Advertisement
০৫ মে ২০২৪
সাহেবখালি হাসপাতাল

আয়লার পর থেকেই নেই চিকিত্‌সক

হাসপাতাল না সরানোর পাশাপাশি সেখানে চিকিত্‌সক পাঠানোর দাবি জানালেন গ্রামবাসীরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সাহেবখালি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান সুব্রত মৈত্র। সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। সেখানে গ্রামবাসীরা তাঁর কাছে হাসপাতালটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানান।

সুব্রতবাবুর কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন গ্রামের মানুষ। ছবি: নির্মল বসু।

সুব্রতবাবুর কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন গ্রামের মানুষ। ছবি: নির্মল বসু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৪ ০১:৪৮
Share: Save:

হাসপাতাল না সরানোর পাশাপাশি সেখানে চিকিত্‌সক পাঠানোর দাবি জানালেন গ্রামবাসীরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সাহেবখালি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান সুব্রত মৈত্র। সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। সেখানে গ্রামবাসীরা তাঁর কাছে হাসপাতালটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানান। একইসঙ্গে অবিলম্বে সেখানে অন্তত একজন চিকিত্‌সক পাঠানোর দাবিও করেন। সুব্রতবাবু গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করেন এই বলে যে, ফিরে গিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বলবেন যাতে সাহেবখালি হাসপাতাল সরানো না হয়। হাসপাতালে দ্রুত একজন চিকিত্‌সক এবং হাসপাতালে আসার জন্য প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা ভাল ভাবে মেরামত করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ১৯৫৫ সালে সাহেবখালিতে হাসপাতালের উদ্বোধন হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। ১৯৭২ সাল নাগাদ এসেছিলেন প্রখ্যাত চিকিত্‌সক এবং রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী কাশীকান্ত মৈত্র। এর পর বিশ্বব্যাঙ্কের আর্থিক সাহায্যে হাসপাতালের বহির্বিভাগ, অন্তর্বিভাগ, ওটি, চিকিত্‌সক-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার ঘর, রোগীদের শয্যা-সহ আধুনিক করে সাজিয়ে তোলা হয়। কিন্তু আয়লার সময় সেখানে থাকা চিকিত্‌সকরা সেই যে এলাকা ছেড়েছেন, তার পর থেকে হাসপাতালে আর কোনও চিকিত্‌সকের দেখা পাননি এলাকার মানুষ। এ নিয়ে বিক্ষোভও দেখান স্থানীয় মানুষ। এক সময় চিকিত্‌সকের অভাবে হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি একজন ফার্মাটিস্ট মাঝেমধ্যে ওই হাসপাতালে যান।

স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফে নিরাপদ মণ্ডল, মিহিরকান্তি মণ্ডল, পঞ্চায়েত সদস্যা সন্ধ্যা মণ্ডল বলেন, “আয়লার পর থেকে হাসপাতালটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একদল লোক ষড়যন্ত্রমূলক প্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু হাসপাতাল না থাকলে আমরা বাঁচব কী করে? এমনকী এই প্রচারের জেরে স্বাস্থ্য দফতর থেকেও বলা হচ্ছে হাসপাতালটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। সে জন্যই আয়লার পর থেকে এখানে ওষুধপত্র আসে না। চিকিত্‌সক নেই। মাঝে মধ্যে ফার্মাটিস্ট মৃণ্ময় ঘোড়ুই রোগী দেখেন।”

স্থানীয় মানুষের এমন অভিযোগ শুনে সুব্রতবাবু বলেন, “এখানকার মানুষের সঙ্গে আলোচনা না করে হাসপাতাল যাতে অন্যত্র স্থানান্তর করা না হয় সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বলব। সাহেবখালি হাসপাতালে আসার রাস্তার মেরামতি এবং এখানে যাতে অবিলম্বে একজন চিকিত্‌সক আসেন সেই চেষ্টা করা হবে।” সুব্রতবাবুর সামনেই অবশ্য সাহেবখালি হাসপাতালে সপ্তাহে একজন চিকিত্‌সকের ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্তের কথা জানান বসিরহাট জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক পুষ্পেন্দু সেনগুপ্ত।

ফার্মাটিস্ট মৃণ্ময় ঘোড়ুই বলেন, “আমার একার পক্ষে নদী পেরিয়ে ৪-৫টি হাসপাতালের রোগীদের চিকিত্‌সা করাটা অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া আমি তো চিকিত্‌সক নই। কোনও রকম ভুলচুক হলে চাকরিটাও যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE