Advertisement
০৬ মে ২০২৪

গরমে জলকষ্টে ভোগান্তি হাসপাতালে

গরমে হাঁসফাঁস দশা। গাছের ছায়াতেও দাঁড়িয়ে থাকা দায়। গলা শুকিয়ে কাঠ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীর পরিবারের অপেক্ষমাণ পরিজনের কিন্তু তৃষ্ণা মেটানোর উপায় নেই। তাই তাঁদের ছুটতে হচ্ছে বাইরের দোকানে, জলের বোতল কিনে গলা ভেজাতে। গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নয়, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের নিত্যদিনের ছবি এটাইয় যদিও সেখানে রয়েছে বিরাট ওভারহেড ট্যাঙ্ক, সারি দিয়ে টাইলস বসান কল।

জল কিনে খেতে হচ্ছে রোগীদেরও। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে তোলা নিজস্ব চিত্র।

জল কিনে খেতে হচ্ছে রোগীদেরও। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৪৩
Share: Save:

গরমে হাঁসফাঁস দশা। গাছের ছায়াতেও দাঁড়িয়ে থাকা দায়। গলা শুকিয়ে কাঠ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীর পরিবারের অপেক্ষমাণ পরিজনের কিন্তু তৃষ্ণা মেটানোর উপায় নেই। তাই তাঁদের ছুটতে হচ্ছে বাইরের দোকানে, জলের বোতল কিনে গলা ভেজাতে।

গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নয়, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের নিত্যদিনের ছবি এটাইয় যদিও সেখানে রয়েছে বিরাট ওভারহেড ট্যাঙ্ক, সারি দিয়ে টাইলস বসান কল। ওয়ার্ডগুলির আশপাশের দেওয়ালে গোটা ছয় অ্যাকোয়া গার্ড। কিন্তু এত সব আয়োজন দেখে আশ্বস্ত হওয়ার মতো কিছু নেই। কারণ রবিবার তাপমাত্রার পারদ যখন ৩৫ ডিগ্রির মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে তখন তেষ্টায় বুকের ছাতি ফেটে গেলেও হাসপাতাল চত্বরে গলা ভেজানোর মতো জল খুঁজে পাননি রোগীর বাড়ির কেউ। তাঁদের অভিযোগ, কয়েকটি ট্যাপে জল পড়ে না। যেগুলি সচল, সেখানকার জল ঘোলা। আবর্জনায় ভরেছে কল পাড়। এদিকে যে পাম্প দিয়ে ওভারহেড ট্যাঙ্কে জল তোলা হয়, তা জোড়াতালি দিয়ে চলছে। পিএইচই কর্মীদের আশঙ্কা পাম্প অচল হলে হাসপাতাল চত্বরে হাত-পা ধোয়ার জলও মিলবে না।

যে কয়েকটি কলে জল মিলছে, তা রোগীকে খাওয়ানো হলে বিপদ যে বাড়বে তা চিকিসকরা বলছেন। রোগীর বাড়ির লোক জানান, জলের ঘোলা রং দেখে ঘেন্না করে দিনভর খাবার না জুটলেও নিরুপায় হয়ে পয়সা বাঁচিয়ে দিনে তিন চারটে জলের বোতল কিনে সঙ্গে রাখছেন তাঁরা। রোগীরাও কেনা জল ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। কয়েক মাস ধরে এভাবে চলছে জেলা সদর হাসপাতাল। বিভাস রায়, সত্যেন সরকারের মতো বারোপাটিয়া এলাকার বাসিন্দা রোগীর পরিজনের অভিযোগ, কেনা জলের জন্য পয়সা রেখে তবেই তাঁদের হোটেলে খাওয়ার কথা ভাবতে হচ্ছে। রিকশা চালক বিভাস বলেন, “তিন দিন স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি। তৃষ্ণা মেটানোর জল পাচ্ছি না। প্রতিদিন চারটি জলের বোতল কিনতে ৬০ টাকা চলে যাচ্ছে। কোথায় পাব এত টাকা!”

প্রশ্নের উত্তর মেলেনি হাসপাতাল কর্তাদের কাছে। পানীয় জলকষ্টের কথা স্বীকার করে হাসপাতাল সুপার সুশান্ত রায় বলেন, “পরিস্রুত পানীয় জলের সমস্যা বেড়েছে অ্যাকোয়া গার্ডগুলি বিকল হওয়ায়। ওগুলি মেরামত করে লাভ হবে না। বাইরে যে কল আছে তাতে এত আয়রন যে তা মুখে দেওয়া যায় না।” অসহ্য গরমে জলের সমস্যা মেটাতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? সুপার জানান, হাসপাতালে ছটি পয়েন্ট থেকে পরিস্রুত ঠান্ডা জল সরবরাহের পরিকল্পনা হয়েছে। তাঁর কথায়, “সব তৈরি। ভোটের ডামাডোলে দেরি হল। কয়েক দিনের কাজ শুরু হবে।”

আর জোড়াতালি দিয়ে চলা পাম্প হাউসের কী হবে? হাসপাতাল চত্বরে জল সরবরাহের দায়িত্বে থাকা সিনিয়ার ওয়ার্কম্যান সুভাষ অধিকারী এ দিন এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “পাম্প হাউসের আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা হয়েছে। মালপত্রও চলে এসেছে। কিছু দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jalpaiguri water problem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE