নলহাটির পাহাড়ি গ্রামে চলছে রক্তের নমুনা সংগ্রহ।
পুরসভার ১২ ও ১৫ ওয়ার্ডের পাহাড়ি, নতুনগ্রাম, শিউড়া এলাকায় জ্বরে আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল বীরভূম জেলা স্বাস্থ্য দফতর। রক্তের নমুনা সংগ্রহের জন্য নলহাটি ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বিশেষ দল গঠন করে ওই তিনটি এলাকায় বুধবার পাঠানো হয়েছে।
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কালোবরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এলাকায় এখনও যাঁরা জ্বরে আক্রান্ত বা একই বাড়িতে ৫-৬ জন এবং তার বেশি আক্রান্ত অথবা কেউ পাঁচ দিন জ্বরে ভুগছেন বা গাঁটে গাঁটে ব্যাথা আছে এমন ২২ জনের কাছ থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।” বিএমওএইচ জানান, এ দিন সকালে পাহাড়ি, নতুনগ্রাম এবং শিউড়া এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে জ্বরে আক্রান্ত পরিবার থেকে ১১৯ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। নলহাটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ম্যালেরিয়ার পরীক্ষা করা হবে। জ্বরে আক্রান্ত পরিবারগুলিকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে।
অধিকাংশ বাড়িতে এরকম ভাবে জমে রয়েছে জল।—নিজস্ব চিত্র।
অন্য দিকে, এ দিন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের ২০ জনের একটি দল ওই তিন এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে জ্বরে আক্রান্ত পরিবারের তালিকা সংগ্রহ করে। ওই তালিকা তারা পুরসভায় এবং ব্লক হাসপাতালে জমা দেবে। তালিকাটি এখনও পর্যন্ত এলাকায় জ্বরে আক্রান্ত কতজন, নলহাটি ১ ব্লক হাসপাতালে ভর্তি কতজন, রামপুরহাট জেলা হাসপাতাল বা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে কতজন ভর্তি আছে তা স্বাস্থ্যকর্মীরা পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তৈরি করেছেন। নলহাটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আরও তিন জন জ্বরে আক্রান্ত রোগী নলহাটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হয়েছেন। এই নিয়ে বুধবার সকাল পর্যন্ত ব্লক হাসপাতালে তেরো জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মাঝবয়সী মহিলাদের সংখ্যাই বেশি। মঙ্গলবার দুপুরে রামপুরহাট জেলা হাসপাতাল থেকে নতুনগ্রামের একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আবার পাহাড়ি গ্রামের দু’জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করাও হয়।
এ দিকে, বুধবারও পুরসভা থেকে এলাকায় এলাকায় ব্লিচিং ছড়ানো ও মশা মারার জন্য কীটনাশক স্প্রে করা হয়। তবে এ দিনও এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের চিত্র। এলাকার নিকাশি নালাগুলি এখনও জল কাদায় পরিপূর্ণ। জায়গায় জায়গায় স্তূপীকৃত জঞ্জাল। বাড়ির পাশে রয়েছে জমা জল। নোংরা পুকুরের জল মানুষ ব্যবহার করছেন। পুরপ্রধান রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ অবশ্য দাবি করেন, “পুরসভা এলাকায় অল্পবিস্তর সব জায়গা থেকেই জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আছে। চিকিত্সকেরা জানাচ্ছেন, এই সময় ভাইরাল ফিভার দেখা যায়। তবে এ কথা ঠিক এক জায়গা থেকে এত জন জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা জানার পর থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং পুরসভা এ ব্যাপারে সতর্কও আছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy