বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে রোগীদের নিয়ে আসা হচ্ছে বহির্বিভাগে।
অপারেশন থিয়েটারে অগ্নিকাণ্ডের জেরে আতঙ্ক ছড়াল হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। মঙ্গলবার রাতে ওয়ার্ডের মধ্যে ধোঁয়া ঢুকে পড়ে। দ্রুত সকলকে বার করার ব্যবস্থা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বহু রোগী নিজেরাই দৌড়ে বেরিয়ে আসেন হাসপাতালের বাইরে। শ’দুয়েক রোগী বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। তাঁদের স্থানীয় কয়েকটি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন কর্তৃপক্ষ। কয়েক জন রোগী রাতে ফিরেও আসেন ওই হাসপাতালে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ও দমলকলের অনুমান, এসিতে শর্টসার্কিটের ফলেই এই বিপত্তি। মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় আমরির প্রসঙ্গ ঘুরে ফিরে এসেছে অনেকেরই মনে। ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর আগুন লেগে ওই হাসপাতালে পুড়ে মারা গিয়েছিলেন ৯১ জন।
কী হয়েছিল মঙ্গলবার রাতে? পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, বেশির রোগীই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। সওয়া ১১টা নাগাদ হাসপাতালের কর্মী-রোগীর আত্মীয়দের কয়েক জন দেখতে পান, ওয়ার্ডের মধ্যে কালো ধোঁয়া নাকে আসছে। পোড়া গন্ধও পাওয়া যাচ্ছে। আগুনের উৎস খোঁজা শুরু হয়। দেখা যায় অপারেশন থিয়েটারের ঘর থেকে গল গল করে ধোঁয়া বের হচ্ছে। আগুনের শিখাও দেখা যাচ্ছে। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। খবর দেওয়া হয় দমকল, পুলিশকে। ছুটে আসেন এলাকার বহু মানুষ। শুরু হয় উদ্ধারের কাজ। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন আধ ঘণ্টার মধ্যে আগুন আয়ত্তে আনে। উত্তর ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয়কুমার আচার্য বলেন, “এসি মেশিন থেকেই আগুন লেগেছে। সেগুলি সময়ে বন্ধ করা হয়েছিল কিনা, তা দেখা হচ্ছে। তবে মেশিনগুলি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হত।”
বমি ও মাথা ঘোরার উপসর্গ নিয়ে মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অশোকনগর কয়াডাঙার বাসিন্দা সুশান্ত হালদার। জানালেন, হইচই শুনে ঘুম থেকে উঠে পড়তেই এক জন আয়া ছুটে এসে বলেন, হাসপাতালে আগুন লেগেছে। বলতে বলতেই তাঁর হাতের স্যালাইনের লাইন খুলতে থাকেন ওই আয়া। দুর্বল শরীরে দ্রুত হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে গাছতলায় আশ্রয় নেন সুশান্তবাবু। পরে ফেরেন ওই হাসপাতালেই। বাদুড়িয়ার বাসিন্দা অনিতা মণ্ডলের পুত্রবধূ শুক্রবার সন্তান প্রসব করেছেন। অনিতাদেবী জানালেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে বউমা আর সদ্যোজাত নাতিকে নিয়ে পড়িমড়ি করে বেরিয়ে আসেন হাসপাতাল থেকে। ভোরের দিকে তাঁরাও ফেরেন হাসপাতালে।
বুধবার দুপুরে জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ-১ দিব্যেন্দুকুমার চক্রবর্তী আসেন ঘটনার তদন্তে। তদন্ত করছে জেলা প্রশাসনও। পূর্ত দফতরের একটি সূত্রের মতে, যে ৬টি বাতানুকূল যন্ত্র অপারেশন থিয়েটারে রয়েছে, তা বহু পুরনো। গত বছর পুজোয় সেগুলি পাল্টাতে বলা হয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। পূর্ত দফতরের দাবি, এ নিয়ে সুপারকে চিঠিও দেওয়া হয়। যদিও চিঠি প্রাপ্তির কথা মানতে চাননি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সাত্যকি হালদার। তিনি জানান, ‘‘অস্ত্রোপচার করতে হবে এমন রোগী ছাড়া আপাতত অন্যদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy