Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

কিট মিলছে কম, সমস্যা রক্তদানে

কিট না মেলায় ব্যাহত হচ্ছে রক্তদান অভিযান, এমনই অভিযোগ উঠেছে জেলা জুড়ে। এমনকী আগাম জানানোর পরেও প্রয়োজনীয় কিট পাঠাতে পারছে না স্বাস্থ্য দফতর। রক্তদাতা সংগঠনগুলির দাবি, ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি আরও আধুনিক করতে হবে। যাতে রক্তের উপাদানগুলি একাধিক জনের দেহে ভাগ করে দেওয়া যায়। এতে রক্তের অপচয় বন্ধ হবে বলেও তাদের দাবি। সম্প্রতি দুর্গাপুরে একটি রক্তদান শিবিরে অন্তত ৬০ বোতল রক্ত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিট না থাকায় ৩০ জনের বেশি রক্ত দিতে পারেননি।

সুব্রত সীট
শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৪ ০১:৪২
Share: Save:

কিট না মেলায় ব্যাহত হচ্ছে রক্তদান অভিযান, এমনই অভিযোগ উঠেছে জেলা জুড়ে। এমনকী আগাম জানানোর পরেও প্রয়োজনীয় কিট পাঠাতে পারছে না স্বাস্থ্য দফতর। রক্তদাতা সংগঠনগুলির দাবি, ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি আরও আধুনিক করতে হবে। যাতে রক্তের উপাদানগুলি একাধিক জনের দেহে ভাগ করে দেওয়া যায়। এতে রক্তের অপচয় বন্ধ হবে বলেও তাদের দাবি।

সম্প্রতি দুর্গাপুরে একটি রক্তদান শিবিরে অন্তত ৬০ বোতল রক্ত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিট না থাকায় ৩০ জনের বেশি রক্ত দিতে পারেননি। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, শুধু দুর্গাপুর নয়, আসানসোল-সহ জেলার অন্যত্রও একই ছবি। কিটের সরবরাহ যে বেশ কম তা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও। ফলে জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে মজুত রক্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিঘ্ন ঘটতে পারে চিকিত্‌সা পরিষেবাতেও।

ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার তরফে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার মিহির নন্দীও বলেন, “দুর্গাপুর, আসানসোল, বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জায়গায় রক্তের কিটের আকাল রয়েছে। ফলে সমস্যায় পড়ছেন রক্তদান শিবিরের আয়োজকেরা। বিষয়টি নজরে রাখা উচিত।” দুর্গাপুর মহকুমা ব্লাড ডোনার্স ফোরামের তরফে কবি ঘোষের অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই কিট না মেলায় রক্ত সংগ্রহে ব্যাঘাত ঘটছে। রক্তের জোগান কমে গেলে বিশেষ কোনও গ্রুপের রক্ত পাওয়া আরও মুশকিল হয়ে যাবে বলে তাঁর দাবি। তিনি জানান, রক্তদাতা সংগঠনগুলি মিলিত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ২০২০ সাল থেকে প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহ করবেন স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতারাই। ফলে কোনও রোগীকেই রক্তদাতা জোগাড় করার ঝঞ্ঝাট পোহাতে হবে না। অক্টোবরে রাজ্যের রক্তদাতা সংগঠনগুলির দু’শো প্রতিনিধি দুর্গাপুরে সম্মেলন করে রক্তদান আন্দোলনের ভবিষ্যত্‌ রূপরেখা নির্দিষ্ট করবেন বলেও তাঁর দাবি। তবে সরকারি সাহায্য ছাড়া এ প্রকল্প রূপায়ন সম্ভব নয়। কবিবাবু বলেন, “অবিলম্বে সব ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের উপাদান পৃথক করার অত্যাধুনিক পদ্ধতি প্রচলন করা জরুরি। সেক্ষেত্রে এক বোতল রক্ত থেকেই প্রয়োজন অনুযায়ী রক্তের উপাদন পাঠানো যাবে একাধিক দেহে। রক্তের অপচয়ও কমবে। তবে এর জন্য সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন।”

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার স্বাস্থ্য ভবন থেকেই জেলায় রক্তের কিট পাঠানো আসানসোলের স্বাস্থ্য জেলার জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক মনিকাঞ্চন সাহা বলেন, “কিটের জোগান মাঝে মাঝে ব্যাহত হয়। কারণ, বাজার থেকে রক্তের ব্যাগ কেনার নিয়ম নেই। সরকারি সরবরাহ ভরসা। তবে আপত্‌তালীন সময়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল নিতে পারে।” রক্তদাতাদের প্রতি তাঁর আবেদন, স্থানীয় হাসপাতালে নিজেদের ঠিকানা ও যোগাযোগের নম্বর জমা দিন। যাতে প্রয়োজনে সরাসরি হাসপাতাল ওই রক্তদাতাকে ডেকে পাঠাতে পারেন। বর্ধমান স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তন্ময় মুখোপাধ্যায় অবশ্য কিটের অভাব মানতে চাননি। তিনি বলেন, “এমন কোনও অভিযোগ আমার কাছে আসেনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

subrata sit blood-kit scarcity problem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE