Advertisement
E-Paper

হাসপাতালের পরিষেবায় খুশি নয় পরিদর্শক দল

পরিষেবায় ‘গাফিলতি’, রোগী মৃত্যু। এ সব কারণে এক মাসের মধ্যে তিনবার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে রামপুরহাট হাসপাতালে। স্বাভাবিক ভাবে চিকিৎসক থেকে নার্স, কর্মীরা নিরাপত্তার দাবি তুলেছেন। এ ভাবে চলতে থাকলে রাতে পরিষেবা দেবেন না বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২১:১৭
এমনই অবস্থা রামপুরহাট হাসপাতালের। —নিজস্ব চিত্র।

এমনই অবস্থা রামপুরহাট হাসপাতালের। —নিজস্ব চিত্র।

পরিষেবায় ‘গাফিলতি’, রোগী মৃত্যু। এ সব কারণে এক মাসের মধ্যে তিনবার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে রামপুরহাট হাসপাতালে। স্বাভাবিক ভাবে চিকিৎসক থেকে নার্স, কর্মীরা নিরাপত্তার দাবি তুলেছেন। এ ভাবে চলতে থাকলে রাতে পরিষেবা দেবেন না বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

হাসপাতাল সুপার হিমাদ্রি হালদারের দাবি, “অনেক রোগীকে খারাপ অবস্থায় এখানে আনা হচ্ছে। চিকিৎসক, নার্স, কর্মীরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। তার পরেও যদি রোগীর আত্মীয়-পরিজনরা হাসপাতালে ঢুকে ভাঙচুর, মারধর করে তা হলে কোথায় যাব। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বহিরাগতরা হাসপাতালে ভাঙচুর ও মারধর করে চলে যাচ্ছেন।” নিরাপত্তার প্রশ্নে হাসপাতাল সুপার বলেন, “দীর্ঘদিন আগে হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ ক্যাম্প ছিল। সেই ক্যাম্প উঠে যাওয়ার পরে ঝামেলা বেড়েছে। নিরাপত্তা কর্মী প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।” সুপার হিমাদ্রি হালদার সাধ্যমতো পরিষেবা দেওয়ার কথা বললেও সম্প্রতি হাসপাতাল পরিদর্শনে আসা স্বাস্থ্য দফতরের একটি দলের সদস্যরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি রামপুরহাট-দুমকা সড়কে রামপুরহাটগামী একটি গাড়ির সঙ্গে দুমকাগামী বাসের ধাক্কা লাগে। আহতদের রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। চিকিৎসা চলাকালীন রবি শেখ নামে মুর্শিদাবাদের সুতি থানার উমরাপুর এলাকার এক যুবক মারা যায়। এর পরেই ওই যুবকের সঙ্গে থাকা কয়েকজন জরুরি বিভাগে ঢুকে ভাঙচুর করে। চিকিৎসক আনন্দ মণ্ডলকে মারধর করে বলে অভিযোগ। গত ৮ জানুয়ারি দুর্ঘটনায় আহত এক যুবকের মৃত্যুর পরে ভাঙচুর হয়েছিল। গত ১১ জানুয়ারি এক বৃদ্ধার মৃত্যু ঘিরে মহিলা বিভাগে ভাঙচুর হয়েছিল। ওই ঘটনায় এক নার্স আহত হন। হাসপাতাল সুপার বলেন, “আমাদের তরফে কোনও ত্রুটি নেই। তার পরেও বার বার এমন পরিস্থিতির জন্য চিকিৎসক থেকে নার্স বা কর্মীরা পরিষেবা দিতে ভয় পাচ্ছেন। অনেকেই পরিষেবা বয়কট করার দাবিও জানাচ্ছেন। তাঁদেরকে বুঝিয়ে পরিষেবা কোনও দিন বন্ধ না রাখার জন্য বলা হয়েছে।”

সুপার পরিষেবায় ত্রুটি না থাকার কথা বললেও, পরিদর্শক দল কিন্তু তা বলছেন না। সম্প্রতি রাজ্য বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির তিন সদস্য সুনীলকুমার মণ্ডল, রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, সুদীপ্ত রায় হাসপাতালে এসেছিলেন। বর্হিবিভাগে টিকিট কাউন্টার বন্ধ করা ও চিকিৎসকদের রোগী দেখার সময়সীমা জেনে তাঁরা ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কাছে জানতে চান, কেন আপনারা দুপুর ১টা পর্যন্ত রোগী দেখেন? পশ্চিমবঙ্গে সব হাসপাতালে বর্হিবিভাগ দুপুর ২টো পর্যন্ত খোলা থাকে এবং যতক্ষণ রোগী থাকবে ততক্ষণ পরিষেবা দিতে হবে। জেলা স্বাস্থ্য কমিটির সভাপতি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁরা এ বিষয়ে নজর দিতে বলেন। বর্হিবিভাগের নানা জায়গায় নোংরা, জঞ্জাল জমে থাকতে দেখে তাঁরা সুপারকে বলেন, “আমরা আসব জানতেন। তার পরেও এমন অবস্থা কেন?” এর উত্তরে সুপার বলেন, “গ্রুপ ডি-র কর্মী প্রয়োজনের তুলনায় কম।” সুদীপ্তবাবু এ ব্যাপারে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এ ছাড়া, অনেক চিকিৎসক সরকারি নির্দেশ মতো ওষুধের জেনেরিক নাম লিখছেন না এবং এক শ্রেণির দালাল বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে বাধ্য করছেন বলেও অভিযোগ

সব কিছু দেখেশুনে রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “এক শ্রেণির অসাধু চিকিৎসক হাসপাতালে ন্যাহ্য মূল্যের ওষুধের দোকান চালু থাকুক চাইছেন না।” হাসপাতাল সুপার এবং প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা পরিকাঠামো উন্নয়নের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। আর নিরাপত্তার প্রশ্নে রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কোটেশ্বর রাও বলেন, “সব ঘটনার তদন্ত চলছে। হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ ক্যাম্প বসানোরও চেষ্টা চলছে।”

rampurhat hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy