Advertisement
০৫ মে ২০২৪
মেডিক্যালে পরিদর্শনে স্বাস্থ্যকর্তা

প্রসূতি মৃত্যুর হার বাড়ায় উদ্বেগ

গত দু’মাসে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর হার বাড়ায় উদ্বিগ্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সোমবার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে যান স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য অধিকর্তা। —নিজস্ব চিত্র।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য অধিকর্তা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:১২
Share: Save:

গত দু’মাসে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর হার বাড়ায় উদ্বিগ্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সোমবার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে যান স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার, অধ্যক্ষ, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে ঘণ্টা দুয়েক বৈঠক করেন তিনি।

প্রসূতির মৃত্যু ঠেকাতে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ৪ শয্যার হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। লেবার ওয়ার্ড বড় করে সাজিয়ে তোলার বিষয়টিও ঠিক হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে প্রসূতি বিভাগে বর্তমানে ৮০টির মতো শয্যা রয়েছে। বছরে সাড়ে নয় হাজার প্রসূতি চিকিৎসা করান। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, ‘‘অতিমাত্রায় মৃত্যুর কারণ কী, কী ভাবে তা বন্ধ করা যেতে পারে তা দেখে হচ্ছে। ব্লক বা অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে রেফার করতে বিলম্ব করার মতো অভিযোগ রয়েছে।’’

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, সাধারণত মাসে গড়ে ৪ জন প্রসূতি এই হাসপাতালে মারা যান। কিন্তু অগস্ট মাসে মারা গিয়েছেন ৮ জন। এবং সেপ্টেম্বর মাসে মৃত্যু হয়েছে ১০ জন প্রসূতির। এই পরিস্থিতি রুখতে কী করা যেতে পারে তা নিয়ে এ দিন আলোচনা হয়। পরে স্বাস্থ্য অধিকর্তা আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হন। ওই হাসপাতালেও প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে এ দিন আলোচনায় প্রসূতি মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ার পিছনে কিছু ক্ষেত্রে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সাব সেন্টার, ব্লক হাসপাতাল বা জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবার মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন রয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের প্রসূতি বিভাগে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকার বিষয়টি। কোনও প্রসূতিকে প্রাথমিক, ব্লক বা জেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে কী পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করা হচ্ছে তার নজরদারির জন্য বলা হয়েছে। রেফার করার ক্ষেত্রে কোন চিকিৎসক কী কারণে রেফার করলেন তা নির্দিষ্ট করে জানাতে হবে বলে জানিয়েদেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। ব্লক বা জেলা হাসপাতাল থেকে যখন রোগীদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হচ্ছে তখন তাদের একাংশের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ চিকিৎসকদের একাংশের।উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় বলেন, ‘‘খিঁচুনি প্রবণতা, রক্তাল্পতা জনিত কারণে প্রসূতির মৃত্যু বেশি ঘটে থাকে। চা বাগান এলাকায় অনেক প্রসূতি রক্তাল্পতায় ভোগেন। প্রসূতি মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ার পিছনে এগুলিও বড় কারণ।’’

দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ব্লক হাসপাতাল, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির চিকিৎসা ব্যবস্থার দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE