Advertisement
E-Paper

কোচবিহারে নিউমোনিয়া, দু’দিনে আক্রান্ত ৭০ শিশু

শিশুদের ‘ভাইরাল নিউমোনিয়া’ সংক্রমণের প্রকোপ বাড়ছে কোচবিহারে। গত দু’দিনে ওই রোগ এবং জ্বর, সর্দির মত প্রাথমিক কিছু উপসর্গ নিয়ে অন্তত ৭০ জন শিশুকে কোচবিহার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুধুমাত্র জেলা হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চিকিত্‌সার জন্য আসা দু’শো জন শিশুর শরীরে ‘ভাইরাল নিউমনিয়া’ সংক্রমণের প্রাথমিক উপসর্গের ‘লক্ষণ’ দেখেছেন চিকিত্‌সকরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৩৯
কোচবিহারের এমজেএন হাসপাতালে মাস্ক লাগিয়ে ভাপ দেওয়া হচ্ছে ভাইরাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে। —নিজস্ব চিত্র।

কোচবিহারের এমজেএন হাসপাতালে মাস্ক লাগিয়ে ভাপ দেওয়া হচ্ছে ভাইরাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে। —নিজস্ব চিত্র।

শিশুদের ‘ভাইরাল নিউমোনিয়া’ সংক্রমণের প্রকোপ বাড়ছে কোচবিহারে। গত দু’দিনে ওই রোগ এবং জ্বর, সর্দির মত প্রাথমিক কিছু উপসর্গ নিয়ে অন্তত ৭০ জন শিশুকে কোচবিহার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুধুমাত্র জেলা হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চিকিত্‌সার জন্য আসা দু’শো জন শিশুর শরীরে ‘ভাইরাল নিউমনিয়া’ সংক্রমণের প্রাথমিক উপসর্গের ‘লক্ষণ’ দেখেছেন চিকিত্‌সকরা। কোচবিহার সদরের পাশাপাশি জেলার দিনহাটা, তুফানগঞ্জ ও মাথাভাঙা মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকাতেও দশ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ওই রোগের প্রকোপ ছড়িয়েছে। আক্রান্ত শিশুদের ভিড় সামলাতে ইতিমধ্যে কোচবিহার জেলা হাসপাতালের নতুন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সবরকম ব্যবস্থা নিতে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা বলেন, “আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্যই শিশুদের মধ্যে সর্দি,কাশি,জ্বরের সংক্রমণ বাড়ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষিপ্তভাবে জ্বর,শ্বাসকষ্ট, সর্দি,কাশিতে আক্রান্ত শিশুদের ভিড় বাড়ছিল জেলার বিভিন্ন হাসপাতালের বর্হিবিভাগে। বেশ কয়েকটি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তিও করানো হয়। বুধবার থেকে আচমকা জেলা হাসপাতালে আক্রান্তদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় আরও দুটি ঘরে নতুন করে শিশুদের ওয়ার্ড চালু করা হয়। বৃহস্পতিবারেও এই সমস্ত রোগের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগী ও তাদের অভিভাবকদের ব্যাপক ভিড় ছিল ওই হাসপাতালে। চিকিত্‌সকরা জানিয়েছেন, ‘ভাইরাল নিউমোনিয়ায়’ সর্দি,কাশি,জ্বরের সঙ্গে শিশুদের শ্বাসকষ্ট হতে পারে। দশ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রেই আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবথেকে বেশি থাকে। জেলা হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীনদের মধ্যে দু’মাস থেকে দু’বছর বয়সীদের সংখ্যাই সবথেকে বেশি বলে জানা গেছে। কোচবিহার জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুব্রত হালদার বলেন, “ঋতু বদলের মরসুমে ভাইরাস সংক্রমণের জন্য শিশুদের মধ্যে এই সমস্ত রোগের প্রবণতা বেড়েছে। ইতিমধ্যে ৭০ জন ভর্তি হয়েছে। আক্রান্তদের জন্য দুটি নতুন ওয়ার্ডও চালু করা হয়েছে।” তারপরেও অবশ্য জেলা হাসপাতালের চিকিত্‌সা পরিষেবা নিয়ে উদ্বেগ কমছেনা আক্রান্ত শিশুদের পরিজনদের। ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা জানান, মাত্র তিনজন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ওই তিনটি ওয়ার্ডের শিশুদের দেখভাল করছেন। এ ছাড়াও ডায়েরিয়া ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত শিশুদেরও দেখভাল করতে হচ্ছে তাদের। তার ওপর আক্রান্তদের শিশুদের দিনে গড়ে পাঁচ বার ‘ নেবুলাইজেশন’ করে ওষুধ দেওয়ার দরকার হলেও ওয়ার্ডে বিদ্যুতের পর্যাপ্ত প্লাগ পয়েন্ট না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। অনেক শিশুকেই প্রয়োজনমত ওই সুবিধে দেওয়া যাচ্ছেনা। অথচ বাড়তি চিকিত্‌সকের ব্যবস্থা করা ও পরিকাঠামোর উন্নয়নের ব্যাপারে জেলার স্বাস্থ্য কর্তাদের কোনও হেলদোল নেই। কোচবিহার জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য দাবি করেছেন, “পরিষেবায় কোনও খামতি রাখা হচ্ছেনা।” ‘ভাইরাল নিউমোনিয়া’ সংক্রমণের আশঙ্কা এড়াতে শিশুদের ব্যাপারে কিছু সতর্কতা নেওয়া দরকার বলে মনে করছেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞরা। কোচবিহার জেলা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ শিশু চিকিত্‌সক গৌরপদ নায়েক বলেন, “ভাইরাল নিউমোনিয়ার আশঙ্কা এড়াতে দিনের বেলা চড়া রোদে শিশুদের নিয়ে বাড়ির বাইরে না বেরোন, রাতে ও ভোরের দিকে খুব জোরে পাখা না চালানো, খালি শরীরে না রেখে শিশুদের হাল্কা পোশাক পড়ানো, কোনও রকম ঠান্ডা খাবার না দেওয়ার মত বিষয়গুলি নিয়ে অভিভাবকদের সতর্ক থাকা দরকার।”

pneumonia cooch behar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy