Advertisement
E-Paper

হুগলিতে প্রথম ডায়ালিসিস বিভাগ চালু হচ্ছে ইমামবাড়া হাসপাতালে

দীর্ঘ অপেক্ষার পরে চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে চালু হতে চলেছে ডায়ালিসিস বিভাগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই ওই বিভাগে পুরোদমে কাজ শুরু হয়ে যাবে। হুগলি জেলায় এই প্রথম কোনও সরকারি হাসপাতালে ডায়ালিসিস বিভাগ চালু হল। এর ফলে তুলনামূলক কম খরচে চিকিৎসা পাবেন বলে আশা জেলার মানুষের।

তাপস ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৪ ০১:০৯
চুঁচুড়া সদর ইমামবাড়া হাসপাতালের নতুন ডায়ালিসিস বিভাগ।—নিজস্ব চিত্র।

চুঁচুড়া সদর ইমামবাড়া হাসপাতালের নতুন ডায়ালিসিস বিভাগ।—নিজস্ব চিত্র।

দীর্ঘ অপেক্ষার পরে চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে চালু হতে চলেছে ডায়ালিসিস বিভাগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই ওই বিভাগে পুরোদমে কাজ শুরু হয়ে যাবে। হুগলি জেলায় এই প্রথম কোনও সরকারি হাসপাতালে ডায়ালিসিস বিভাগ চালু হল। এর ফলে তুলনামূলক কম খরচে চিকিৎসা পাবেন বলে আশা জেলার মানুষের।

চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালটিতে হুগলির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন জটিল, দুরারোগ্য রোগ নিয়ে আসেন রোগীরা। কিন্তু কিডনির কোনও রোগের ক্ষেত্রে ডায়লিসিসের প্রয়োজন পড়লে এত দিন রোগীকে কলকাতার সরকারি হাসপাতালে ‘রেফার’ করে দিতে বাধ্য হতেন চিকিৎসকেরা। অনেক ক্ষেত্রেই পথে রোগীর মৃত্যু হত। নতুন এই বিভাগ চালু হলে সেই সমস্যা মিটবে বলেই আশা চিকিৎসক ও রোগীদের। বেসরকারি হাসপাতালে যেখানে ডায়ালিসিস করতে খরচ পড়ে ছয় থেকে সাত হাজার টাকা, সেখানে এখানে চিকিৎসা মিলবে ৭৮০ টাকায়।

ধনেখালির গুড়াপ ভাসতারার বাসিন্দা অবনী দাস দীর্ঘ দিন কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। তিনি বলেন, “চুঁচুড়া হাসপাতালের ডাক্তারই আমার চিকিৎসা করেন। কিন্তু ডায়ালিসিসের জন্য গাড়ি ভাড়া করে মাসে অন্তত দু’দিন কলকাতায় যেতে হয়। তাতে সাধ্যের বাইরে গিয়ে খরচ করতে হয়। যত দিন পারছি, খরচ করে এই চিকিৎসা করাচ্ছি। যে দিন পারব না, সে দিন বিনা চিকিৎসায় মরে যেতে হবে।” পেশায় দিন মজুর অবনীবাবু জানান, গুড়াপ থেকে কলকাতায় যাতায়াতের জন্য তাঁর খরচ পড়ে বারোশো টাকা। বেসরকারি কেন্দ্রে সাড়ে ছ’হাজার টাকা লাগে ডায়ালিসিস করাতে। এক বারই বেসরকারি কেন্দ্রে ডায়ালিসিস করিয়েছিলেন তিনি। পরে বাধ্য হয়ে কলকাতার সরকারি হাসপাতালে যান। কিন্তু সেখানে এত দেরি করে ডাক আসে যে কার্যত নাকাল হতে হয় তাঁকে।

পাণ্ডুয়ার বেলুনের বাসিন্দা সর্বাণী হালদার বলেন, “কিডনির সমস্যায় দীর্ঘ দিন ধরে ভুগছি। চিকিৎসার জন্য এমনিতেই পাণ্ডুয়া থেকে চুঁচুড়ায় আসতে হয়। কিন্তু কলকাতায় গিয়ে বা বেসরকারি জায়গায় ডায়ালিসিস করানো আমাদের মতো দিনমজুর পরিবারের পক্ষে সম্ভব না। হাসপাতালের চিকিৎসায় যত দিন বাঁচা সম্ভব, বাঁচব। তার পরে মরে যাওয়াটাই ভবিতব্য।” তবে জেলা হাসপাতালে কম খরচে চিকিৎসা হবে শুনে সামান্য স্বস্তিতে তাঁরা। বললেন, “এই ব্যবস্থায় আমাদের মতো পরিবারের অনেক সুবিধা হবে।”

ইমামবাড়া হাসপাতালের মূল ভবনের তিন তলা শেষ প্রান্তে ৮৭৩ স্কোয়ার ফুট একটি বাতানুকূল ঘরে এই ডায়ালিসিস বিভাগ চালু হওয়ার কথা। আপাতত সেখানে পাঁচ শয্যার ব্যবস্থা থাকছে। এক জনের ডায়ালিসিস করাতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। এই নতুন বিভাগে এক সঙ্গে পাঁচ জনের ডায়ালিসিস করানো যাবে। প্রত্যেক শয্যার পাশে থাকছে ডায়ালিসিস করার বৈদ্যুতিন যন্ত্র। আর একটি শয্যা রয়েছে আইসোলেশনের জন্য। এছাড়াও রোগীদের বিনোদনের জন্য টিভির বন্দোবস্ত রয়েছে ঘরে। বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকেরা ছাড়াও রোগীদের দেখভালের জন্য থাকবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

হাসপাতালের সুপার শশাঙ্কশেখর গোস্বামী বলেন, “এই বিভাগ চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত হয়ে গিয়েছে। এই বিভাগ চালু হলে কম খরচে কলকাতার হাসপাতালের মানের চিকিৎসা এখানে দেওয়া যাবে। এতে অনেক দুঃস্থ রোগীর প্রাণ বাঁচবে।”

সদ্যোজাতের মৃত্যু, চিকিৎসককে হেনস্থা

সদ্যোজাতের মৃত্যুকে ঘিরে উত্তেজিত আত্মীয়-স্বজনদের হাতে হেনস্থা হলেন জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের দুই স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ। বুধবার সকালের ঘটনা। রঘুনাথগঞ্জের আইলেরউপর গ্রামের সেলিনা বিবি নামে এক প্রসূতি তিন তিন বার প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে। প্রতি বারই তাঁকে ‘এখনও সময় হয়নি’ বলে ছেড়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। মঙ্গলবার বিকেলে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর সন্ধেয় পুনরায় প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হন তিনি। সেলিনার দাদা আনিসুর শেখের অভিযোগ, “হাসপাতালের এক স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে বোনের সিজার করার পরামর্শ দিয়ে দশ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু আমরা হাসপাতালে সিজার করার জন্য চাপ দিই। এই টালবাহানায় কয়েক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর আমাদের চাপে ওই চিকিৎসক হাসপাতালে বোনের সিজার করতে বাধ্য হন। কিন্তু বিলম্বের কারণে সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়।” চিকিৎসকদের গাফিলতিতে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে এই অভিযোগ তুলে বুধবার সকাল থেকেই গ্রামের লোকজন হাসপাতালে চড়াও হন। এক চিকিৎসককে হাসপাতালে এবং অন্য জনকে তাঁর প্রাইভেট চেম্বারে হেনস্থা করা হয়। পরে হাসপাতালের সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রসূতির দাদা। সুপার শাশ্বত মণ্ডল বলেন, “অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। দুই চিকিৎসকের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। তদন্ত মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

tapas ghosh chinsurah imambara sadar hospital dialysis center
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy