Advertisement
০২ মে ২০২৪

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শুয়োর কেনার উদ্যোগ

উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই জাঁকিয়ে বসেছে এনসেফ্যালাইটিস। বহু প্রাণহানি ঘটেছে। দক্ষিণবঙ্গে এখনও পর্যন্ত তেমন কিছু না ঘটলেও আগাম সতর্কতা জরুরি বলে মনে করছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই প্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

এই দৃশ্য হামেশাই দেখা যায় বসিরহাটে। নির্মল বসুর তোলা ছবি।

এই দৃশ্য হামেশাই দেখা যায় বসিরহাটে। নির্মল বসুর তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবরা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৪ ০১:৪০
Share: Save:

উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই জাঁকিয়ে বসেছে এনসেফ্যালাইটিস। বহু প্রাণহানি ঘটেছে। দক্ষিণবঙ্গে এখনও পর্যন্ত তেমন কিছু না ঘটলেও আগাম সতর্কতা জরুরি বলে মনে করছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই প্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয়কুমার আচার্য জানান, সোমবার এ নিয়ে বিশেষ বৈঠক হয়েছে। ব্লকে ব্লকে প্রচার চালানো হবে। মশারির ব্যবহার, পরিস্রুত পানীয় জল নিয়েও সচেতনতামূলক প্রচার চলবে। তিনি আরও জানান, জেলার সমস্ত হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কেউ জ্বর নিয়ে ভর্তি হলেই যেন তা সঙ্গে সঙ্গে জেলায় জানানো হয়। হাসপাতাল চত্বর সাফসুতরো রাখতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছেন বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী তথা হাবরার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও। জেলা জুড়ে শুয়োর কিনে নিতে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান তিনি।

হাবরা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল তারক দাস মঙ্গলবার লোকলস্কর নিয়ে বেরিয়েছিলেন এলাকায়। সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি রেললাইনের ধারে, যে সব জায়গায় শুয়োর ঘুরে বেড়ায়, সেখানে ব্লিচিং পাউডার, ডিডিটি ছড়ানো হয়। শুয়োরের পিছু ধাওয়া করতে গিয়ে তারই গুঁতো খেতে হয়েছে তারকবাবুকে। এলাকা নিয়মিত সাফ-সুতরো হয় না বলে স্থানীয় কিছু মানুষ তারকবাবুর কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি পরে জানান, হাবরা স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধারে দুই মহিলা শুয়োর প্রতিপালন করেন। তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, হয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভাবে ব্যবসা করতে। না হলে শুয়োর বিক্রি করে দিতে হবে। এ জন্য সাত দিনের সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

জ্যোতিপ্রিয়বাবু আবার জানান, মুখ্যমন্ত্রী রোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন। শুয়োর হটানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পুরসভার তরফে এ নিয়ে প্রচার শুরু হবে। বলা হবে, শুয়োর থেকে কী ভাবে মারণ রোগ ছড়ায়। এতে প্রতিপালক পরিবারেও বিপদ নেমে আসতে পারে। হাবরার পুরপ্রধান সুবিন ঘোষকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ৫০ হাজার টাকার একটি প্রাথমিক তহবিল তৈরি করতে। ওই টাকায় এলাকা থেকে শুয়োর কিনে নেওয়া হবে। সেই শুয়োর বিক্রি করে দেওয়া হবে। দু’তিন দিনের মধ্যেই এই কাজ শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।

কিন্তু জেলার অন্য প্রান্তের জন্য কী ভাবছেন তাঁরা?

জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানান, তৃণমূল পরিচালিত জেলার পুরসভা, পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতগুলির সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক ডাকা হয়েছে। এনকেফ্যালাইটিস নিয়ে সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নিয়ে সেখানে আলোচনা হবে। পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে সেখানেই। শুয়োর কেনা নিয়েও আলোচনা হবে। কিন্তু বিরোধীদের হাতে যে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা পুরসভা আছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য জেলাশাসককে বলা হয়েছে।

এ দিকে, রোগ নিয়ে সতর্কতার মাঝেই তিন দিনের জ্বরে ভুগে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বনগাঁয়। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল সূত্রের খবর, মৃতের নাম সঞ্জয় বাগ (২৭)। বাড়ি জয়পুর মাঠপাড়ায়। মঙ্গলবার হাসপাতালে আনার পথেই মারা যান ওই যুবক। বিষয়টিকে লঘু করে দেখছে না স্বাস্থ্য দফতর। সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, “মৃত্যুর কারণ কী, তা জানতে ওই ব্যক্তির রক্ত ও শরীরের অন্যান্য নমুনা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়েছে।” কিন্তু এ ক্ষেত্রে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে নমুনা না পাঠিয়ে কেন ফরেন্সিকে পাঠানো হল? হাসপাতালের ব্যাখ্যা, যেহেতু হাসপাতালে আনার পথে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের, সে ক্ষেত্রে এটিকে অস্বাভাবিক মৃত্যু বলেই ধরা হবে। তদন্ত করবে পুলিশ। সে জন্যই নমুনা পাঠানো হয়েছে ফরেন্সিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE