সোয়াইন ফ্লু-র সংক্রমণ রুখতে আগরতলা বিমানবন্দরে নজরদারি শিবির। শনিবার —নিজস্ব চিত্র।
সোয়াইন ফ্লু নিয়ে প্রচারে কেন্দ্র যতটা উদ্যোগী হয়েছে, ততটাই ঢিলেঢালা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ও কলকাতা পুরসভা।
পত্রপত্রিকায়, টিভি-রেডিওতে সোয়াইন ফ্লুয়ের উপসর্গ, আগাম সতর্কতা, হলে কী করা উচিত সব কিছু নিয়েই গত কয়েক দিন ধরে জোরদার প্রচার শুরু করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক। অথচ রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তা বা পুরকর্তাদের তরফে কোনও প্রচারাভিযান নেই। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। শনিবার মারা গিয়েছে বিসি রায় হাসপাতালে ভর্তি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার দু’বছরের এক শিশু। নতুন আক্রান্তের সংখ্যা তিন। রাজ্যে আক্রান্তের মোট সংখ্যা হল ১১৫।
প্রচারে এই উদাসীনতা কেন? স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে বলেন, “উদাসীনতার প্রশ্নই নেই। কেন্দ্র খুব ভাল প্রচার করছে। আমরাও একটু অন্য ধাঁচে আগামী সপ্তাহ থেকে প্রচার শুরু করব।” শুরু করতে এত দেরি কেন, তার জবাব অবশ্য মেলেনি। বার বার টেলিফোন করেও উত্তর মেলেনি কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। প্রচারের বদলে পুরসভা এ দিনও ব্যস্ত থেকেছে শুয়োর ধরার কাজে। যদিও আরজিকর, এসএসকেএম, শম্ভুনাথের মতো শহরের বহু হাসপাতালের আশপাশে অভিযান চালিয়ে একটিও শুয়োর খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পুরকর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কয়েক দিন ধরেই শুয়োর ধরতে বেরোচ্ছেন পুরকর্মীরা। শুয়োর ধরা পড়েনি।
কেন্দ্র কিন্তু তাদের প্রচারে ত্রুটি রাখছে না। তাদের প্রচারে বলা হচ্ছে, জ্বর ও কাশি, গলা ব্যথা, নাক দিয়ে জল পড়া বা বন্ধ নাক, শ্বাস নিতে কষ্ট, গা-মাথা ব্যথা, ক্লান্তি, কাঁপুনি, ডায়রিয়া, বমি, থুতুতে রক্তের মতো লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সংক্রমণ এড়াতে মুখ ঢেকে হাঁচা বা কাশা, বার বার সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া, ভিড় এড়িয়ে চলা, প্রচুর জল ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ও ভাল ভাবে ঘুমোতে হবে।
কলকাতার বিসি রায় হাসপাতালে এখন ৫ জন সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত শিশু ভর্তি রয়েছে। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে রয়েছেন ৯ জন। তাঁদের মধ্যে ৭৪ বছরের এক বৃদ্ধের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এত দিন সোয়াইন ফ্লু-র ওষুধ ট্যামি ফ্লু শুধু স্বাস্থ্য দফতর থেকেই পাওয়া যেত। শনিবার থেকে কলকাতার ৭৭টি দোকানে এই ওষুধ বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে প্রেসক্রিপশন দেখে, রোগীর নাম-ঠিকানা নথিভুক্ত করে, ড্রাগ কন্ট্রোলকে জানিয়ে ওই ওষুধ বিক্রি করতে হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
সোনমের সোয়াইন ফ্লু
শ্যুটিং চলাকালীন সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্ত হলেন বলিউড অভিনেত্রী সোনম কপূর। গুজরাতে রাজকোটের কাছে গন্ডাল এলাকায় একটি ছবির শু্যটিংয়ের সময় জ্বর ও গলা ব্যথা হয় সোনমের। শনিবার রক্তপরীক্ষার রিপোর্ট পেয়ে চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেছেন, সোয়াইন ফ্লু-ই হয়েছে তাঁর। রাজকোটের জেলা কালেক্টর মণীশ চন্দ্র জানিয়েছেন, একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন সোনম। তিনি বলেন, “মুম্বইয়ে সোনমের শরীরচর্চার প্রশিক্ষকেরও সোয়াইন ফ্লু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, তাঁর থেকেই সোনমের সংক্রমণ হয়েছে।” কয়েক দিন ধরেই শরীর খারাপ ছিল সোনমের। শুক্রবার জ্বর বাড়ে। সঙ্গে গলায় ব্যথা। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্য দিকে, আরও ৩৬ জনের মৃত্যুর পর সোয়াইন ফ্লুয়ে সারা দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১০৪১। গুজরাত ও রাজস্থানেই মারা গিয়েছেন ২৫৬ ও ২৫৭ জন। আক্রান্ত প্রায় কুড়ি হাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy