Advertisement
E-Paper

বহির্বিভাগের টিকিট পেতেই নাকাল রোগীরা

জ্বর হলেই হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রচার চালাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। অথচ হাসপাতালে পৌঁছেই রোগীদের দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ। শুধুমাত্র বহির্বিভাগের টিকিট সংগ্রহ করতেই ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় লেগে যাচ্ছে শিলিগুড়িতে। জলপাইগুড়ি হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিকে সকালে গিয়ে ওষুধ নিতে বিকেল গড়িয়ে যাচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৪ ০২:৩৬
জ্বরে আক্রান্তদের লম্বা লাইন জলপাইগুড়ির হাসপাতালে। ছবি তুলেছেন সন্দীপ পাল।

জ্বরে আক্রান্তদের লম্বা লাইন জলপাইগুড়ির হাসপাতালে। ছবি তুলেছেন সন্দীপ পাল।

জ্বর হলেই হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রচার চালাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। অথচ হাসপাতালে পৌঁছেই রোগীদের দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ। শুধুমাত্র বহির্বিভাগের টিকিট সংগ্রহ করতেই ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় লেগে যাচ্ছে শিলিগুড়িতে। জলপাইগুড়ি হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিকে সকালে গিয়ে ওষুধ নিতে বিকেল গড়িয়ে যাচ্ছে।

শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ দেখা গেল, টিকিট ঘরের সামনে থেকে সর্পিল লাইন হাসপাতালের মূল গেট পার হয়ে রাস্তায় পৌঁছে গিয়েছে। চড়া রোদে দাঁড়িয়ে থেকে জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ। চিকিৎসককে না দেখিয়েই অনেকে ফিরে যাচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে। এনসেফ্যালাইটিসের সংক্রমণ চলতে থাকায় জ্বর নিয়ে আসা রোগীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায়, গত মাসের মাঝামাঝি থেকেই শিলিগুড়ি হাসপাতালের বহির্বিভাগে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। সপ্তাহ দু’য়েক ধরে রোগীদের ভিড় অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই জানিয়েছেন। প্রতিদিনই শতাধিক জ্বরের রোগী হাসপাতালে আসেন, এক দিন সেই সংখ্যা চারশোর কাছাকাছি পৌঁছে যায় বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতে কেন জ্বরের রোগীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, সে প্রশ্নও উঠেছে।

শিলিগুড়ি হাসপাতালের একটি জানলা থেকেই পৃথক ভাবে নারী এবং পুরুষ রোগীদের টিকিট দেওয়া হয়। প্রতিদিন গড়ে হাসপাতালে হাজার খানেক রোগী আসে বলে কর্তৃপক্ষ জানান। এনসেফ্যালাইটিসের সংক্রমণ শুরু হওয়ায়, বহির্বিভাগে আসা রোগী সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এ দিন জ্বরে আক্রান্ত ৫ বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে এক হাতে ছাতা ধরে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মালতি বর্মন। তাঁর কথায়, “আরও দেরি হলে, ফিরে যেতে বাধ্য হব।” শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল রোগীর চাপ বাড়ার কথা জানিয়ে বলেন, “আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় ক্রমাগত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বর্হিবিভাগে টিকিট কাউন্টারের সংখ্যা বাড়ানো যায় কিনা বিবেচনা করে দেখছি।”

আক্রান্তদের লাইন শিলিগুড়ির হাসপাতালে। ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।

জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে মেয়েকে নিয়ে এসে ছিলেন বামনপাড়ার সুপ্রিয়া সিংহ। তাঁর সামনে অন্তত সাতশো মহিলা দাঁড়িয়ে। তিন বছরের অসুস্থ মেয়ে স্বস্তিকাকে ফার্মেসির বারান্দায় বাবার কোলে শুইয়ে, সুপ্রিয়াদেবী অভিযোগ করলেন, “সকাল দশটায় এসেছি। মনে হচ্ছে ওষুধ পেতে বিকেল হয়ে যাবে।” সকাল সাড়ে নটায় লাইনে দাঁড়িয়ে বেলা দু’টোর সময় ফার্মেসির কাউন্টারের সামনে পৌঁছতে পারেননি মোহিতনগরের বাসিন্দা শিখা দেবনাথ। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে বারপাটিয়ার বাসিন্দা শেফালি দাস অসুস্থ হন।

অর্ন্তবিভাগেরও একই অবস্থা বলে অভিযোগ। শয্যা না পেয়ে হাসপাতালের করিডরে মেঝেতেও জ্বরের রোগীদের শুইয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ৬৬০টি শয্যা রয়েছে প্রতিদিন গড়ে ২৫ জন রোগী জ্বর নিয়ে ভর্তি হচ্ছে। শুক্রবার ৮০ জন জ্বরে আক্রান্ত রোগী ছিল। শয্যা ছাড়াও ওয়ার্ডের মেঝে জুড়ে রোগীর ভিড়। সেখানে জায়গা না মেলায় ওয়ার্ডের করিডরে এদিন জায়গা করে নেন রংধামালি এলাকার রানা দাস। একই দশা হয়েছে ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগান এলাকার মুকুল মুণ্ডার। রোগীদের হয়রানি দূর করতে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? জলপাইগুড়ি হাসপাতালের সুপার সুশান্ত রায় বলেন, “এ বিষয়ে কোনও রকম মন্তব্য করব না।”

encephalitis siliguri jalpaiguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy