক, নার্স, জুনিয়র চিকিৎসক ও কর্মীরা রক্তদান করলেন বুধবার। চিকিৎসকদের রক্ত দিতে দেখে এগিয়ে এলেন বেশ কয়েকজন উৎসাহীও। সবমিলিয়ে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্ন্ত ৪৩ জন রক্ত দান করেন। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ব্লাড ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুদীপ ধীবর বলেন, “সঙ্কট মেটানোর জন্য আমরা হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স-কর্মীদের কাছে রক্তদান করার আবেদন করেছিলাম। তাঁরা আমাদের অনুরোধ রেখেছেন। পাশাপাশি রক্তদান নিয়ে সাধারণ মানুষকে উৎসাহ দেওয়া গিয়েছে, সচেতনও করা গিয়েছে। এটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি।”
ব্লাড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, এই হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে প্রতিদিন গড়ে ৭০ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ মাসে ২০০০ ইউনিট রক্ত দরকার। সে জায়গায় জুন ও জুলাই মাসে রক্তদান শিবির থেকে পাওয়া গিয়েছে মাত্র ৪৪০ ও ২৮৫ ইউনিট রক্ত। ফলে রক্তের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অবস্থা সামাল দিতে রোগীর আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে এক ইউনিট রক্ত নিয়ে মজুত করে রাখছেন ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা। তার বদলে প্রয়োজনীয় রক্তের প্যাকেট আত্মীয়দের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। ব্লাড ব্যাঙ্কের এক কর্মীর কথায়, “এ ভাবে আর কত দিন! আমাদের পদ্ধতি অনেক রোগীর আত্মীয়ই মানতে চাইছেন না। তখন অশান্তি তৈরি হচ্ছে।” এ দিন ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্তারা রক্তদান শিবিরের উদ্যোক্তাদের অনুরোধ করেন, রক্তদান শিবিরের তারিখ ঠিক করার আগে ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে শিবির করলে ভাল হয়। তাতে রক্তের প্রয়োজন আছে কি না জেনে নিয়ে শিবির করতে পারবেন উদ্যোক্তারা। সুদীপববাবু বলেন, “শীতকালে রক্তের প্রচুর জোগান মেলে। কিন্তু গ্রীষ্মে টানাটানি পড়ে যায়। উদ্যোক্তারা এ ব্যাপারে সচেতন হলে রক্তের হাহাকার দেখা দেবে না।” আর হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা রক্তদান করে বলেন, “এটা আমাদের কর্তব্য। এর ফলে রক্তের সঙ্কট দূর করার পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy