অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভাবে স্বাস্থ্যবিধান কর্মসূচিতে শৌচালয় তৈরির কাজ কোচবিহার জেলার বেশ কিছু এলাকায় ধীর গতিতে চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বেশ কিছু পঞ্চায়েত এলাকায় কাজ বন্ধ রয়েছে। মাথাভাঙা থেকে কোচবিহার বহু জায়গায় ওই শৌচালয় তৈরির কাজ দ্রুত করার জন্য দাবি উঠেছে। সিপিএম তো বটেই তৃণমূলের দখলে থাকা বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। কোচবিহার জেলা পরিষদ সভাধিপতি পুস্পিতা ডাকুয়া, জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ শুচিস্মিতা দেবশর্মা সমাধানের আশ্বাস দেন।
তাঁদের অভিযোগ, বাম আমলের ওই প্রকল্পে কাজে অনেক অনিয়ম হয়েছে। যার জেরেই বর্তমানে বেশ কিছু এলাকায় কাজে সমস্যা হয়েছে। সভাধিপতি বলেন, “বেশির ভাগ জায়গাতেই ওই প্রকল্পের কাজ চলছে। কয়েকটি এলাকায় সমস্যা রয়েছে। আমরা দ্রুত সমাধান করব।” শুচিস্মিতা বলেন, “অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভাব রয়েছে। কয়েকটি কাজে গতি আসেনি। তা নিয়ে আমরা আলোচনা শুরু করেছি।”
জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, কোচবিহার ১ নম্বর ব্লক, মাথাভাঙা ১ ও ২ নম্বর ব্লক থেকে শুরু করে দিনহাটা, শীতলখুচির মত বহু এলাকায় প্রকল্পের কাজ ধীর গতিতে চলছে বলে অভিযোগ। কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের বিডিও স্বপন মহাপাত্র বলেন, “বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দিয়ে ওই কাজ করানো হচ্ছে। ব্লকের জন্য আরও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রয়োজন। তা নিয়ে এর মধ্যেই মিটিং হবে।” মাথাভাঙা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তালেব আজাদ বলেন, “ব্লকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কাজ করছে। তাদের পক্ষে সব করা সম্ভব নয়, তাই গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে ধরে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে কাজ দেওয়া হবে। সে প্রক্রিয়া অনেকটা এগিয়েছে।”জেলা পরিষদের তথ্য অনুসারে, এখনও প্রায় দেড় লক্ষ পরিবারের শৌচালয় তৈরি হয়নি। ওই পরিবারগুলির মানুষগুলি খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করছেন। ২০০৩ নির্মল ভারত অভিযান শুরু করার পর দশ বছর কেটে গেলেও কোচবিহার জেলার এমনই অবস্থা বলে অভিযোগ। রাজ্যে নতুন সরকার এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূলের জয়ের পর প্রকল্পে গতি আসবে বলে সাধারণ বাসিন্দারা আশা করেছিলেন। আদতে তা হয়নি বলে অভিযোগ। শাসক দল অবশ্য, বিগত বাম সরকারকেই দায়ী করেছে। সে সময় শৌচালয় তৈরি নিয়ে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ায় কাজ হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছে। বামেদের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, নির্মল ভারত অভিযানে কোথাও কোনও খামতি ছিল না।
জেলা পরিষদে সিপিএমের প্রাক্তন সভাধিপতি দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “আমাদের সময় কর্মী সংখ্যা কম ছিল। ব্লক ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কাজ করে। পরে আমরা পঞ্চায়েত ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নিয়োগের কথাও বলি। সাধ্যমত কাজ হয়। আর দুর্নীতি-সহ শাসক দলের অভিযোগ, উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কাজ করতে না পেরে ওঁরা ওসব অভিযোগ করছেন।” প্রশাসনিক সূত্রে খবর জেলায় বিপিএল তালিকা ভূক্ত ৩ লক্ষ ৩৫২৩৬ জনের বাড়িতে ২০১৩ সালের মধ্যে শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
এর মধ্যে শৌচালয় হয়েছে ২ লক্ষ ৭১০৬৮ জনের বাড়িতে। এপিএল তালিকাভূক্ত ২ লক্ষ ৫৪ হাজার ৪২২ জনের বাড়িতে শৌচাগার তৈরির লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও কাজ হয় ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৭০৩ টি বাড়িতে। বিপিএল এবং এপিএল মিলিয়ে ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৮৮৭ টি বাড়িতে শৌচাগার এখনও তৈরি হয়নি। এই প্রসঙ্গে সরকার বরাদ্দ করে দশ হাজার টাকা। উপভোক্তাকে ৯০০ টাকা দিতে হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy