Advertisement
E-Paper

হাওড়ার বাউড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল যেন ‘নিধিরাম সর্দার’

বিশেষজ্ঞ চিকিত্‌সক তো নেই-ই, সাধারণ চিকিত্‌সকের সংখ্যাও কম। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও পরিকাঠামোর অভাবে অস্ত্রোপচার বন্ধ। চিকিত্‌সকের অভাবে হাসপাতাল সুপারকেও প্রশাসনিক কাজকর্ম দেখে বহির্বিভাগে রোগী দেখতে হয়। চিকিত্‌সক ছাড়াও হাসপাতালে অন্যান্য কর্মীর অভাব রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে হাওড়ার বাউড়িয়া ফোর্ট গ্লস্টার স্টেট জেনারেল হাসপাতালের এমনই দশা।

মনিরুল ইসলাম

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০২:০০

বিশেষজ্ঞ চিকিত্‌সক তো নেই-ই, সাধারণ চিকিত্‌সকের সংখ্যাও কম। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও পরিকাঠামোর অভাবে অস্ত্রোপচার বন্ধ। চিকিত্‌সকের অভাবে হাসপাতাল সুপারকেও প্রশাসনিক কাজকর্ম দেখে বহির্বিভাগে রোগী দেখতে হয়। চিকিত্‌সক ছাড়াও হাসপাতালে অন্যান্য কর্মীর অভাব রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে হাওড়ার বাউড়িয়া ফোর্ট গ্লস্টার স্টেট জেনারেল হাসপাতালের এমনই দশা।

রোগীদের অভিযোগ, নামেই স্টেট জেনারেল হাসপাতাল হলেও বতমানে যা অবস্থা তাতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চেয়েও বেহাল। অথচ এই হাসপাতালে রোগীর চাপ যথেষ্ট। কিন্তু চিকিত্‌সকের অভাবের জন্য রোগীদের ছুটতে হচ্ছে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসাপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিকাঠামোর উন্নতি হলে রোগীদের ভালভাবে চিকিত্‌সা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের আর উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসাপাতালে ছুটতে হবে না। যদিও তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালের নানা সমস্যা নিয়ে তাঁরা বার বার প্রশাসনের কাছে দরবার করলেও কোনও লাভ হয়নি। বিভিন্ন সময়ে নেতা-নেত্রীরা এসে নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আর কাজে পরিণত হয়নি।

বাউড়িয়া, চেঙ্গাইল, নলপুর-সহ উলুবেড়িয়া মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ চিকিত্‌সার জন্য এই হাসপাতালের উপরেই বেশি নিভর্রশীল। আশির দশকের শেষ দিকে তদানীন্তন বাম বিধায়ক রাজকুমার মণ্ডলের উদ্যোগে তৈরি হয় এই হাসপাতাল। পরে ১৯৯৮ সালে হাসপাতালটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নীত হয়। বর্তমানে হাসপাতালে ইনডোর ও আউটডোর বিভাগে চিকিত্‌সা পরিষেবা চালু রয়েছে। হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৫০। গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ জন রোগী রোজ ভর্তি হন। বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় তিনশো রোগী আসেন। রোগীর এমন চাপ থাকলেও উপযুক্ত চিকিত্‌সা পরিষেবা নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই রোগীদের।

হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, “বেহাল পরিকাঠামোর মধ্যেও চিকিত্‌সক থেকে হাসপাতালের কর্মীরা যতটা সম্ভব রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সমস্যার কথা স্বাস্থ্য দফতরকেও জানানো হয়েছে।” স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের কারামন্ত্রী হায়দার আজিজ সফি বলেন, “হাসপাতালের সমস্যার ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছি। আশা করছি শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেন, “বাউড়িয়া হাসপাতালের যে পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে তা জানি। স্বাস্থ্য দফতরকে এ ব্যাপারে জানিয়েওছি। ওই হাসপাতালে শীঘ্রই চিকিত্‌সক ও অন্যন্য প্রয়োজনীয় কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বতর্মানে সুপার-সহ চারজন চিকিত্‌সক রয়েছেন। কিন্তু প্রয়োজন রয়েছে সাত জন চিকিত্‌সকের। নেই কোনও শিশু বিশেষজ্ঞ। এ ছাড়া প্রসূতি বিভাগ, ইএনটি, অস্থি, চর্ম বিভাগেও বিশেষজ্ঞ চিকিত্‌সকের অভাব রয়েছে। ফলে ওই সব বিভাগ বন্ধ রাখা রয়েছে। চিকিত্‌সক ছাড়া অন্য বিভাগেও কর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনেকর তুলনায় খুবই কম। ১৬ জন নার্স থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ৮ জন। ১২ জন চতুর্থশ্রেণির কর্মীর জায়গায় আছেন মাত্র সাত জন। ফার্মাটিস্ট আছেন একজন। দরকার আরও একজনের। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও চিকিত্‌সক ও টেকনিশিয়ানের অভাবে তা চালু হয়নি। কর্মীর অভাবে চালু করা যায়নি ব্লাডব্যাঙ্কও। এত সব অব্যবস্থার মধ্যেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যতটা সম্ভব রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু যে ভাবে দিন দিন রোগীর চাপ বাড়ছে তাতে সেই পরিষেবাও আর কতটুকু দেওয়া যাবে তা নিয়ে সংশয়ে তাঁরা।-সুব্রত জানা।

howrah bauria state general hospital manirul islam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy